চিটাগংকে হারিয়ে টিকে থাকল রাজশাহী

বাঁচা-মরার ম্যাচে জ্বলে উঠলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ড্যারেন স্যামি, মুশফিকুর রহিম অবদান রাখলেন ব্যাটিংয়ে। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে বোলিংয়ে আলো ছড়ালেন কাজী অনিক। চিটাগং ভাইকিংসকে হারিয়ে শেষ চারের আশা টিকিয়ে রাখল রাজশাহী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2017, 11:24 AM
Updated : 29 Nov 2017, 12:43 PM

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবারের প্রথম ম্যাচে ৩৩ রানে জেতে স্যামির দল। ১০ ম্যাচে চতুর্থ জয়ে দলটি উঠে এসেছে পাঁচ নম্বরে। সমান ম্যাচে সপ্তম হারে শেষ চারের আশা ভাঙল চিটাগংয়ের। ৫ পয়েন্ট নিয়ে দলটি আছে তলানিতে।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে রাজশাহী। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৪ বল বাকি থাকতে ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম।

শেষ চারে খেলার ক্ষীণ আশাটুকু বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না চিটাগংয়ের। এমন ম্যাচে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি লুক রনকি। ফিরেন দুটি চারে ৮ রান করে।

জ্বলে উঠতে পারেননি সৌম্য সরকার, এনামুল হক, স্টিয়ান ফন সিল, সিকান্দার রাজাদের কেউ।

প্রথম ওভারে ১২ রান দেওয়া মুস্তাফিজ নিজের পরের ওভারে বিদায় করে টুর্নামেন্ট জুড়ে নিজেকে খুঁজে ফেরা সৌম্যকে।

মুস্তাফিজকে ছক্কা-চার হাঁকানো এনামুলকে বিদায় করেন বাঁহাতি পেসার অনিক। গ্লাভস ছুঁয়ে আসা ক্যাচ জমান বদলি উইকেটরক্ষক জাকির হাসান। আঙুলে চোট পেয়ে দ্বিতীয় ওভারে নিয়মিত উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম মাঠ ছাড়লে চলতি আসরে প্রথমবারের মতো উইকেটের পেছনে দাঁড়ান তিনি।

ফন সিল, রাজার ৩২ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে চিটাগং। বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা পাকিস্তানের লেগ স্পিনার মির ফেরান ছন্দে থাকা রাজাকে। ২৯ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া সর্বোচ্চ ২৭ রান করা ফন সিলকে বিদায় করেন অনিক।

যুব দলের বাঁহাতি এই পেসার পরে ফেরান তানবীর হায়দার ও সানজামুল ইসলামকে। মাঝে মুস্তাফিজ এসে বিদায় করেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার রায়াদ এমরিটকে।

চিটাগংয়ের পরের কোনো ব্যাটসম্যান পারেননি প্রতিরোধ গড়তে। ৩২ রানে শেষ ৭ উইকেট হারায় দলটি।

নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৭ রানে ৪ উইকেট নেন ১৯ বছর বয়সী পেসার অনিক। মুস্তাফিজ ২ উইকেট নেন ১৮ রানে।

এর আগে শুরুটা ভালো হয়নি রাজশাহীর। তাসকিন আহমেদকে উড়ানোর চেষ্টায় দ্বিতীয় ওভারে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন মুমিনুল হক। লুইস রিসকে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন জাকির।

ডানা মেলতে পারেননি রাইট। চারটি চার ২৫ রান করা ইংলিশ ওপেনার সানজামুলের বলে ধরা পড়েন সীমানায়।

চার দিয়ে শুরু করা মুশফিক বাঁহাতি স্পিনার সানজামুলকে ছক্কা পর হাঁকান টানা দুই চার। পরের ওভারেই নাঈম হাসানকে উড়ানোর চেষ্টায় ধরা পড়েন লংঅনে। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে অফ স্পিনার পান মুশফিকের উইকেট।

৬৯ রানের জুটিতে দলকে দেড়শ রানে নিয়ে যান স্যামি ও ফ্র্যাঙ্কলিন। যথারীতি এক প্রান্তে ঝড় তুলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার স্যামি। অধিনায়ককে স্ট্রাইক দেওয়ার দিকে ছিল ফ্র্যাঙ্কলিনের মনোযোগ। দুই জনেই ফিরেন ইনিংসের শেষ ওভারে। ২৫ বলে খেলা স্যামির ৪০ রানের ইনিংসে দুটি চারের পাশে ছক্কা তিনটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১৫৭/৬ (মুমিনুল ৭, রাইট ২৫, জাকির ১৭, মুশফিক ৩১, ফ্র্যাঙ্কলিন ৩০, স্যামি ৪০, মির ২*, মিরাজ ০*; রাজা ০/৩, ত্সকিন ১/৩৬, এমরিট ০/২৭, রিস ৩/৩৩, সানজামুল ০/২৬, তানবীর ০/৯, নাঈম ১/৯, সৌম্য ০/১৩)

চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.২ ওভারে ১২৪ (রনকি ৮, সৌম্য ১৩, এনামুল ২৩, ফন সিল ২৭, রাজা ১৭, রিস ৩, তানবীর ১৩, এমরিট ১, সানজামুল ১. নাঈম ২*, তানকিন ১; সামি ১/২৯, মুস্তাফিজ ২/১৮, মিরাজ ০/৩৩, মির ১/১৫, অনিক ৪/১৭, ফ্র্যাঙ্কলিন ০/১০)

ফল: রাজশাহী ৩৩ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ড্যারেন স্যামি