দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮৮ রানে জিতেছে ভারত। ইন্দোরের হলকার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে করে ২৬০ রান। টি-টোয়েন্টিতে এর চেয়ে বড় সংগ্রহ আছে মাত্র একটি। গত বছর সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই অস্ট্রেলিয়া করেছিল ৩ উইকেটে ২৬৩।
বোলিংয়ের সময় হ্যামস্ট্রিং চোটে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে হারানো শ্রীলঙ্কা ১৭ ওভার ২ বলে গুটিয়ে যায় ১৭২ রানে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত ও লোকেশ রাহুল। ১২.৪ ওভারে ১৬৫ রানের রেকর্ড জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ভারত।
টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো জুটিতে এটি ভারতের সর্বোচ্চ রানের জুটি। আগের জুটিতেও ছিলেন রোহিত। গত ১ নভেম্বরে দিল্লিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ১৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তিনি।
ম্যাচ সেরা রোহিত ঝড়ের শুরু দনাঞ্জয়াকে দুই চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে। গুনারত্নেকে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৩ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। সেই ওভারের পরের তিন বলে ভারতের ওপেনার হাঁকান ছক্কা ও দুই চার।
এরপর থিসারা পেরেরাকে টানা চার ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছে যান সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। ম্যাথিউসকে চার হাঁকিয়ে রোহিত স্পর্শ করেন ডেভিড মিলারের ৩৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।
টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাওয়া রোহিত দুশমন্থ চামিরাকে স্লোয়ার বাউন্সারে শর্ট থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ১১৮ রানে। ভারত অধিনায়কের ৪৩ বলের টর্নেডো ইনিংসে ১২টি চারের সঙ্গে ছক্কা ছিল ১০টি।
২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো তিন নম্বরে নামা মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে ৭৮ রানের আরেকটি দারুণ জুটি উপহার দেন রাহুল। ৫টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৪৯ বলে ৮৯ রান এই ওপেনারকে ফেরান নুয়ান প্রদিপ।
প্রমোশন পেয়ে তিনে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ধোনি। ২১ বলে ফিরেন দুটি করে ছক্কা-চারে ২৮ রান করে।
টি-টোয়েন্টি দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১১ রান। থিসারা পেরেরার সেই ওভারে দুটি উইকেট হারিয়ে ৭ রানের বেশি নিতে পারেনি স্বাগতিকরা।
বড় রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কার শুরুটা ছিল দারুণ। উপুল থারাঙ্গা, কুসল পেরেরা দলকে ১ উইকেটে ১৪৫ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন। কিন্তু ভালো শুরুর সুবিধা নিতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা।
ভারতের দুই স্পিনার করেছেন খরুচে বোলিং। কিন্তু চেহেল, কুলদীপের স্পিনেই শেষ পর্যন্ত দিক হারায় শ্রীলঙ্কা।
ফিরতি ক্যাচ নিয়ে থারাঙ্গাকে বিদায় করে বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভাঙেন চেহেল। ধসের সূচনা ওই উইকেট দিয়েই। এক ওভারে কুসল পেরেরা, থিসারা পেরেরা ও আসেলা গুনারত্নেকে ফিরিয়ে ম্যাচ ভারতের মুঠোয় নিয়ে আসেন কুলদীপ।
বাকিটুকু সহজেই সারেন চেহেল। ফিরিয়ে দেন সাদিরা সামারাবিক্রমা, চতুরঙ্গ ডি সিলভা ও আকিলা দনাঞ্জয়াকে। চোটের জন্য ব্যাটিংয়ে নামেননি ম্যাথিউস।
টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ছাড়া অতিথিদের আর কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ১ উইকেটে ১৪৫ থেকে দলটি গুটিয়ে যায় ১৭২ রানে।
চেহেল ৪ উইকেট নেন ৫২ রানে। আরেক বাঁহাতি লেগ স্পিনার কুলদীপ ৩ উইকেট নেন ৫২ রানে।
আগামী রোববার মুম্বাইয়ে হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ২৬০/৫ (রোহিত ১১৮, রাহুল ৮৯, ধোনি ২৮, পান্ডিয়া ১০, আয়ার ০, পান্ডে ১*, কার্তিক ৫*; ম্যাথিউস ০/১৬, চামিরা ১/৪৫, প্রদিপ ২/৬১, দনাঞ্জয়া ০/৪৯, থিসারা ২/৪৯, চতুরঙ্গ ০/১৬, গুনারত্নে ০/২১)
শ্রীলঙ্কা: ১৭.২ ওভারে ১৭২ (ডিকভেলা ২৫, থারাঙ্গা ৪৭, কুসল পেরেরা ৭৭, থিসারা ০, গুনারত্নে ০, সামারাবিক্রমা ৫, চতুরঙ্গ ১, দনাঞ্জয়া ৫, চামিরা ৩, প্রদিপ ০*, ম্যাথিউস অনুপস্থিত; উনাদকাত ১/২২, বুমরাহ ০/২১, যাদব ৩/৫২, পান্ডিয়া ১/২৩, চেহেল ৪/৫২)
ফল: ভারত ৮৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রোহিত শর্মা।