বিপর্যয়ের পরও অনেকটা এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া

কৃত্রিম আলোয় চকচকে গোলাপি বল সুইং করল দুই দিকেই। বারবার ছোবল দিল সাপের মতো। ইংলিশ পেসারদের দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার। কিন্তু প্রথম ইনিংসের লিড এত বড় যে বিপর্যয়ের পরও ম্যাচের লাগাম অস্ট্রেলিয়ানদের হাতেই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2017, 12:40 PM
Updated : 4 Dec 2017, 02:55 PM

অ্যাডিলেড টেস্টে প্রথম ইনিংসে বড় লিড হজমের পর বল হাতে লড়াই করছে ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে সোমবার ইংলিশরা গুটিয়ে গেছে ২২৭ রানে। ২১৫ রানের লিড পেলেও ফলো অন করায়নি অস্ট্রেলিয়া। ব্যটিংয়ে নেমে তৃতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ৪ উইকেটে ৫৩।

প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেললেও অস্ট্রেলিয়ার লিড হয়ে গেছে ২৬৮ রানের।

ইংল্যান্ড দিন শুরু করেছিল ১ উইকেটে ২৯ রান নিয়ে। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই জশ হেইজেলউড ফিরিয়ে দেন জেমস ভিন্সকে। আরেক পেসার প্যাট কামিন্স এনে দেন আরও বড় উইকেট। ক্রিজে জমতেই দেননি ইংলিশ অধিনায়ক জো রুটকে।

এক পাশ আগলে রাখছিলেন অ্যালেস্টার কুক। কিন্তু নাথান লায়নের দারুণ এক ডেলিভারি ৩৭ রানে ফেরায় বাঁহাতি ওপেনারকে।

মইন আলি ও জনি বেয়ারস্টো চেষ্টা করেছিলেন জুটি গড়ার। দুজনেরই প্রতিরোধ শেষ হয়েছে অসাধারণ দুটি ফিরতি ক্যাচে।

প্রথমে ২৫ রানে মইন। নাথান লায়নের বলে ড্রাইভ করছিলেন। পাখির মতো উড়ে বাঁহাতে সেই বল জমিয়েছেন লায়ন। খানিক পর ২১ রান করা বেয়ারস্টোকে দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে ফিরিয়েছেন মিচেল স্টার্ক।

ইংল্যান্ডের রান তখন ৭ উইকেটে ১৪২। ইনিংসের সেরা জুটি এরপরই পেয়েছে ইংল্যান্ড। দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস ও অভিষিক্ত ক্রিস ওভারটন ৬৬ রানের জুটি গড়েন অষ্টম উইকেটে।

ডিনার বিরতির ঠিক আগে অস্ট্রেলিয়ার মাথা ব্যথা হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন স্টার্ক। ফিরিয়ে দেন ৩৬ রান করা ওকসকে। ডিনারের পর শেষ দুই উইকেট দ্রুত তুলে নেন লায়ন। বল হাতে ৩ উইকেটের পর অভিষেক ইনিংসে ওভারটন অপরাজিত থাকেন দলের সর্বোচ্চ ৪১ রানে।

৬০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার এই মাঠের এক সময়কার মাঠকর্মী লায়ন।

কৃত্রিম আলোয় নতুন গোলাপি বল সুইং করারই কথা। ইংল্যান্ডকে ফলো অন করিয়ে সেটির ফায়দা নিতে পারত অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু স্মিথ সিদ্ধান্ত নেন আবার ব্যাটিংয়ের। সুইং বোলিংয়ের পরীক্ষায় উতরাতে পারেনি স্মিথসহ অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার।

দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ের প্রদর্শনীতে জেমস অ্যান্ডারসন ফিরিয়েছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও উসমান খাওয়াজাকে। ক্রিস ওকস তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক স্মিথকে। ওয়ার্নারের মত সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানও ১৪ করেছেন ৬০ বলে। এটিই বলে দিচ্ছে পরিস্থিতি কত কঠিন ছিল।

পিটার হ্যান্ডসকম ও নাইটওয়াচম্যান নাথান লায়ন কাটিয়ে দেন শেষ সময়টুকু। চতুর্থ দিন দুপুরে তুলনামূলকভাবে সহজ হওয়ার কথা ব্যাটিং।

তবে বল হাতে ভালো করলেও ইংল্যান্ডের আসল চ্যালেঞ্জ আবারও ব্যাটিং। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদেরও হয়তো কৃত্রিম আলোয় সামলাতে হবে অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের তোপ!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪৪২/৮(ডি)

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৭৬.১ ওভারে ২২৭ (আগের দিন ২৯/১) (কুক ৩৭, স্টোনম্যান ১৮, ভিন্স ২, রুট ৯, মালান ১৯, মইন ২৫, বেয়ারস্টো ৩১, ওকস ৩৬, ওভারটন ৪১*, ব্রড ৩, অ্যান্ডারসন ০; স্টার্ক ৩/৪৯, হেইজেলউড ১/৫৬, কামিন্স ২/৪৭, লায়ন ৪/৬০)

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ২৬ ওভারে ৫৩/৪ (ব্যানক্রফট ৪, ওয়ার্নার ১৪, খাওয়াজা ২০, স্মিথ ৪, হ্যান্ডসকম ৩*, লায়ন ৩*; অ্যান্ডারসন ২/১৬, ব্রড ০/১৪, ওভারটন ০/৮, ওকস ২/১৩)।