ভালো লাগা প্রকাশের ভাষা নেই রাজ্জাকের

মুখে হাসি খুব বেশি দেখা গেল না। একটু-আধটু হাসলেও খুব চওড়া হলো না হাসি। তবে চেহারায় ভালো লাগার ছাপ স্পষ্ট। কিছু একটা জয় করতে পারার তৃপ্তি। আব্দুর রাজ্জাকের প্রতিক্রিয়াতেও ফুটে উঠল সেসব। মনের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের শব্দ খুঁজে পাচ্ছেন না অভিজ্ঞ স্পিনার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2018, 01:39 PM
Updated : 8 Feb 2018, 02:28 PM

চার বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে প্রথম দিনেই নায়কদের একজন রাজ্জাক। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

২০০৬ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ৮ বছরে ১২ টেস্টে উইকেট ছিল ২৩টি। ইনিংসে ৩ উইকেটের বেশি ছিল না কখনোই। ফেরার টেস্টে করলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।

টেস্টে কখনও থিতু হতে না পারলেও সীমিত ওভারে দেশের ইতিহাসের সেরা পারফরমারদের একজন তিনি। পারফরম্যান্সের সৌজন্যেই একসময় শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে তার পদচারণা ছিল নিয়মিত। এবার সেই চেনা কক্ষে পা পড়ল দীর্ঘ বিরতির পর। প্রথম দিনে দলের সেরা পারফরমার হিসেবে।

রাজ্জাককে দেখে উচ্ছ্বাসটা দেখা না গেলেও ভেতরের অনুভূতির সবটা চাপা দিলেন না কথায়।

“প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের জন্য জাতীয় দলে আসাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বড় ব্যাপার। এসব অনুভূতি আসলে মুখ দিয়ে বলা যায় না। ভিতরে ভিতরে অনুভব করা যায়। অবশ্যই ভালো লাগছে। অনেক ইতিবাচকতা কাজ করছে ভেতরে।”

টেস্টে ক্রিকেটে ফেরাটা চার বছর পর, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সবশেষ খেলেছিলেন প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। এতদিন পর দলে ফিরলে প্রথমবারের মতো অনুভূতি কাজ করাটা অস্বাভাবিক নয়। রাজ্জাকও একটু নার্ভাস ছিলেন শুরুতে, পরে কাটিয়ে উঠেছেন।

“হৃৎস্পন্দন বেশি ছিল, আগের মতো অত বেশি নয়। একটা উত্তেজনা তো সব সময়ই কাজ করে, দল নির্বাচন থেকে শুরু করে খেলা পর্যন্ত। এটা আসলে জীবনেরই অংশ, ক্রিকেটের অংশ। আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সঙ্গে ঘরোয়ার বড়সড় পার্থক্য থাকে। এখন ভালো লাগছে। অনুভূতিটা খুব ভালো। আজ ভালো করেছি। চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার।”

তার দলে আসতেও করতে হয়েছে অনেক ভালো কিছু। মাঝের সময়টায় ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ছিলেন সেরা পারফরমারদের একজন। ধারাবাহিকতায় নিত্য ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ধরা দিয়েছে অনেক রেকর্ড ও অর্জন। তবে জাতীয় দলে ছিলেন উপেক্ষিত।

রাজ্জাক তবু হাল ছাড়েননি। অনেকে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেললেও তার লক্ষ্য সরেনি। বাংলাদেশে মধ্য তিরিশ পেরিয়ে জাতীয় দলে ফেরা প্রায় অসম্ভব জেনেও আশা ছাড়েননি। অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াইয়ে শেষ হাসি তারই। ৩৫ বছর ২৩৮ দিন বয়সে আবার ফিরলেন টেস্ট ক্রিকেটে। ফেরার দিনে দলের উজ্জ্বলতম ক্রিকেটার তিনিই।

তার এভাবে ফেরা বাংলাদেশের ক্রিকেটে আরও অনেকের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, বিশ্বাস রাজ্জাকের।

“অবশ্যই আমি এটা মনে করি। এখনকার সময়ে ক্রিকেটের যে অবস্থা, তারপরও আমাকে দলে নেয়া হয়েছে, এর জন্য বোর্ডকে ধন্যবাদ। এটাতেই প্রমাণ হয় কারও সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে না কখনও। পারফর্ম করতে পারলে সুযোগটা থেকেই যায়।”