বিপিএলে চট্টগ্রামেসোমবারের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহী কিংসকে ৬৮ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইটানস।
খুলনার রানউৎসবেরশুরু হয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে। তিনে নেমে সেই উৎসবেসামিল আফিফ হোসেন। মাঝে নিকোলাস পুরানের ব্যাটে উঠেছে টর্নোডো। শেষে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটেরতাণ্ডব। ২০ ওভারে খুলনা তোলে ২১৩ রান!
চিটাগং ভাইকিংসের২১১ ছাড়িয়ে এবারের আসরে এটি সর্বোচ্চ দলীয় রান। সব আসর মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
রান তাড়ায়কখনোই জয়ের আশা জাগাতে পারেনি রাজশাহী। শফিউল ইসলামের ৫ উইকেট তাদের থামিয়ে দেয় ১৪৫রানে।
খুলনার তৃপ্তিরম্যাচের সূচনা শান্তর রানে ফেরা দিয়ে। এই ম্যাচের আগে শান্তর ব্যাট ছিল তার নামের মতোই।৭ ইনিংসে রান করেছিলেন মোট ৭৮। ফুরিয়ে আসছিল সুযোগ। অবশেষে শান্তর ব্যাট হলো অশান্ত।
রাইশি রুশোরসঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি যখন জমে ওঠার পথে, পয়েন্ট থেকে জাকির হাসানের সরাসরি থ্রোফেরায় রুশোকে। দ্বিতীয় উইকেটে দুর্দান্ত জুটি গড়েন শান্ত ও আফিফ।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯দলের আগের সহ-অধিনায়ক ও এখনকার সহ-অধিনায়কের ব্যাটে খুলনা এগোয় ঝড়ের গতিতে। মাঠের বাইরেরকাছের বন্ধু মেহেদী হাসান মিরাজকে পেয়ে বসেন শান্ত। মিরাজের পরপর দুই ওভারে মারেন ছক্কা।কেসরিক উইলিয়ামস ও মু্স্তাফিজুর রহমানকে ছক্কায় ওড়ান আফিফ।
বল হাতে পেয়েইএই জুটিকে থামান জেমস ফ্র্যাঙ্কলিন। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ফিফটি থেকে ১ রান দূরে শান্তকে(৩১ বলে ৪৯) ফেরান নিজের প্রথম বলেই।
ওই ওভারে ফ্র্যাঙ্কলিনবোল্ড করে দেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহকেও। কিন্তু দমে যাওয়ার বদলে খুলনাছোটে আরও অপ্রতিরোধ্য গতিতে। ইনিংসে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেন নিকোলাস পুরান।
আফিফ ও পুরানেরধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন রাজশাহীর বোলাররা। দুজন ৮৮ রানের জুটি গড়েনমাত্র ৪৩ বলেই!
৬ চার ও ৩ছক্কায় ২৬ বলে ৫৭ করে পুরান আউট হয়েছেন ফ্র্যাঙ্কলিনের বল আকাশে তুলে। তবে জুটি ভাঙলেওকমেনি খুলনার রানের গতি। কার্লোস ব্র্যাথওয়েট নেমেই কচুকাটা করলেন বোলারদের। ৩টি করেচার ও ছক্কায় করেছেন ১৪ বলে ৩৪।
১২ ওভার শেষেখুলনার রান ছিল ১০০। পরের ৮ ওভারেই এসেছে ১১৩!
রাজশাহীর মোহাম্মদসামি ৪ ওভারে দেন ২২ রান। বাকি সব বোলারই ছিলেন খরুচে। প্রথম ওভারে ৩ রানে ২ উইকেটনেওয়া ফ্র্যাঙ্কলিন পরের ৩ ওভারে গুনেছেন ৪৭ রান।
বোলারদের ব্যর্থতাপুষিয়ে দিতে পারেননি রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরাও। লড়াই থেকে ছিটকে যায় তারা জোড়ায় জোড়ায়উইকেট হারিয়ে।
রান তাড়ারতৃতীয় ওভারেই শফিউলকে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরেন দুই ওপেনার মুমিনুল হক ও লুক রাইট।
দ্বিতীয় উইকেটে৫৫ রানের জুটি গড়েছিলেন রনি তালুকদার ও জাকির হাসান। কিন্তু এই দুজনকে পরপর দুই বলেফেরান আবু জায়েদ চৌধুরী। খানিক পর শফিউল আক্রমণে ফিরে টানা দুই বলে তুলে নেন ড্যারেনস্যামি ও মুশফিকুর রহিমকে।
শেষ দিকে মিরাজের২৩ বলে ২৯ একটু কমিয়েছে ব্যবধান। তার পরও ব্যবধান অনেক বড়।
শেষ উইকেটটিনিয়ে শফিউল পেয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ। ২৬ রানে ৫ উইকেট। বিপিএলেরপাঁচ আসর মিলিয়েই দেশের পেসারদের মধ্যে সেরা বোলিং।
৯ ম্যাচে ১৩পয়েন্ট খুলনার, ঢাকার ১১। সমান ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গতবারের রানার্সআপ রাজশাহী অপেক্ষায়হতাশাময় বিদায়ের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইটানস:২০ ওভারে ২১৩/৫ (শান্ত ৪৯, রুশো ৬, আফিফ ৫৪*, মাহমুদউল্লাহ ১, পুরান ৫৭, ব্র্যাথওয়েট৩৪, আরিফুল ১*; সামি ১/২২, মিরাজ ০/৪২, মুস্তাফিজ ০/৪৮, উইলিয়ামস ০/৪৬, ফ্র্যাঙ্কলিন৩/৫০)।
রাজশাহী কিংস:১৯ ওভারে ১৪৫ (মুমিনুল ১১, রাইট ১, রনি ৩৬, জাকির ১৯, স্যামি ১, মুশফিক ১১, ফ্র্যাঙ্কলিন১৪, মিরাজ ২৯, সামি ১৮, উইলিয়ামস ১, মুস্তাফিজ ০*; আবু জায়েদ ২/৪৮, অ্যাবট ০/২২, শফিউল৫/২৬, আর্চার ১/১৫, ব্র্যাথওয়েট ০/১৭, মাহমুদউল্লাহ ১/৯, আফিফ ১/৯)
ফল: খুলনাটাইটানস ৬৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দাম্যাচ: নিকোলাস পুরান