সাকিব নেই বলেই রাজ্জাক শরণ

সাকিব আল হাসান ছিটকে যাওয়ার পরই বদলি হিসেবে নেওয়া হয়েছিল দুজনকে। কিন্তু পরদিন টিম ম্যানেজমেন্টের মনে হলো, সাকিবের অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণ করবে কে? তাই আবার আলোচনা, আরও একজনকে ডাকা। মনে পড়ল প্রায় ভুলে বসা আব্দুর রাজ্জাককে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন যা বললেন, তাতে রাজ্জাকের ডাক পাওয়ার প্রেক্ষাপট এমনই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2018, 03:57 PM
Updated : 29 Jan 2018, 04:43 PM

ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে চোট পেয়ে সাকিব ছিটকে যান প্রথম টেস্ট থেকে। সেদিন রাতেই বদলি হিসেবে নেওয়া হয় সানজামুল ইসলাম ও তানবীর হায়দারকে। কিন্তু পরদিন রাতে আবার জানানো হয়, দলে নেওয়া হয়েছে রাজ্জাককে।

মাত্র কদিন আগেই বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন রাজ্জাক। ঘরোয়া ক্রিকেটে গত কয়েক মৌসুমে যা পারফরম্যান্স, তাতে তার ডাক পাওয়াটা বিস্ময়কর নয়। কিন্তু তার ডাক পাওয়ার প্রক্রিয়াটা জাগাচ্ছে প্রশ্ন।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দাবি, রাজ্জাকের ডাক পাওয়া হুট করে নয়।

“হুট করে নয়, এটা প্রক্রিয়াতেই ছিল। টেস্ট ক্রিকেটে দেশের মাটিতে আমরা স্পিনারদের ওপর নির্ভার করেই খেলছি। রাজ্জাক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। আমাদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব চোট পেয়েছে। আমরা চিন্তা করলাম যে সানজামুল তো নতুন। ও আমাদের প্রক্রিয়ার মধ্যেই আছে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে। তাইজুলও আছে। আমরা চিন্তা করলাম রাজ্জাক যেহেতু ঘরোয়াতে ভালো করছে, ওকে দলের সঙ্গে রাখলে যদি সুযোগ আসে তাহলে দেখা যাবে। এই চিন্তা করেই ডাকা হয়েছে।”

প্রধান নির্বাচকের কথার সূত্রেই জাগে প্রশ্ন। আগের দিন রাতে সানজামুলকে নেওয়ার সময় কি তবে বিবেচনা করা হয়নি রাজ্জাকের অভিজ্ঞতা? এবার প্রধান নির্বাচকের কথায় উঠে এল মূল ব্যাপারটি।

“অবশ্যই বিবেচনায় ছিল। খেলা শেষে আমরা ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে পারিনি। আরেকজনকেও দেওয়ার চিন্তা ছিল। যেহেতু দেশের মাটিতে দুটি টেস্ট আছে সিরিজে, এজন্য ১৬ জনের স্কোয়াড করেছি। যার পজিশন ভালো থাকবে, তাকেই আমরা খেলাব।”

স্কোয়াডে আগে থেকেই ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। পরে যোগ হয়েছেন সানজামুল ও তানবীর। রাজ্জাককে নেওয়ার পর দলে এখন বিশেষজ্ঞ স্পিনার ৬ জন! মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, অনুশীলনে পরখ করতেই এত বিকল্প রাখা হয়েছে হাতে।

“সানজামুল একদম অনভিজ্ঞ, একটি টেস্টও খেলেনি। তাইজুলের ফর্মটাও চিন্তা করতে হবে, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১টি টেস্ট খেলেছে। অত ভালো করেনি। তো সেই হিসেবে ফর্মের কথা চিন্তা করেই আমরা বাড়তি স্পিনার নিয়েছি। যার পজিশন ভালো থাকবে আগামীকাল, তাকে নিয়েই চিন্তা করব।”

কিন্তু নেটে দেখে টেস্টের একাদশ বাছাই করা কতটা যৌক্তিক, সেই প্রশ্নে আবার তিনি বললেন উল্টো কথা।

“নেটে দেখে নয়, এটির একটি প্রক্রিয়া আছে। টিম ম্যানেজমেন্টের একটা চিন্তা ভাবনা আছে। পরিকল্পনা আছে। সেসব নিয়ে আমরা বসব। তারপর ঠিক করব।”

তবে একটি কথা প্রধান নির্বাচক সংশয় ছাড়া পরিষ্কারভাবে বলতে পারলেন। ৩৫ বছর বয়সে রাজ্জাকদের দলে নেওয়া সবার জন্যই বার্তা।

“অবশ্যই এটি একটি বার্তা। ঘরোয়া ক্রিকেট এটা আমাদেরই ক্রিকেট। এখানে যে ভালো পারফর্ম করবে, অবশ্যই নজরে থাকবে। গত ১০ বছরে কয়েকজন ক্রিকেটার আমাদের ক্রমাগত সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে, এখানে গ্যাপ হয়নি। ঘরোয়াতে যারা পারফর্ম করেছে, তাদের বয়সটাও এদের কাছাকাছি। গ্যাপ না হলে তো কাউকে সুযোগ দেওয়া কষ্টকর।”

“মাঝখানে ‘এ’ দলের খেলা কম হয়েছে। যার কারণে অনেককে দেখা যায়নি। আগামীতে ‘এ’ দলের খেলা আছে। অনেক ক্রিকেটারকে দেখা হবে। ওখানে পারফর্ম করলে অনেকের জন্য দরজা খুলবে।”