‘নিজেদের নিয়ে চিন্তা করুক সাব্বির-নাসির’

দল ফাইনালে উঠেছে আগেই, তাই ছিল না কোনো চাপ। দ্রুত রান করার তাড়াও ছিল না। ছিল সময় নিয়ে ব্যাট করার পর্যাপ্ত সুযোগ। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে সেই সুযোগ হারিয়েছেন সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেন। দুজনের পারফরম্যান্সে হতাশ মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়কের চাওয়া, নিজেদের নিয়ে ভাবনার জায়গা প্রসারিত হোক সাব্বির ও নাসিরের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2018, 12:25 PM
Updated : 26 Jan 2018, 04:30 PM

প্রথম তিন ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের দুই নায়ক তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান এদিন আউট হয়ে গেছেন দ্রুত। বড় দুই ভরসা মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহও পারেননি বড় কিছু করতে। এই ম্যাচে তাই নিজেকে প্রমাণের সুযোগ এসেছিল সাব্বির ও নাসিরের সামনে।

কিন্তু দুজনই সেই সুযোগ হারিয়েছেন হেলায়। চাপের মধ্যেও বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন সাব্বির। লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে আউট হয়েছেন নাসির। ম্যাচ শেষে মাশরাফির কণ্ঠে তাই আক্ষেপ।

“আজকে ওদের আরও ভালো কিছু করার সুযোগ ছিল। উইকেটে আরও সময় কাটাতে পারত। ২০-২২ ওভারে অলআউট হয়েছি। যে সময়টা পেয়েছিল ওরা…যদি আজকে স্ট্রাইক রেট কমও হতো, তাহলেও কেউ প্রশ্ন তুলত না। আমার কাছে মনে হয়, তাদের জন্য আজকে একটা ভালো সুযোগ ছিল।”

সেই সুযোগ নিতে পারেননি দুজন। শুধু এই ম্যাচই নয়। টুর্নামেন্টের ৩ ইনিংসে নাসিরের রান ৫। প্রতিটি ম্যাচেই আউট হয়েছেন বাজে শটে। সাব্বির এক ম্যাচে ১২ বলে অপরাজিত ২৪ করলেও পরের দুই ম্যাচে আউট হয়েছেন ৬ ও ১০ রানে।

সংবাদ সম্মেলনে তাই প্রশ্ন উঠল, এই দুজনের সমস্যা মানসিক, নাকি ঘাটতি টেম্পারামেন্টে। মাশরাফি এই দুটি দিকের সঙ্গে যোগ করলেন দেশের ক্রিকেটের প্রচলিত ধারাও।

“যে দুটি জিনিস বলেছেন, এমনটা হতে পারে। হয়তো মানসিকভাবে এই চাপটা নিতে পারছে কিনা, আরেকটা হচ্ছে টেম্পারমেন্ট। হয়তো বা তারা রান বেশি পছন্দ করে। সময় কাটানোর চেয়ে মনে করে রানটা দ্রুত আসলে তাড়াতাড়ি সেট হয়ে যেতে পারে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও যদি দেখেন, তিন-চার উইকেট পড়ার পরও দেখা যায় ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট ১০০ থাকে। কাজেই ওই অভ্যাস আমাদের কম।”

“এমনকি ওয়ানডে ম্যাচেও যে কখনো কখনো উইকেট পড়ে গেলে ছোট সময়ের জন্য উইকেটে সময় নিয়ে রান করা বা ইনিংস গড়ে তোলা, ওই অভ্যাস হয়তবা সহজাতভাবে আমাদের ক্রিকেটে একটু কম আছে। এখানে একটা ঘাটতি থাকতে পারে। আমাদের ক্রিকেটীয় ধরনটাই এমন। ওরা যেভাবে আউট হয়েছে, দল আশা করেনি। আমার চেয়ে নিশ্চয়ই ওদের নিজেদের আরও বেশি খারাপ লাগছে। আমি চাইব যে ফাইনালের আগে এটা নিয়ে ওরা চিন্তা করুক।”

ফাইনাল ম্যাচটি যেহেতু এখনও বাকি, দুজনকে নিয়ে তাই খুব বেশি কাঁটাছেড়া করতে চান না মাশরাফি। আশা করছেন, মানসিকভাবে প্রস্তুত হবে দুজন। অধিনায়ক তাকিয়ে কিছুটা ভাগ্যের দিকেও।

“আমি মনে করি টপ অর্ডারে সাকিব আল হাসান আসার পর আমরা যেটা চেয়েছি ঠিক সেটাই তারা দিতে পেরেছে। এখন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের একটু দায়িত্ব নিতে হবে। তবে আমি তাদের ওপর অভিযোগ আনতে পারতাম যদি তারা পরিশ্রম ও চেষ্টা না করতো। এমন না যে তারা অনুশীলনে যেটা চাচ্ছে, সেটা হচ্ছে না। কিংবা নেটে যেটা চাচ্ছে, সেটা হচ্ছে না। করছে ঠিকই, কিন্তু মূল জায়গায় এসে বাস্তবায়ন ঠিকমতো হচ্ছে না।”

“যেহেতু ফাইনাল আছে এখনও, আমার মনে হয় না গভীরে যাওয়া উচিত। তারা যে চেষ্টাটা করছে, হয়ত একটা-দুটা ইনিংস রান করলে ওখান থেকে বের হয়ে আসবে। আমার কাছে মনে হয় মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। ভাগ্যকেও পাশে পেতে হবে।”