কুমিল্লাকে হারিয়ে টিকে থাকল খুলনার আশা

ম্যাচ থেকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পাওয়ার ছিল সামান্যই। শীর্ষস্থান নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। তবে সেরা দুইয়ে থাকতে হলে জয়টা খুব করে প্রয়োজন ছিল খুলনা টাইটানসের। শেষের দিকে বিস্ফোরক ব্যাটিং আর নিয়ন্ত্রিত বোলিং পারফরম্যান্সে খুলনা মেলাতে পেরেছে সেই চাওয়া-পাওয়ার হিসেব।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2017, 10:56 AM
Updated : 5 Dec 2017, 10:56 AM

বিপিএলে মঙ্গলবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১৪ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইটানস। খুলনার ১৭৪ রান তাড়ায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা কুমিল্লা করতে পেরেছে ১৬০।

১৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করল খুলনা। আপাতত তারা দুইয়ে। তবে সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত নয় এখনও। বুধবার শেষ ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটস জিতলে তাদের পয়েন্টও হবে ১৫। রান রেট ভালো থাকায় সেরা দুইয়ে থাকবে ঢাকাই। ঢাকা হারলে দুইয়েই থাকবে খুলনা। তবে এদিন খুলনার জয়ে শেষ হয়ে গেছে রংপুর রাইডার্সের দুইয়ে থাকার আশা।

কুমিল্লার রান তাড়ার শুরুটাই ছিল হোঁচট খেয়ে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মাহমুদউল্লাহ ফিরিয়ে দেন বিপিএল অভিষিক্ত সলোমন মিরেকে।

তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ব্যাটে অবশ্য শুরুর ধাক্কা ভালোই সামাল দিয়েছিল দল। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়ে দুজন।

প্রয়োজন ছিল দুজনের অন্তত একজনের ব্যাটে বড় ইনিংস। পারেননি কেউই। ৬ রানে জীবন পাওয়া ইমরুল ফিরেছেন ১৯ বলে ২০ করে। ৩৩ বলে ৩৬ করে তামিম আউট ব্র্যাথওয়েটকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে।

ব্যর্থতার জাল এদিনও ছিড়তে পারেননি এবারের বিপিএলের অন্যতম দামি ক্রিকেটার জস বাটলার।

প্রায় নিভে যাওয়া আশার প্রদীপ ক্ষনিকের জন্য জ্বলেছিল শোয়েব মালিকের ব্যাটে। ৩ ছক্কায় ২৩ বলে ৩৬ করা পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছেন স্বদেশি লেগ স্পিনার মোহাম্মদ ইরফান। কুমিল্লার আশাও শেষ ওখানেই।

শেষ দিকে ৯ বলে ১৭ করেছেন রকিবুল হাসান। মারলন স্যামুয়েলস অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ২৫ রানে। তাতে কেবল ব্যবধানটাই ভদ্রস্থ হয়েছে। ম্যাচের উত্তেজনা শেষ বেশ আগেই।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার শুরুটা ছিল নিস্তরঙ্গ। প্রথম ৩ ওভারে রান ছিল ১৫। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাইকেল ক্লিঙ্গার এরপর ছুটলেন উল্টো গিয়ারে। পরের ৩ ওভারে রান আসে ৪১!

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ভাঙে ৫৫ রানের জুটি। আল আমিনকে দুটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন শান্ত। আল আমিন জবাব দেন নিখুঁত ইয়র্কারে বোল্ড করে। চারটি চার ও দুই ছক্কায় ২১ বলে শান্ত করেছেন ৩৭।

আল আমিন এরপর নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহর উইকেটও। তিনে নেমে বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানাকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কায় শুরু করেছিলেন খুলনা অধিনায়ক। কিন্তু আউট হয়ে যান ২৩ বলে ২৩ করে।

এই দুই উইকেটের মাঝে ফিরে যান ক্লিঙ্গারও। বিপিএলে নিজের প্রথম ওভারেই সলোমন মিরে ফেরান ২৮ বলে ২৯ রান করা ব্যাটসম্যানকে।

ক্যারিবিয়ান নিকোলাস পুরান ব্যর্থ আরও একবার। ১৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় খুলনা। রানের গতিও কমে আসে খানিকটা।

দেড়শ রানকেও তখন মনে হচ্ছিলো বেশ দূরের পথ। শেষ ৩ ওভারে সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ও আরিফুল হক।

আল আমিনের করা ১৮ ও ২০তম ওভারে রান আসে ১৯ করে। মাঝে রানার ওভারে ১২। শেষ ৩ ওভারেই ৫০!

২১ বলে ৩৫ করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন আরিফুল। ১২ বলে ২২ রানে রান আউট ব্র্যাথওয়েট। শেষ ওভারে ৩ বলে ৯ করেন বেনি হাওয়েল।

৩ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে ৫২ রান গুনেছেন আল আমিন। শেষ পর্যন্ত ব্যবধান হয়ে গড়ে দিয়েছে শেষের ওই রানগুলোই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১৭৪/৬ (শান্ত ৩৭, ক্লিঙ্গার ২৯, মাহমুদউল্লাহ ২৩, পুরান ৮, আরিফুল ৩৫, ব্র্যাথওয়েট ২২, হাওয়েল ৯*; মেহেদি ০/৩২, মালিক ১/২৫, আল আমিন ৩/৫২, ক্রেমার ০/২৩, রানা ০/৩৬, মিরে ১/৪)।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৬০/৭ (তামিম ৩৬, মিরে ০, ইমরুল ২০, বাটলার ১১, মালিক ৩৬, স্যামুয়েলস ২৫*, রকিবুল ১৭, রানা ১*; মাহমুদউল্লাহ ১/২২, আবু জায়েদ ২/৩৫, আফিফ ০/১৯, হাওয়েল ২/৩২, ব্র্যাথওয়েট ১/১৫, ইরফান ১/২৬)।

ফল: খুলনা টাইটানস ১৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আরিফুল হক