বাটলারের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে সিরিজ ইংল্যান্ডের

সাদা পোশাকে বিবর্ণ ইংল্যান্ড দারুণ উজ্জ্বল রঙিন পোশাকে। প্রথম তিন টেস্টেই অ্যাশেজ জয় নিশ্চিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। একইভাবে ইংল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলল প্রথম তিন ম্যাচেই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2018, 12:55 PM
Updated : 21 Jan 2018, 12:59 PM

সিডনিতে রোববার জস বাটলারের ঝড়ো সেঞ্চুরি আর ক্রিস ওকসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ১৬ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ৫ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ৩-০ ব্যবধানে।

খানিকটা মন্থর উইকেটে এক সময় আড়াইশ রানকেই ইংল্যান্ডের জন্য মনে হচ্ছিল দূরের পথ। কিন্তু শেষ দিকে তাণ্ডব চালালেন বাটলার, সঙ্গত ধরলেন ওকস। ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে করল ৬ উইকেটে ৩০২। অস্ট্রেলিয়া আটকে গেছে ২৮৬ রানে।

রান তাড়ায় এই ইংল্যান্ড দলের দুর্দান্ত ধারাবাহিকতার কারণেই হয়তো টস জিতে বোলিং নেন স্টিভেন স্মিথ। বিশ্রাম পাওয়া মূল তিন পেসারকেই একাদশে পায় অস্ট্রেলিয়া। আগের দুই ম্যাচের তুলনায় বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটাও হয় ভালো। দুই বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান জেসস রয় ও অ্যালেক্স হেলস ফিরে যান ১০ ওভারেই মধ্যেই।

জনি বেয়ারস্টো ও জো রুট চেষ্টা করছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু দুজনই আউট হন থিতু হয়ে। ৩৯ রান করা বেয়ারস্টোকে দারুণ গুগলিতে বোল্ড করেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। জশ হেইজেলউডের বল স্টাম্পে টেনে আনেন ২৭ রান করা রুট।

পঞ্চম উইকেটে ওয়েন মর্গ্যান ও বাটলার গড়েন ৬৫ রানের জুটি। বিপজ্জনক হয়ে উঠতে থাকা এই জুটিও ভাঙেন হেইজেলউড। ৪১ রান করে মর্গ্যান ফেরার খানিক পর ফেরেন মইন আলিও। ইংল্যান্ডের রান তখন ৬ উইকেটে ১৮৯।

এরপরই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া জুটি। বাটলার শুরুতে ছিলেন সাবধানী। বল প্রতি রান করেছেন এর পরও। অর্ধশতক করেন ৫২ বলে। শেষ দিকে তার ব্যাট হয়ে ওঠে উত্তাল। আরেক পাশে ঝড় তোলেন ওকস।

ইনিংসের শেষ বলে দুই রান নিয়ে বাটলার স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। ৩১ বলে পরের পঞ্চাশ করে বাটলারের সেঞ্চুরি ৮৩ বলে। তার পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।

৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ বলে অপরাজিত ৫৩ ওকস। দুজনের ঝড়ে শেষ ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ১০২ রান। প্রথম ৭ ওভারে মাত্র ২৩ রান দেওয়া প্যাট কামিন্সের শেষ ৩ ওভার থেকে আসে ৪৪ রান।

রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া আবার শুরুতে হারায় ডেভিড ওয়ার্নারকে। তিনে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি ক্যামেরন হোয়াইট।

অস্ট্রেলিয়া তবু ছিল ঠিক পথেই। কারণ আবারও দারুণ খেলছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ। আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এদিনও পেরিয়ে যান পঞ্চাশ। স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে তার জুটি জমে যায়। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে মাত্র ৮ বল করেই লিয়াম প্লাঙ্কেট মাঠ ছাড়ায় আরও বিপাকে পড়ে যায় ইংল্যান্ড।

তবে এদিন আর তিন অঙ্ক পর্যন্ত যেতে পারেননি ফিঞ্চ। ফেরেন ৫৩ বলে ৬২ রান করে। ভাঙে ৬৯ রানের জুটি।

চতুর্থ উইকেটে আরও একটি জুটি গড়ে ওঠে। এবার স্মিথের সঙ্গী মিচেল মার্শ। দুজনে গড়েন ৬৮ রানের জুটি।

স্মিথ ছিলেন ভীষণ সাবধানী। প্রথম বাউন্ডারি মারেন ৬৩ বল খেলে! তবে তার বিদায় দিয়েই অস্ট্রেলিয়ার পিছিয় পড়া শুরু। কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্তটি নিয়ে ছড়ায় উত্তেজনা। বাটলালের গ্লাভসে জমার আগে বল মাটি ছুঁয়েছে কিনা, জাগে এই প্রশ্ন। কিন্তু মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগন্যাল ছিল আউট, যেটি বদলানোর যথেষ্ট প্রমাণ পানি তৃতীয় আম্পায়ার। ৬৬ বলে ৪৫ করে ফেরেন স্মিথ।

খানিক পর ৫৫ রানে ফিরে যান মার্শও। অস্ট্রেলিয়ার আশা তবু ছিল বেঁচে। শেষ দিকে চেষ্টা করেছেন মার্কাস স্টয়নিস। কিন্তু আরেকপাশে ধুঁকেছেন টিম পেইন। সেটিই জয় থেকে দূরে ঠেলেছে অস্ট্রেলিয়াকে।

৪৩ বলে ৫৬ রান করে শেষ ওভারে আউট হন স্টয়নিস। আরেক পাশে ৩৫ বল খেলেও পেইন অপরাজিত থাকেন মাত্র ৩১ রানে। সেটির খেসারত দিতে হয় দলকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩০২/৬ (রয় ১৯, বেয়ারস্টো ৩৯, হেলস ১, রুট ২৭, মর্গ্যান ৪১, বাটলার ১০০*, মইন ৬, ওকস ৫৩*; স্টার্ক ০/৬৩, হেইজেলউড ২/৫৮, কামিন্স ১/৬৭, স্টয়নিস ১/৪৩, জ্যাম্পা ১/৫৫, মার্শ ১/১৪)।

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৮৬/৬ (ফিঞ্চ ৬২, ওয়ার্নার ৮, হোয়াইট ১৭, স্মিথ ৪৫, মার্শ ৫৫, স্টয়নিস ৫৬, পেইন ৩১*, কামিন্স ১*; উড ২/৪৬, ওকস ২/৫৭, প্লাঙ্কেট ০/৬, মইন ০/৫৭, রুট ০/৬০, রশিদ ২/৫১)।

ফল: ইংল্যান্ড ১৬ রানে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ইংলান্ড ৩-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: জস বাটলার