ডাক পাওয়ার কথা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি রাজ্জাক

কদিন আগেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫০০ উইকেট নেওয়ার জন্য জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের কাছ থেকে সম্মাননা পেয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। তবে হঠাৎ করে যে জাতীয় দলে ডাক পড়তে পারে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি বাঁ-হাতি অভিজ্ঞ এই স্পিনার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2018, 12:21 PM
Updated : 29 Jan 2018, 04:43 PM

ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ফিল্ডিং করার সময় চোট পেয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দল থেকে ছিটকে যান সাকিব আল হাসান। তার জায়গায় প্রথমে সানজামুল ইসলাম ও তানবীর হায়দারকে দলে নেয় বাংলাদেশ। পরে ডাকা হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দারুণ ছন্দে থাকা রাজ্জাককে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সোমবার অনুশীলন শুরুর আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্জাক জানান, দলে ফেরার খবর শুনে যেন ঘোরের মধ্যে কেটেছে তার সময়।

“নিশ্চিতভাবেই ভালো লাগার তো একটা ব্যাপার আছেই। আমি খুবই অবাক হয়েছি। আমি চিন্তাও করিনি এ সময়ে… মাথার মধ্যে ছিলও না। হঠাৎ জানতে পারলাম যে দলে এসেছি। শোনার পর বুঝতে পারছিলাম না ঠিক কী হচ্ছে, সব ঠিক আছে কী না।”

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ টেস্ট খেলেন রাজ্জাক। সেই বছর অগাস্টে খেলেন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে। এরপর থেকে আর দেশের হয়ে খেলা হয়নি অভিজ্ঞ এই স্পিনারের। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান আকরাম খান যখন দলে ফেরার খবরটা দেন তখনও নিশ্চিত হতে পারেননি রাজ্জাক।

“আকরাম ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছিল কিন্তু ক্লিয়ার কিছু না। (বিসিবির লজিস্টিক ম্যানেজার কাউসার আজম) সজীব ভাই মূলত আমাকে ফোন করেছিলেন টিকিট কনফার্ম করে। তখনও আমি জানতাম না। উনি আমাকে বলল, ‘অভিনন্দন।’ আমি বললাম, ‘কিসের জন্য? ৫০০ উইকেটের জন্য নাকি?’ উনি বললেন, ‘আরে না, আপনি (জাতীয়) দলে যোগ দিচ্ছেন এই জন্য।’ তারপর নান্নু ভাই ফোন করেছিলেন। তখন আমি নিশ্চিত হলাম।”

“আমি আসলে বুঝতেই পারিনি যে, ওই সময়ে কি হচ্ছিল। অনেক সময় একটা জিনিসের আশা থাকে, সেটা হয়েও যায়, এটা তেমন ছিল না।”

বাংলাদেশ ও এশিয়া একাদশ মিলিয়ে ১৯৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ রাজ্জাক। ঘরোয়া ক্রিকেটে আছেন দারুণ ছন্দে। বিসিএলের প্রথম তিন রাউন্ডে ২০ উইকেট নিয়ে তিনিই সেরা উইকেট শিকারী।

নিজের শেষ টেস্ট খেলার পর থেকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দারুণ উজ্জ্বল রাজ্জাক। এই সময়ে তিনি নেন ২৪৪ উইকেট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সানজামুল ইসলামের (৯৪) চেয়ে পান দেড়শ উইকেট বেশি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটের পর উইকেট নিলেও ডাক মেলেনি রাজ্জাকের। টেস্ট দলে তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, জুবায়ের হোসেনের মতো তরুণদের খেলায় বাংলাদেশ। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সুযোগ মেলে আরাফাত সানি, সানজামুল, সাকলান সজীব, তানবীর হায়দারদের।

নতুনদের নিয়মিত সুযোগ দেওয়ার মধ্যে আবার ডাক পাওয়ার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী ছিলেন রাজ্জাক?

“আশা ছাড়িনি। আমি খেলার মধ্যে ছিলাম। আসলে কোনো লক্ষ্য না থাকলে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলা যায় না। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের লক্ষ্য থাকে জাতীয় দলে খেলার। সেটা তো ছিলই। কিন্তু এটা এ সময়ে, এভাবে হবে, আমি বুঝতে পারিনি।”

ঘরোয়া ক্রিকেটে যে ছন্দে ছিলেন তাতে জাতীয় দলে ফিরতে পারতেন আরও আগেই। তবে এখন আর সে সব নিয়ে ভাবছেন না রাজ্জাক।

“আগে-পরে নিয়ে আর এখন বলবো না। ভাগ্য যখন আপনাকে ডেকে নিয়ে আসবে ঠিক তখনই ডাক পাবেন। এটা আগে-পরে বলে কথা না।”