মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে পাঁচশ ছাড়িয়ে বাংলাদেশ

মুমিনুল হকের স্বপ্নদৌড় থমকে গেছে সাতসকালেই। মোসাদ্দেক-মিরাজরা উইকেট বিলিয়েছেন অহেতুক। একটু হলেও বোলারদের পক্ষে কথা বলতে শুরু করেছে উইকেট। প্রতিকূল এই স্রোতেও শক্ত হাতে হাল ধরলেন মাহমুদউল্লাহ। নেতৃত্বের অভিষেকে দারুণ এক অপরাজিত ইনিংসে টানলেন দলকে। নিয়ে গেলেন পাঁচশর কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2018, 08:11 AM
Updated : 1 Feb 2018, 08:11 AM

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার প্রথম ইনিংসে ৫১৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।

এ নিয়ে টেস্টে সপ্তমবার পাঁচশ রানের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয়বার। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।

আগের দিন শেষ বিকেলে নেমে দলকে নিরাপদে পার করা মাহমুদউল্লাহ এদিনও ছিলেন শেষ পর্যন্ত। অপরাজিত ছিলেন ৮৩ রানে।

মুশফিকুর রহিমের ৬৮ ছাড়িয়ে নেতৃত্বে অভিষেক ইনিংসে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। নেতৃত্বের অভিষেক টেস্টে সেরা অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে করা সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৯৬।

বাংলাদেশের দিন শুরু হয়েছিল মুমিনুলের ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানিতে। কিন্তু আশা মিলিয়ে যায় দিনের তৃতীয় ওভারেই। মুমিনুলকে থামাতে হয়তো প্রয়োজন ছিল দারুণ কিছুর। শ্রীলঙ্কাকে যেটি উপহার দেন কুসল মেন্ডিস।

রঙ্গনা হেরাথের লেগ স্টাম্পে থাকা বল কবজির মোচড়ে ঘুরিয়ে ছিলেন মুমিনুল। বল শর্ট লেগে মেন্ডিসের কাঁধের নিচে লেগে জমা পড়ে হাতে। যদিও শরীরে আটকে গেছে বল, তবে রিফ্লেক্সের জন্য মেন্ডিসের কৃতিত্ব প্রাপ্যই। আগের দিনের ১৭৫ রানের সঙ্গে মুমিনুল যোগ করতে পেরেছেন আর মাত্র ১ রান।

শুরুর ধাক্কার পর প্রয়োজন যখন জুটির, দলের চাওয়াকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন মোসাদ্দেক হোসেন। হেরাথের বলে ক্যাচ দেন বেরিয়ে এসে।

মেহেদী হাসান মিরাজের শুরুটা ছিল দারুণ আত্মবিশ্বাসী। দারুণ স্ট্রেট ড্রাইভে চার মারার পর হেরাথকে ছক্কায় ওড়ান স্লগ সুইপে। কিন্তু অহেতুক তৃতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউটে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন তিনিও।

আগের দিন নিষ্প্রাণ থাকা উইকেটে তখন একটু টার্ন মিলছে। বাউন্সও ছিল খানিকটা অসমান। নতুন ব্যাটসম্যানের কাজটি ছিল কঠিন। দলকে গুছিয়ে তোলার চেষ্টায় মাহমুদউল্লাহ যোগ্য সঙ্গী পান অবশেষে অভিষিক্ত সানজামুলকে। উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি খেলেছেন দেখার মত কিছু শটও। আরেক পাশে মাহমুদউল্লাহ ছিলেন নিজের সেরা চেহারায়। লাঞ্চের আগেই জুটির হয়ে যায় পঞ্চাশ।

লাঞ্চের পরপরই ৫৮ রানের এই জুটি ভাঙেন লাকশান সান্দাকান। ২৪ রানে স্টাম্পড সানজামুল। পরের ওভারে হেরাথের দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড তাইজুলও। দলের তখন ৫০০ হওয়া নিয়ে শঙ্কা।

শেষ উইকেটে মুস্তাফিজকে নিয়ে দারুণ খেলে দলকে পাঁচশ এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। চোখধাঁধানো এক ছক্কায় সঙ্গত ধরেন মুস্তাফিজও।

শেষ পর্যন্ত লাকমলের বাউন্সারে মুস্তাফিজের বিদায়ে ভাঙে ৩৫ রানের শেষ জুটি। মাহমুদউল্লাহ তখন অপরাজিত ১৩৪ বলে ৮৩ রানে। সাত চারের সঙ্গে ইনিংসে ছক্কা দুটি।

গত প্রায় ৮ বছরে মাহমুদউল্লাহর এটি সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডে ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরির পর তিন অঙ্কের এত কাছে যাননি আর।

অধিনায়কের ইনিংসই বোলিংয়ে হতে পারে বাংলাদেশের প্রেরণা!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১২৯.৫ ওভারে ৫১৩ (আগের দিন ৩৭৪/৪) (মুমিনুল ১৭৫, মাহমুদউল্লাহ ৮৩*, মোসাদ্দেক ৮, মিরাজ ২০, সানজামুল ২৪, তাইজুল ১, মুস্তাফিজ ৮; লাকমল ৩/৬৮, কুমারা ০/৭৯, পেরেরা ০/১১২, হেরাথ ৩/১৫০, সান্দাকান ২/৯২, ধনঞ্জয়া ০/১২)।