বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১২ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। চট্টগ্রামে বুধবার রাতে কুমিল্লার ১৬৭ রান তাড়ায় ঢাকা করতে পারে ১৫৫।
এই জয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠল ২০১৫ আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। ১০ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ঢাকা। ১০ ম্যাচে ১৩ পয়েন্টে দুইয়ে খুলনা টাইটানস।
উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল ভালো। ঢাকার ব্যাটিং লাইন আপের যা শক্তি, তাতে ১৬৮ রান খুব কঠিন ছিল না। তবে কুমিল্লার বোলিং আক্রমণও যে টুর্নামেন্টের সেরা! সঙ্গে যোগ হয়েছিল দারুণ ফিল্ডিং। তাতেই শুরতে পথহারা ঢাকার রান তাড়া।
এবার প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা সাদমান ইসলাম দলের চাপ বাড়িয়ে আউট হন ১৫ বলে ৯ রানে। ব্যাটিংয়ে টুর্নামেন্ট জুড়ে বিবর্ণ সাকিব আল হাসান ফিরেছেন ৮ বলে ৭ রানে।
দুই দলের আগের লড়াইয়ে ৭৬ রানের ইনিংস খেলা সুনিল নারাইন এবার পাঁচে নেমে একটি চার মেরেই ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন ডোয়াইন ব্রাভোকে।
স্রোতের বিপরীতে ব্যাট চালাতে থাকাতে ডেনলিকেও থামতে হলো এরপর। সাইফ উদ্দিনের দারুণ ইয়র্কারে বোল্ড ৩৯ বলে ৪৯ রান করে। ঢাকার রান তখন ৫ উইকেটে ৮৩।
শেষ ভরসা হয়ে থাকা কাইরন পোলার্ড সীমানায় ক্যাচ দিয়েছেন ২১ বলে ২৭ রান করে। শেষ দিকে চেষ্টা করেছেন জহুরুল ইসলাম। কিন্তু দলকে জেতাতে নয়, পেরেছেন কেবল ব্যবধান কমাতে।
রান নেওয়ার চেষ্টায় ব্রাভোর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে রান আউট হওয়া কেভন কুপারকে আবার ডেকে এনে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন তামিম। দারুণ স্পোর্টসম্যানশিপ দেখানোর দিনটিতে কুমিল্লা অধিনায়ক মাঠ ছেড়েছেন জয়ের হাসিতে।
তবে দমে না গিয়ে আবারও দলকে এনে দিলেন ভালো শুরু। লিটন ঝড় তুলতে না পারলেও সঙ্গ দেন অধিনায়ককে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে দুজন তোলেন ৫৪ রান।
টানা তৃতীয় ফিফটি অবশ্য পাওয়া হয়নি তামিমের। সাকিব আল হাসানের যে বলটি পাঠানো উচিত ছিল গ্যালারিতে, সেই শর্ট বলে ক্যাচ দিয়েছেন সীমানায়। করেছেন ২৩ বলে ৩৭।
বড় একটি ইনিংসের খোঁজে থাকা লিটন আবার সম্ভাবনা জাগিয়েছেন এবং আবারও হতাশ করেছেন। ৩০ বলে ৩৪ করে উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন সেই সাকিবকেই।
রানের গতি তখন একটু গেছে কম। মারলন স্যামুয়েলস উইকেট গিয়ে ইনিংসে দিরেন একটু দম। টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারলেন মোহাম্মদ শহিদকে। দারুণ কিপটে বোলিং করতে থাকা সুনিল নারাইনকে ছক্কায় ওড়ালেন ইমরুল কায়েস।
তবে বেশ কিছু বল খরচ করার হিসেব পুষিয়ে দিতে পারেননি ইমরুল। ফিরেছেন ২৪ বলে ২৬ রানে। ২৭ বলে ৩৯ করে পরিস্থিতির দাবি খানিকটা মিটিয়েছেন স্যামুয়েলস।
স্যামুয়েলসের ছক্কায় শুরু ওভার। পরের দুই বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে আউট হন স্যামুয়েলস ও জশ বাটলার। হ্যাটট্রিক বলে ছক্কা মেরে দেন শোয়েব মালিক। শেষ বলে বাউন্ডারি ডোয়াইন ব্রাভোর ব্যাটে। শেষ ওভারে হাসান আলির ছক্কায় রান ছাড়িয়ে গেছে ১৬০।
ঢাকা পারেনি সেই রানকে ছাড়িয়ে যেতে। বোলিং-ফিল্ডিংয়ে উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে কুমিল্লা মাঠ ছেড়েছে জয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৬৭/৬ (তামিম ৩৭, লিটন ৩৪, ইমরুল ২৬, স্যামুয়েলস ৩৯, বাটলার ৪, মালিক ৯*, ব্রাভো ৬, হাসান ৮*; আবু হায়দার ০/৩৫, কুপার ৩/৪২, নারাইন ০/১৫, শহিদ ০/২৬, মোসাদ্দেক ০/২৪, সাকিব ২/২৩)।
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (লুইস ৬, ডেনলি ৪৯, সাদমান ৯, সাকিব ৭, নারাইন ৫, পোলার্ড ২৭, মোসাদ্দেক ১৭, জহুরুল ১৭, কুপার ৯*, আবু হায়দার ৫*; মেহেদি ০/১৬, মালিক ১/২৬, হাসান ০/৩৮, আল আমিন ০/২৬, ব্রাভো ৩/৩১, সাইফ উদ্দিন ২/১৮)।
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১২ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ডোয়াইন ব্রাভো