‘গ্যাম্বলিং’ করে সফল জহুরুল

বাউন্ডারি একটি তখন চাই-ই চাই। কিন্তু কাজটা কঠিন। ফিল্ডিং ছড়ানো। কার্লোস ব্র্যাথওয়েট করছিলেন নিখুঁত সব ফুল লেংথ বল। যেগুলো উড়িয়ে মারা কঠিন। জহুরুল ইসলাম ঠিক করলেন, খেলবেন এমন এক শট, যেটি ম্যাচে খেলেননি আগে কোনোদিন। তার নিজের ভাষায়, ‘গ্যাম্বলিং’।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2017, 12:11 PM
Updated : 14 Nov 2017, 12:11 PM

সেই গ্যাম্বলিং হলো, রিভার্স স্কুপ শট। জহুরুল খেললেন, জহুরুল পারলেন। খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ঢাকা ডায়নামাইটসের রোমাঞ্চকর জয়ে অন্যতম নায়ক জহুরুল। ১৫৭ রান তাড়ায় ১০ ওভার শেষে ঢাকার রান ছিল ৫ উইকেটে ৪৮। সেখান থেকে ৬ ছক্কায় কাইরন পোলার্ডের ২৪ বলে ৫৫ রান ম্যাচে ফেরায় ঢাকাকে। আর এক পাশ আগলে রাখা জহুরুল মেটান শেষের দাবি।

পোলার্ড টর্নেডো চালালেও ৩৯ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত ইনিংসে দলকে জিতিয়ে ফেরে ম্যাচের সেরা জহুরুল।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ৬ রান। কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের প্রথম দুই বলেই রান নিতে পারেননি জহুরুল। পরের দুই বলে আসে দুটি সিঙ্গেল। ২ বলে যখন প্রয়োজন ৪ রান, ব্র্যাথওয়েটের ফুল লেংথ বলটিতে রিভার্স স্কুপ করে দারুণ চার মারেন জহুরুল।

ম্যাচ শেষে জহুরুলের সরল স্বীকারোক্তি, ম্যাচটি কঠিন কর ফেলেছিলেন তিনিই। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করতেই ভাবলেন জুয়া খেলার কথা। শোনালেন সেই শটের প্রেক্ষাপট।

“প্রথম দুটি বল আমি স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে নরম্যালি একটু দ্রুতগতির এবং ইয়র্কারগুলো প্রায় নিখুঁত। চার মারার চিন্তা আমার ভুল ছিল। যদি এক রানের চিন্তা করতাম, তাহলে ব্যাটে লাগত। ম্যাচটায় আমি দলকে বিপদে ফেলে দিয়েছিলাম।”

“পরে চিন্তা করেছি, যেহেতু দুটি বলে ইয়র্কার করে সফল হয়েছে, আবারও ইয়র্কার করবে। আমি তাই গ্যাম্বলিংয়ের মত চিন্তা করলাম যে থার্ডম্যান যেহেতু ওপরে, সেদিক দিয়ে উল্টো স্কুপ করব। আগে এটা কোনোদিন খেলিনি ম্যাচে। অনুশীলনে চেষ্টা করি। ম্যাচে এটিই প্রথম।”

এদিন রানের খাতা খুলেছিলেন জহুরুল স্কুপ খেলেই। তবে ব্র্যাথওয়েটের বলেই সেটি ছিল প্রথাগত স্কুপ। রিভার্স স্কুপ ম্যাচে খেললেন এই প্রথম। সেটিই তাকে ভাসাল সাফল্যের আনন্দে।

“ব্রাথওয়েট যে ইয়র্কারগুলো মারছিল, আমি যদি মিড অফ, মিড অনে খেলার চেষ্টা করতাম, আমার জন্য খুবই কঠিন এখান থেকে চার বের করা। আলাদা কিছু করতেই হতো আমাকে। এটা চেষ্টা করা ছাড়া আমার মাথায় অন্য কিছু আসেনি। সফল হয়েছি, ভালো লাগছে।”

সেই ভালো লাগার প্রকাশ ছিল তার উদযাপনেও। চারটি মেরে ম্যাচ জিতে বেশ খ্যাপাটে উদযাপন করেছেন। এমনিতে শান্ত, ধীর-স্থির চরিত্রের জহুরুলের এমন উদযাপন আগে দেখা গেছে কমই। এমন রোমাঞ্চকর জয়ের মাহাত্মটিই এমন যে জহুরুলও ছিলেন বাঁধনহারা।