শুরুতেই কুপারকে ফিরতে বলেছিলেন তামিম

ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাঝ উইকেটে থমকে গেলেন কেভন কুপার। নন স্ট্রাইক প্রান্তে করা হলো রান আউট। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অন্য ফিল্ডাররা যখন উৎসবে মেতে উঠেছেন, তামিম ইকবাল তখন ছুটে গেলেন কুপারের কাছে। শুরু থেকেই কুপারকে ব্যাটিংয়ে ফেরার অনুরোধ জানান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়ক। তবে শুরুতে অনুরোধে সাড়া দেননি কুপার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2017, 12:12 PM
Updated : 30 Nov 2017, 12:12 PM

বুধবার কুমিল্লার বিপক্ষে ঢাকা ডায়নামাইটসের রান তাড়ার ১৮তম ওভারের ঘটনা সেটি। রান নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন কুপার, বোলার ব্রাভো ছুটে গিয়ে চেষ্টা করছিলেন ফেরানোর। কিন্তু কুপারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উইকেটে পড়ে যান ব্রাভো। আঘাত পেয়ে থমকে যান কুপারও। রান নেওয়ার চেষ্টাই করেননি আর। হয়ে যান রান আউট।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তামিম জানালেন, রান আউটের পরপরই ছুটে গিয়ে কুপারকে ব্যাটিংয়ে ফেরার অনুরোধ জানান তিনি।

“রান আউট তো মুহূর্তের মধ্যে হয়ে গেছে। তবে সবাই যখন উল্লাস করছে, আমি কিন্তু তখন দ্রুতই কুপারের কাছে ছুটে গেছি। বলেছি, ‘তুমি চাইলে আবার ব্যাটিংয়ে ফিরতে পারো। আমরা রান আউটের আবেদন তুলে নিচ্ছি।’ কিন্তু কুপার বললো, ‘ব্রাভো তো ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয়নি। সমস্যা নেই, আমি আউটই মেনে নিচ্ছি।”

তামিম এরপর আবারও দু-তিন বার অনুরোধ করেন কুপারকে। নিশ্চিত হতে চান, সত্যিই বাইরে চলে যেতে চান কিনা। কুপার নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন। তবে থমকে দাঁড়ান তিনি সীমানার কাছে গিয়ে। মাঠ ছাড়ার আগে তাকে থামান দলের কর্মকর্তারা। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কুপার ব্যাটিংয়ে ফেরেন।

প্রথমে সাড়া না দিয়ে কুপার শেষ মুহূর্তে সেই অবস্থান থেকে সরে আসলেও তামিমের তাতে আপত্তি ছিল না।

“বাইরে থেকে তাকে থামানো হয়েছিল কিনা, জানি না। কেন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন, সেটিও আমার জানা নেই। আমি সেটি জানতে চাইনি। স্রেফ গিয়ে বলেছি, চাইলে এখনও ফিরতে পারে। আমার কোনো সমস্যা নেই।”

কুপার যখন ফেরেন, জয়ের জন্য ঢাকার প্রয়োজন ছিল ১৬ বলে ৪৪ রান। ওই ওভারেই শেষ বলে বিশাল এক ছক্কা মারেন কুপার। পরের ওভারে হাসান আলির প্রথম তিন বলেই বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে দেন জহুরুল ইসলাম। তবে শেষ পর্যন্ত জিতেছে তামিমের দলই। ১২ রানের জয়ে উঠে গেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তামিম বলেছিলেন, দল হারার মত অবস্থানে থাকলেও তার একই সিদ্ধান্ত থাকত। একই কথা আবার প্রতিধ্বনিত হলো তার কণ্ঠে।

“আমরা হয়ত একটু এগিয়ে ছিলাম, কিন্তু নিরাপদ ছিলাম না। কুপার খুবই বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান। গত সিপিএলের ফাইনালে এরকম অবস্থা থেকেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে জিতিয়েছে। কিন্তু জয়-হারের কথা আমি ভাবিনি। ক্রিকেটের স্পিরিটের কথাই মাথায় ছিল। কোনো একদিন আমার সঙ্গেও এরকম হতে পারে। ওকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিতে একটুও ভাবতে হয়নি।”

“কুপার ছক্কা মারার পর একটু টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম অবশ্যই। তবে সেটি খেলার উত্তেজনার কারণেই। এক মুহূর্তের জন্যও মনে হয়নি ওকে ফিরিয়ে ভুল করেছি। আমরা যদি ম্যাচ হারতাম, তবু নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে একই রকম গর্ব করতাম।”