নির্বাচকদের বিশ্বাস, নাঈম প্রস্তুত

তার প্রতিভা নিয়ে সংশয় নেই। প্রশ্ন নেই সম্ভাবনা নিয়ে। তাই বলে এখনই টেস্ট দলে! নাঈম হাসানের টেস্ট দলে ডাক পাওয়া নিয়ে বিস্ময় ও প্রশ্ন একটিই। সর্বোচ্চ পর্যায়ের জন্য কতটা প্রস্তুত নাঈম? প্রধান নির্বাচকের বিশ্বাস, নাঈমের সামর্থ্য আছে টেস্টে ভালো করার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2018, 08:31 AM
Updated : 26 Jan 2018, 05:41 PM

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট দলে সবচেয়ে বড় চমক নাঈমের জায়গা পাওয়া। যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে এই অফ স্পিনার এখন নিউ জিল্যান্ডে। যেদিন ডাক পেলেন টেস্ট দলে, সেদিনই দলের হেরে যাওয়া কোয়ার্টার-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে নিয়েছেন ২ উইকেট।

অনূর্ধ্ব-১৭ দল হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দল হয়ে আসা নাঈমের দিকে বেশ কিছুদিন ধরেই নজর ছিল নির্বাচকদের। উচ্চতার কারণে পাওয়া বাড়তি বাউন্স তার বড় শক্তি। লাইন-লেংথ বেশ আঁটসাঁট। ফ্লাইটে বৈচিত্র এখনও খুব বেশি রপ্ত করতে পারেননি। তবে ছন্দে থাকলে সহায়ক উইকেটে তীক্ষ্ণ টার্ন আদায় করতে পারেন।

গত বছর ইমার্জিং এশিয়া কাপে খেলেছিলেন দুটি ম্যাচ। দেশের মাটিতে গত অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি ক্যাম্পেও ডাকা হয়েছিল নাঈমকে। মূলত নাথান লায়নকে খেলার প্রস্তুতি হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। তবে ক্যাম্পে ও প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো বোলিং করে নজর কেড়েছিলেন। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সে। বোলিংয়ের পাশাপাশি তার ব্যাটের হাতও ভালো।

সবই তার এগিয়ে চলার প্রমাণ। কিন্তু সেই পথচলায় এখনই টেস্ট দলের ঠিকানা পেয়ে যাবেন, সেটি নাঈম নিজেও নিশ্চয় ভাবেননি। দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, নাঈমকে নেওয়ার পেছনে ভাবনা।

“ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজকে আমরা এভাবেই অভিষেক করিয়েছিলাম। মিরাজও কিন্তু তখন অনভিজ্ঞ ছিল। অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে এইচপিতে ছিল। নাঈম হাসানও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে আছে, গত ইমার্জিং কাপেও ছিল। তার ধারাবাহিক ভালো বোলিং করার ক্ষমতা আছে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও সে ভালো বোলিং করেছে। আর আমাদের একজন অতিরিক্ত স্পিনার রাখার চিন্তা ছিল। সেই হিসেবেই তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

নাঈমের প্রসঙ্গে হয়ত মিরাজের দলে আসার প্রেক্ষাপট উঠে আসতোই। তবে সেটা স্রেফ বয়সের কারণেই। মিরাজ তখন অনভিজ্ঞ থাকলেও নাঈমের মতো এতটা আনকোরা ছিলেন না। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে চার বছরে অনেক ম্যাচ খেলেছিলেন মিরাজ। টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫ উইকেট, ম্যাচে ১০ উইকেট, ফিফটি পাওয়া হয়ে গিয়েছিল।

নাঈম সেখানে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন মোটে ৪টি। উইকেট নিয়েছেন ৯টি। এবার বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলেছেন দুটি ম্যাচ। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ ৮টি। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে এতটুকুই সম্বল। মিরাজের চেয়ে একটু পিছিয়ে থেকে তাই দলে এসেছেন নাঈম। বিস্ময়টাও সে কারণেই। তবে নির্বাচকদের আস্থা আছে তার সামর্থ্যে।

“নাঈম আমাদের প্রোগ্রামের মধ্যেই আছে। বাড়তি একজন স্পিনার চেয়েছিলাম আমরা। ওর মধ্যে যে কোয়ালিটি আছে, আমরা মনে করি দেশের হয়ে ভালো করার সামর্থ্য ওর আছে।”

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে স্পিনার হিসেবে মিরাজ ও তাইজুলও আছেন দলে। নাঈমকে তাই বলা যায় চতুর্থ স্পিনার। সে হিসেবে তার টেস্ট অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা কমই।