সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে চাপে ভারত

লুঙ্গি এনগিডির ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটের কানা ফাঁকি দিয়ে লাগল বিরাট কোহলির প্যাডে। দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের জোরালো আবেদনে সাড়া দিয়ে এলবিডব্লিউ দিলেন আম্পায়ার। মরিয়া ভারতীয় অধিনায়ক নিলেন রিভিউ। তবে পাল্টাল না সিদ্ধান্ত। সেঞ্চুরিয়ান টেস্টে চাপে তাই অতিথিরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 05:16 PM
Updated : 16 Jan 2018, 05:17 PM

চতুর্থ দিনের শেষ বেলায় ভারতের দুই ওপেনার আর কোহলিকে দ্রুত ফিরিয়ে দ্বিতীয় টেস্টে এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।   

সুপারস্পোর্ট পার্কে ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মঙ্গলবারের খেলা শেষে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৫ রান। চেতেশ্বর পুজারা ১১ ও পার্থিব প্যাটেল ৫ রানে অপরাজিত আছেন।

এই ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা ফেরাতে পঞ্চম ও শেষ দিন আরও ২৫২ রান চাই ভারতের। এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ নিশ্চিত করতে ৭ উইকেট দরকার দক্ষিণ আফ্রিকার।

স্বাগতিকদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে প্রতিটি রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে ভারতের ব্যাটসম্যানদের। অষ্টম ওভারে যখন ভাঙে উদ্বোধনী জুটি স্কোর বোর্ডে রান তখন মাত্র ১১। কাগিসো রাবাদার বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হন মুরালি বিজয়।

আক্রমণে এসেই আঘাত হানেন অভিষিক্ত পেসার এনগিডি। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে লোকেশ রাহুলের সহজ ক্যাচ যায় ব্যকওয়ার্ড পয়েন্টে।

এরপর কোহলির সেই আউট। পরের সাত ওভার কোনো রকমে কাটিয়ে দিয়েছেন পুজারা, পার্থিব। বুধবার তাদের সামনে অপেক্ষা করছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ।

এর আগে ২ উইকেটে ৯০ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের ৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি বাধা ডিন এলগার-এবি ডি ভিলিয়ার্স তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১৪১ রানের বড় জুটি।

মোহাম্মদ শামি ৭ ওভারের চমৎকার এক স্পেলে লাঞ্চের আগে দুই থিতু ব্যাটসম্যানের সঙ্গে কুইন্টন ডি কককে ফিরিয়ে দেন।

শামির বাউন্সারে পার্থিবের গ্লাভসবন্দি হয়ে ডি ভিলিয়ার্সের বিদায়ে ভাঙে স্বাগতিকদের প্রতিরোধ। ১২১ বলে খেলা ডি ভিলিয়ার্সের ৮০ রানের ইনিংসে চার ১০টি।

এক ওভার বিরতিতে এলগারকে ফিরিয়ে দেন শামি। শর্ট বল পুল করে ওড়াতে চেয়েছিলে; কিন্তু টাইমিং হয়নি, ডিপ স্কয়ার লেগে রাহুলের হাতে ধরা পড়েন এলগার। ১২১ বলে খেলা তার ৬১ রানের ইনিংস গড়া ৮টি চার ও একটি ছক্কায়।

বেশি আক্রমণাত্মক খেলার মাশুল দেন ডি কক। তিনটি চারে ৫ বলে ১২ রান করে ধরা পড়েন পার্থিবের গ্লাভসে। লেংথ থেকে লাফিয়ে উঠা শামির বল কাভার দিয়ে গলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ক্যাচ চলে যায় উইকেটরক্ষকের কাছে।

ভার্নন ফিল্যান্ডারের সঙ্গে ফাফ দু প্লেসির ৪৬ রানের জুটিতে দুইশ পার হয় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ। ইশান্ত শর্মাকে উড়ানোর চেষ্টায় স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ফিল্যান্ডার। পরের ওভারে কেশভ মহারাজ বিদায় করেন ইশান্ত।

ফিল্যান্ডারের বিদায়ের পর প্রায় একাই খেলতে হয় দু প্লেসিকে। টেলএন্ডের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে পাননি খুব একটা সাহায্য। রাবাদাকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট নেন শামি।

ফিরতি ক্যাচ নিয়ে দু প্লেসিকে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক চারটি চারে করেন ৪৮ রান। শেষের দিকে মর্নে মর্কেলের অপরাজিত ১০ রানে ২৫৮ পর্যন্ত যায় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ।

৪৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার শামি। বুমরাহ ৩ উইকেট নেন ৭০ রানে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৩৩৫

ভারত ১ম ইনিংস: ৩০৭

দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৯০/২) ৯১.৩ ওভারে ২৫৮ (মারক্রাম ১, এলগার ৬১, আমলা ১, ডি ভিলিয়ার্স ৮০, দু প্লেসি ৪৮, ডি কক ১২, ফিল্যান্ডার ২৬, মহারাজ ৬, রাবাদা ৪, মর্কেল ১০*, নগিদি ১; অশ্বিন ১/৭৮, বুমরাহ ৩/৭০, ইশান্ত ২/৪০, শামি ৪/৪৯, পান্ডিয়া ০/১৪)

ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৮৭) ২৩ ওভারে ৩৫/৩ (বিজয় ৯, রাহুল ৪, পুজারা ১১*, কোহলি ৫, পার্থিব ৫*; ফিল্যান্ডার ০/৬, রাবাদা ১/৯, এনগিডি ২/১৪, মর্কেল ০/৪, মহারাজ ০/১)