মালান-বেয়ারস্টোর ব্যাটে দুর্দান্ত ইংল্যান্ড

টস জয়ের পর জো রুটের মুখে খেলে গেল দারুণ হাসি। দিনের মাঝামাঝি নাগাদ সেই হাসি উধাও। দিন শেষে ইংলিশ অধিনায়কের মুখে সেই হাসি আবার ফিরিয়ে আনলেন দলের নবীন একজন। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন ডাভিড মালান। পার্থ টেস্টের প্রথম দিনটি ইংল্যান্ড করে নিল নিজেদের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2017, 01:13 PM
Updated : 14 Dec 2017, 01:50 PM

­­অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার ৪ উইকেটে ৩০৫ রান করেছে ইংল্যান্ড।

১১০ রানের ইনিংস খেলে দিন শেষে অপরাজিত মালান। অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা ভালোই চেপে ধরেছিলেন ইংলিশদের। কিন্তু জনি বোয়ারস্টোর সঙ্গে মালানের দুর্দান্ত অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়িয়েছে দারুণভাবে।

এই ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটকে কার্যত বিদায় জানাচ্ছে পার্থের ওয়াকা মাঠ। অনেক ঐতিহ্য ও স্মৃতির এই মাঠে এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হবে কেবল কম গুরুত্বপূর্ণ দুয়েকটি ম্যাচ। টেস্ট ক্রিকেটসহ বেশির ভাগ ম্যাচই হবে ৬০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার নতুন মাঠে।

এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির উইকেট ছিল ওয়াকায়। ঝড় উঠত গতি আর বাউন্সের। তবে অনেকদিন হলো সেই পরিচয় হারিয়েছে ওয়াকার ২২ গজ। শেষ টেস্টে বাউন্স ভালো মিললেও উইকেট অনেকটাই ব্যাটিং সহায়ক।

টস জিতে এজন্যই হেসেছিলেন রুট, নিয়েছেন ব্যাটিং। শুরুটা অবশ্য খুব ভালো ছিল না। প্রথম ইংলিশ হিসেবে ১৫০তম টেস্ট খেলতে নামা অ্যালেস্টার কুককে ৭ রানেই ফেরান মিচেল স্টার্ক।

তবে দ্বিতীয় উইকেটে প্রতি আক্রমণে চমক দেন মার্ক স্টোনম্যান ও জেমস ভিন্স। দারুণ সব শটে ওভারপ্রতি চারের বেশি করে রান তোলেন দুজন।

৬৩ রানের জুটি ভাঙে লাঞ্চের মিনিট পাঁচেক আগে। আরও একবার থিতু হয়ে আউট ভিন্স। জশ হেইজেলউডের অফ স্টাম্প ঘেঁষা ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড ২৫ রানে।

দারুণ ভাবে শুরু করা অধিনায়ক রুটকে ২০ রানে থামান প্যাট কামিন্স। এর মধ্যেই স্টোনমান করে ফেলেন ফিফটি। স্টার্কের বাউন্সার তাকে ফেরায় ৫৬ রানে। যদিও সেই আউট জন্ম দিল বিতর্কের।

মাঠের আম্পায়ার আউট না দেওয়ায় রিভিউ নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। টিভি রিপ্লেতে হটস্পটে কিছু ধরা পড়েনি, কিন্তু স্টোনম্যানের গ্লাভসে বল স্পর্শের প্রমাণ মেলে স্নিকোমিটারে। সিদ্ধান্ত ঘুরিয়ে তৃতীয় আম্পায়ার দেন আউট।

পরের কিছু রিপ্লেতে দেখা যায়, বল গ্লাভসে লাগার সময় স্টোনম্যানের এক হাত ব্যাট থেকে ছুটে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাট থেকে ছুটে যাওয়া হাতে বল লাগলে আউট নয়। বারবার রিপ্লে দেখেও পরিস্কার বোঝা যাচ্ছিল না কোন হাতের গ্লাভসে লেগেছে বল। মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলার শতভাগ প্রমাণ আছে কিনা, সেই প্রশ্ন তাই থাকল। রুট হতাশা প্রকাশ করেন ড্রেসিং রুমের দরজায় চাপড় মেরে।

ইংল্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ১৩১। তেতে আছে অস্ট্রেলিয়া। মালান ও বেয়ারস্টোর ব্যাটে ক্রমেই কমে গেল অস্ট্রেলিয়ানদের ধার, বাড়ল রান। সারা দিনে আর উইকেটই পড়ল না!

অষ্টম টেস্ট খেলতে নামা মালান ১৫৯ বলে স্পর্শ করেন তার সেঞ্চুরি। কাটিয়ে দেন দিনের শেষ ভাগটুকুও। সাত থেকে প্রমোশন পেয়ে ছয়ে নেমে বেয়ারস্টো অপরাজিত ৭৫ রানে।

দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১৭৪। সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার টেস্টের প্রথম দিনটি তাই ইংলিশদের জাগাল আশা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮৯ ওভারে ৩০৫/৪ (কুক ৭, স্টোনম্যান ৫৬, ভিন্স ২৫, রুট ২০, মালান ১১০*, বেয়ারস্টো ৭৫*; স্টার্ক ২/৭৯, হেইজেলউড ১/৬২, কামিন্স ১/৬০, লায়ন ০/৬১, মিচেল মার্শ ০/২৫, স্মিথ ০/৮)।