রোহিতের ডাবল সেঞ্চুরিতে সমতায় ভারত

২৯ রানে ৭ উইকেট, ১১২ রানে অলআউট। ব্যাটিং শৌর্য নিয়ে গর্ব করা একটি দলের অহমে চোট লাগার জন্য যথেষ্ট। তেতে থাকা ভারত হতাশাটা ফিরিয়ে দিল পরের ম্যাচেই। রানের স্রোতে ভাসাল শ্রীলঙ্কাকে। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া ডাবল সেঞ্চুরিতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন রোহিত শর্মা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2017, 02:18 PM
Updated : 13 Dec 2017, 04:28 PM

দুটি ডাবল সেঞ্চুরিতেই গড়েছিলেন ইতিহাস। তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরিতে রোহিত নিজেকে নিয়ে গেলেন নতুন উচ্চতায়। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ১৪১ রানে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল ভারত।

মোহালিতে বুধবার রোহিতের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারত ৫০ ওভারে তুলেছিল ৪ উইকেটে ৩৯২ রান। শ্রীলঙ্কা যেতে পারে ২৫১ পর্যন্ত।

ধর্মশালার মতো না হলেও এদিন মোহালির উইকেটেও ছিল ঘাসের ছোঁয়া। আকাশ ছিল মেঘলা। টস জিতে লঙ্কান অধিনায়ক থিসারা পেরেরা ছিলেন উচ্ছ্বসিত।

সেই উচ্ছ্বাস মিলিয়ে দেয় ভারতের উদ্বোধনী জুটি। শুরুর জুটিতেই ভারত ছাড়িয়ে যায় আগের ম্যাচের দলীয় রানকে!

জুটিতে বেশি অগ্রণী ছিলেন শিখর ধাওয়ান। রোহিত ছিলেন সাবধানী। ৯ বলে প্রথম রানের দেখা পেয়েছেন ভারত অধিনায়ক। ধাওয়ানের যখন ফিফটি, রোহিতের তখন ৪১ বলে ২৩।

আগে আউটও হন ধাওয়ান। সাচিথ পাথিরানার বাঁহাতি স্পিনে আউট হন ৬৭ বলে ৬৮ করে।

ধাওয়ান আউট হওয়ার পর রানের গতি বাড়ান রোহিত। তিনে নেমে শ্রেয়াস আইয়ার দারুণ সব শটে সঙ্গ দেন অধিনায়ককে।

এই জুটিতে ভাঙন ধরাতে না পারলেও রানের গতি ওভারপ্রতি ছয়ের আশেপাশেই রাখতে পেরেছিল লঙ্কান বোলাররা। সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যায় শেষ ১০ ওভারে। পাল্টে দেন রোহিত।

৪০তম ওভারে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন রোহিত। ওয়ানডেতে যেটি তার ১৬তম। পরের ১০ ওভারে চালান ধ্বংসজজ্ঞ। তাতে তছনছ লঙ্কান বোলিং।

আগের ম্যাচে ১০ ওভারে মাত্র ১৩ রান দেওয়া সুরাঙ্গা লাকমলের এক ওভারেই মারেন চারটি ছক্কা। তুলোধুনো করেন নুয়ান প্রদিপ ও থিসারা পেরেরাকেও।

পেরেরা মাঝে ফিরিয়ে দেন শ্রেয়াসকে। মাত্র দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা তরুণ ব্যাটসম্যান ৮৮ করেছেন ৭০ বলে। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিতের সঙ্গে জুটি ২২৩ রানের।

রোহিতের তাণ্ডব থামেনি। শেষ ওভারের স্পর্শ করেন তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি, মাত্র ১৫১ বলে। প্রথম সেঞ্চুরিতে বল লেগেছিল ১১৫টি, পরের সেঞ্চুরি ৩৬ বলেই!

ওয়ানডেতে ক্রিকেটে এটি সপ্তম ডাবল সেঞ্চুরি। রোহিত একাই করলেন তিনটি। বাকি চারটি করেছেন শচিন টেন্ডুলকার, বিরেন্দর শেবাগ, ক্রিস গেইল ও মার্টিন গাপটিল।

অধিনায়ক হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি রোহিতের আগে করেছিলেন কেবল শেবাগ। রোহিতের মত শেবাগও ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।

আগের দুটি ডাবল সেঞ্চুরিতে আউট হলেও এবার রোহিত ১৩ চার ও ১২ ছক্কায় ১৫৩ বলে অপরাজিত ২০৮।

শেষ ১০ ওভারে ভারত তোলে ১৪৭ রান। ১০ ওভারে ১০৬ রান দিয়ে শ্রীলঙ্কার হয়ে রান খরচের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান নুয়ান প্রদিপ। এই পেসারের শেষ ৩ ওভারেই এসেছে ৫১ রান।

ম্যাচের ফল অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল প্রথম ইনিংসের পরই। প্রায় চারশ রান তাড়ার শক্তি এই শ্রীলঙ্কা দলের নেই। অভাবনীয় কিছুর সম্ভাবনাও তারা পারেনি জাগাতে।

শুরু থেকে উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতে। ইনিংসে অর্ধশত রানের জুটিই মোটে একটি।

প্রাপ্তি বলতে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সেঞ্চুরি। জয়ের আশা ছেড়ে ব্যাট করে গেছেন নিজের মতো সময় নিয়ে। করেছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। প্রথমটিও ছিল ভারতের বিপক্ষে, ২০১৪ সালে রাঁচিতে।

১৩২ বলে ১১১ রানে অপরাজিত ম্যাথিউস। শ্রীলঙ্কা কোনো রকমে পেরোয় আড়াইশ।

সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডে রোববার, বিশাখাপত্মমে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভারে ৩৯২/৪ (রোহিত ২০৮*, ধাওয়ান ৬৮, শ্রেয়াস ৮৮, ধোনি ৭, পান্ডিয়া ৮; ম্যাথিউস ০/৯, লাকমল ০/৭১, থিসারা ৩/৮০, প্রদিপ ০/১০৬, দনঞ্জয়া ০/৫১, পাথিরানা ১/৬৩, গুনারত্নে ০/৯)।

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৫১/৮ (গুনাথিলাকা ১৬, থারাঙ্গা ৭, থিরিমান্নে ২১, ম্যাথিউস ১১১*, ডিকভেলা ২২, গুনারত্নে ৩৪, থিসারা ৫, পাথিরানা ২, দনঞ্জয়া ১১, লাকমল ১১* ; ভুবনেশ্বর ১/৪২, পান্ডিয়া ১/৩৯, বুমরাহ ১/৪৩, সুন্দর ১/৬৫, চেহেল ৩/৬০, শ্রেয়াস ০/২)।

ফল: ভারত ১৪১ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা

ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা