ওই টেস্টের একাদশ থেকে তার বাদ পড়া বিস্ময়কর ছিল না। সাদা পোশাকে তখন ছিল তার বিবর্ণ সময়। ব্যাটে ছিল না রান। তবে সফরে থাকা সিনয়র ক্রিকেটারকে হুট করে স্কোয়াডেই ব্রাত্য করে তোলা জন্ম দিয়েছিল প্রশ্নের।
ঝড় তুলেছিল এর পরের ঘটনাপ্রবাহও। স্কোয়াডের বাইরে থাকার পর মাহমুদউল্লাহকে দেশে ফেরত পাঠানোর আয়োজনও করা হয়েছিল। যেটির অর্থ, ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ছেন মাহমুদউল্লাহ। অথচ রঙিন পোশাকে তার পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন ছিল সামান্যই। একজন সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে টিম ম্যানেজমেন্টের আচরণও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
সংবাদমাধ্যমের প্রবল সমালোচনা ও ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার উদ্যোগে সে সময় ওয়ানডে দলে টিকে গিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। একরকম গো ধরেই তাকে দলে টিকিয়ে রেখেছিলেন মাশরাফি। বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে এ রকম একজন সিনিয়র ক্রিকেটারকে হারাতে চান না।
মাহমুদউল্লাহ পরে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে ভালো পারফর্ম করে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমি-ফাইনালে ওঠার পথে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে।
সবচেয়ে বেশি করে যেটা করতে পেরেছিলেন, সেটি হলো আস্থা অর্জন। মুশফিকুর রহিমকে সরিয়ে কিছুদিন আগে যখন টেস্ট অধিনায়ক করা হলো সাকিব আল হাসানকে, তখন সহকারীর দায়িত্বে ফেরানো হলো মাহমুদউল্লাকেও।
সেই সাকিব টেস্ট নেতৃত্বে ফেরার আগে সবশেষ ম্যাচে চোট পেয়ে ছিটকে গেলেন। ১১ মাস আগে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া মাহমুদউল্লাহই তাই আজ বাংলাদেশের টেস্ট দলের নেতৃত্বে। বুধবার হতে যাচ্ছেন দেশের দশম টেস্ট অধিনায়ক।
এই চড়াই-উৎরাইয়ের পথচলা, শূন্য থেকে শিখরে ওঠার অর্জন, এসবকে অবশ্য স্বাভাবিভাবেই নিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। আচরণে তিনি বরাবরই শান্ত ও স্থির। বাদ পড়া থেকে নেতৃত্বের আসনে উঠে আসার নাটকীয়তাকেও মাহমুদউল্লাহ শান্ত কণ্ঠে আড়াল করতে চাইলেন ক্রিকেটীয় বাস্তবতায়।
“ক্রিকেটারদের জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। কখনও সময় পক্ষে থাকে, কখনও নয়। আমার জন্য এটি ভালো সুযোগ। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ এটি দলের দিক থেকে। যেভাবে আমরা ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু করেছিলাম, সেই জায়গাটায় ফিরে গিয়ে আবার ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।”