স্মিথ-বীরত্বের পর হেইজেলউডের ছোবল

এক সেশনে মাত্র ১৭ রান। নব্বই থেকে শতরান ছুঁতেই সময় লাগল ঘণ্টাখানেক। ধৈর্য, দৃঢ়প্রতিজ্ঞা, সহজাত ব্যাটিংয়ের সঙ্গে আপোস, সাহসিকতা আর স্কিলের প্রদর্শনী। অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে অ্যাশেজের শুরুর টেস্ট রাঙালেন স্টিভেন স্মিথ। অধিনায়কের ব্যাটে প্রথম ইনিংস অস্ট্রেলিয়া পেল ছোট্ট লিড। সেই লিড ছাড়ানোর আগেই ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে ছোবল দিলেন জশ হেইজেলউড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2017, 09:10 AM
Updated : 25 Nov 2017, 09:10 AM

ব্রিজবেন টেস্টের তৃতীয় দিনে শনিবার ৩২৮ রানে অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড দিন শেষ করেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ৩৩ রান নিয়ে।

১৪১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন স্মিথ। মাত্র ৫৭ টেস্টেই করে ফেললেন ২১ সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের মন্থরতম সেঞ্চুরি, কিন্তু নি:সন্দেহে সেরা সেঞ্চুরিগুলোর একটি।

স্মিথ দিন শুরু করেছিলেন ৬৪ রান নিয়ে। সঙ্গী শন মার্শ ফেরার টেস্টে করে ফেলেন হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু এরপরই পথ হারায় অস্ট্রেলিয়া।

স্টুয়ার্ট ব্রডের স্লোয়ারে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৪১ বলে ৫১ রান করা মার্শ। দ্বিতীয় নতুন বলের প্রথম ওভারেই জেমস অ্যান্ডারসনের দারুণ এক ডেলিভারি ফেরায় টিম পেইনকে। ব্রডকে ছক্কা মারলেও দুই বল পর ফিরতি ক্যাচ দেন মিচেল স্টার্ক। অস্ট্রেলিয়া তখন ৭ উইকেটে ২০৯।

অস্ট্রেলিয়ার লিড তখন অনেক দূরের পথ। কিন্তু অধিনায়কের ব্যাটে সেই বন্ধুর পথ পাড়ি দেয় দল। স্মিথকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন প্যাট কামিন্স।

ইংলিশ বোলাররা এদিন প্রথম ঘণ্টাতেই ১৪টি বাউন্সার ছুঁড়েছে স্মিথকে। দারুণ লাইন-লেংথেও পরীক্ষা নিয়েছে স্মিথের। সেই পরীক্ষায় দারুণ দক্ষতায় উতরে যান সময়ের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান।

ড্রাইভ খেলতে গিয়ে মার্শ আউট হওয়ার পর ড্রাইভ খেলা প্রায় ছেড়েই দেন স্মিথ। ছেড়েছেন আর ঠেকিয়েছেন বলের পর বল। নেননি বিন্দুমাত্র ঝুঁকি। প্রথম সেশনে ৭২ বল খেলে করেন মাত্র ১৭ রান।

নব্বই ছোঁয়ার পর নার্ভাস না হয়ে বরং ছিলেন আরও আঁটসাঁট। কাটিয়ে দেন প্রায় ১ ঘণ্টা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ড্রাইভ খেলেই ছুঁয়েছেন তিন অঙ্ক। স্টুয়ার্ট ব্রডকে কাভার ড্রাইভে চার মেরে সেঞ্চুরি করেই মাতেন উদযাপনে।

৪১৫ মিনিটে ২৬১ বলে মাত্র ৯টি বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি। তার আগের মন্থরতম সেঞ্চুরি ছিল ২২৭ বলে।

অষ্টম উইকেটে স্মিথ ও কামিন্স গড়েন ৬৬ রানের জুটি। কামিন্সের লড়াই শেষ হয়েছে ৪২ রানে। এরপর হেইজেলউড ও লায়নকে নিয়ে শেষ দুই জুটিতে আরও ৫৩ রান তোলেন স্মিথ।

শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অলআউট হলেও স্মিথকে আউট করতে পারেনি ইংল্যান্ড। সাড়ে ৮ ঘণ্টা উইকেটে থেকে ৩২৬ বলে অপরাজিত ১৪১।

অধিনায়কের পারফরম্যান্সে উজ্জীবিত অস্ট্রেলিয়ানরা বোলিংয়ে চেপে ধরে ইংলিশদের। প্রথম ইনিংসে তুলনামূলক বিবর্ণ হেইজেলউড এবার সবচেয়ে উজ্জ্বল। ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ অ্যালেস্টার কুক ও প্রথম ইনিংসের নায়ক জেমস ভিন্সকে।

মার্ক স্টোনম্যান ও জো রুট শেষ সময়টুকু কাটিয়ে দেন কোনোরকমে। তবে চতুর্থ দিন সকালেও তাদের পরীক্ষা তেতে থাকা অস্ট্রেলিয়ানদের সামনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০২

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ১৩০.৩ ওভারে ৩২৮ (আগের দিন ১৬৫/৪) (স্মিথ ১৪১*, মার্শ ৫১, পেইন ১৩, স্টার্ক ৬, কামিন্স ৪২, হেইজেলউড ৬, লায়ন ৯; অ্যান্ডারসন ২/৫০, ব্রড ৩/৪৯, মইন ২/৭৪, ওকস ১/৬৭, বল ১/৭৭, রুট ১/১০)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১৬ ওভারে ৩৩/২ (কুক ৭, স্টোনম্যান ১৯*, ভিন্স ২, রুট ৫*; স্টার্ক ০/১৪, হেইজেলউড ২/১১, কামিন্স ০/১, লায়ন ০/৭)।