ক্যারিবিয়ান বাঁহাতি ওপেনার লুইস জ্বলে উঠলে কোনো লক্ষ্যই কঠিন নয়। মাত্র ৩১ বলে তিনটি চার আর ৯টি ছক্কায় ৭৫ রানের টর্নেডো ইনিংসে লুইস গড়ে দিলেন ম্যাচের ভাগ্য।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সোমবারের প্রথম ম্যাচে ঢাকা জিতেছে ৭ উইকেটে। ৯ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে সাকিব আল হাসানের দল আপাতত উঠে এসেছে শীর্ষে। রান রেটে পেছনে ফেলেছে খুলনা টাইটানসকে।
এনামুল-রনকির শতরানের জুটিতে ভর করে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান করে চিটাগং। ৭ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ঢাকা। চলতি আসরে এটাই সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া করে জয়।
বড় রান তাড়ায় শুরুতে শহিদ আফ্রিদিকে হারায় ঢাকা। তাসকিন আহমেদের বলে মিড অফে রনকির দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হন পাকিস্তানি ডানহাতি ওপেনার।
প্রথমবারের মতো বিপিএলে খেলতে নামা জো ডেনলির সঙ্গে লুইসের ১১৮ রানের জুটি দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করায় ঢাকাকে। সানজামুল ইসলামের এক ওভারে চার ছক্কায় ২৬ রান নেওয়ার পথে ২৪ বলে ফিফটিতে পৌঁছান লুইস।
রায়াদ এমরিটের ফুল টস বলে ডিপ কাভারে ক্যাচ দিয়ে থামে লুইস ঝড়। তার ৭৫ রানের ৬৬ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে।
লেগ স্পিনার তানবীর হায়দারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ডেনলি (৩৯ বলে ৪৪)। ৬৭ রানের জুটিতে বাকিটা সারেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও সাকিব।
চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়া অধিনায়ক অপরাজিত থাকেন ২২ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ডেলপোর্ট ২৪ বলে দুটি চার আর তিনটি ছক্কায় অপরাজিত ৪৩ রানে।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সৌম্য সরকারকে হারায় চিটাগং। সুনিল নারাইনের ওপর চড়াও হতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেন বাঁহাতি ওপেনার।
সৌম্যর দ্রুত বিদায়ের কোনো প্রভাব পড়েনি দলের ওপর। লুক রনকি আর এনামুলের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে দ্রুত এগোয় চিটাগং। ম্যাচের প্রথম ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনকে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন অধিনায়ক রনকি। পরে আফ্রিদির ওভারে তুলে নেন চার-ছক্কা।
প্রথম ওভারে আঁটসাঁট বোলিং করা সাকিব পরের ওভারে দেন ২৩ রান। সেই ওভারেই ইনসাইড আউটে ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলেন এনামুল। দুটি ছক্কার মাঝে একটি চার তুলে নেন রনকি।
জুটিতে অগ্রণী ছিলেন চিটাগং অধিনায়ক। ফিফটিতে পৌঁছান তিনিই আগে। বিদায়ও নেন আগে। রনকির ৪০ বলে খেলা ৫৯ রানের ইনিংসটি গড়া চারটি করে ছক্কা-চারে। খরুচে বোলিংয়ের দিনে তাকে ফিরিয়ে একমাত্র সাফল্যটি পান সাকিব।
৬৫ বলে ১০৭ রানের জুটি ভেঙে রনকি ফেরার আগেই আফ্রিদিকে লংঅন দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটিতে পৌঁছান এনামুল। তার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরেন স্টিয়ান ফন সিল। দ্রুত ২ উইকেট হারানোয় কিছুটা কমে রানের গতি।
একটি করে ছক্কা চারে ১৬ রান করে ফিরেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। ১১ বলে চারটি চারে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন সিকান্দার রাজা।
নারাইন ছাড়া বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেননি ঢাকার কেউই। সবচেয়ে খরুচে ছিলেন সাকিব। বাঁহাতি স্পিনার ৪ ওভারে দেন ৫১ রান। অফ স্পিনার নারাইন ৪ ওভারে দেন মাত্র ১১ রান।
বোলিং, ফিল্ডিংয়ে বাজে দিনে ব্যাটিং বাঁচিয়েছে সাকিবদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৮৭/৫ (রনকি ৫৯, সৌম্য ১, এনামুল ৭৩, ফন সিল ২, নাজিবুল্লাহ ১৬, রাজা ২৬*, এমরিট ১*; মোসাদ্দেক ০/৯, সাকিব ১/৫১, নারাইন ১/১১, আফ্রিদি ০/২৯, হায়দার ১/৩৫, সাদ্দাম ০/২২, শহীদ ১/২৮)
ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৮.৫ ওভারে ১৯১/৩ (লুইস ৭৫, আফ্রিদি ০, ডেনলি ৪৪, সাকিব ২২, ডেলপোর্ট ৪৩*; তাসকিন ১/৩৫, রাজা ০/৩৭, আল আমিন জুনিয়র ০/১৯, এমরিট ১/২৪, সৌম্য ০/৩০, সানজামুল ০/২৬, তানবীর ১/১৮)
ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৭ উইকেটে জয়ী