বিপিএলে বুধবার রংপুর রাইডার্সকে ৪৩ রানে হারিয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে ঢাকার ১৩৭ রান তাড়ায় রংপুর করতে পারে মাত্র ৯৪।
দুইয়ে থাকায় ফাইনালে ওঠার অন্তত দুটি সুযোগ পাবে ঢাকা। প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে তারা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। এলিমিনেটর ম্যাচে খেলবে রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইটানস।
বুধবার ম্যাচের আগে কৌতুহল ছিল উইকেট নিয়ে। এই উইকেটেই গত শনিবার মুখোমুখি হয়েছিল রংপুর ও কুমিল্লা। ওই ম্যাচের পর উইকেটের প্রবল সমালোচনা করেছিলেন মাশরাফি ও তামিম ইকবাল।
উইকেট এদিনও খুব সুবিধার ছিল না। আগের দিনের মত অতটা বেশি না হলেও অসমান বাউন্স ছিল কিছুটা। দুই রকম গতির মন্থর উইকেটে শট খেলা ছিল কঠিন।
যথারীতি তাই দুর্দশা দুই দলের ব্যাটিংয়েই। ঢাকা ৫ প্রথম উইকেট হারিয়েছিল ৪৮ রানে। রংপুর ৪০ রানে। ঢাকাকে উদ্ধার করার জন্য ছিলেন সাকিব ও মেহেদি মারুফ। রংপুর পায়নি কোনো ত্রাতা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা এগিয়েছে ধুঁকতে ধুঁকতে। রুবেলের বাউন্সারে আউট হয়েছেন সুনিল নারাইন, এবাদত হোসেনের শর্ট বলে জহুরুল। মোসাদ্দেক ব্যর্থ আবারও। রানের জন্য হাঁসফাঁস করে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন জো ডেনলি। প্রায় ১০ ওভার উইকেটে থেকে এভিন লুইস ১৮ বলে ১৪ করে হিট উইকেট হয়েছেন নাহিদুলের অফ স্পিনে।
৪৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলকে উদ্ধার করেন সাকিব ও মারুফ। শুরুতে সাবধানী ছিলেন দুজন, সময়ের সঙ্গে বাড়িয়েছেন গতি। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের জুটি ৫৫ রানের।
২৩ বলে ৩৩ রান করে মারুফের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। শেষ দিকে ঝড় তুলতে পারেননি কাইরন পোলার্ড। তবে সাকিব শেষ করে এসেছেন নিজের কাজ। দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ বলে অপরাজিত ৪৭। শেষ ৫ ওভারে ঢাকা তোলে ৫২ রান।
টি-টোয়েন্টি অভিষেকে দুটি উইকেট নিলেও এবাদত রান গুনেছেন ৩৭। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল।
এই উইকেটে ১৩৮ রান তাড়া সহজ নয়। প্রয়োজন ছিল নিয়ন্ত্রিত ও বৃদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং। কিন্তু রংপুরের ব্যাটসমানরা নিজেদের কাজ করে তুললেন আরও কঠিন।
অ্যাডাম লাইথ ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ফিরলেন বাজে শটে। দেশের দুই ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস ও মোহাম্মদ মিঠুন দেখাতে পারলেন না আশার আলো। আশা হয়ে ছিলেন যিনি, সেই জনসন চার্লস (২৬) এলবিডব্লিউ হলেন সংশয়পূর্ণ সিদ্ধান্তে। রংপুরের আশা শেষ এরপরই।
লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন নাহিদুল। কিন্তু বোল্ড হলেন সুনিল নারাইনের এমন এক বলে, যেটি ছিল স্রেফ গোড়ালি উচ্চতায়। রবি বোপারা শেষ পর্যন্ত থাকলেও দলকে দেখাতে পারেননি দিশা (৩০ বলে ২৮*)।
দারুণ ব্যাটিংয়ের পর ৪ ওভারে ১৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। দলকে সেরা দুইয়ে তোলার পাশাপাশি ম্যাচ সেরার পুরস্কারে ঢাকা অধিনায়ক মাঠ ছাড়লেন হাসি মুখে।
তবে আরও একটি নিষ্প্রাণ ম্যাচ শেষে আবারও কাঠগড়ায় উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৩৭/৭ (নারাইন ৪, লুইস ১৪, ডেনলি ৯, জহুরুল ৫, মোসাদ্দেক ৫, মারুফ ১০, সাকিব ৪৭*, পোলার্ড ৬, আমির ৩*; বদ্রি ১/১৮, রুবেল ২/৩২, নাহিদুল ১/১২, এবাদত ২/৩৭, রাজ্জাক ১/২৩, বোপারা ০/১২)।
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ৯৪/৭ (চার্লস ২৬, লাইথ ৩, ম্যাককালাম ১, শাহরিয়ার ৭, মিঠুন ২, বোপারা ২৮*, নাহিদুল ১৩, রাজ্জাক ৫, বদ্রি ০* ; মোসাদ্দেক ১/১৩, সাকিব ২/১৩, নারাইন ১/১৮, আবু হায়দার ২/২৩, আমির ১/১৫, সাদমান ০/৬)।
ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৪৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান