মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে জিতেছে কুমিল্লা। তিন ম্যাচে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। চার ম্যাচে এটি রাজশাহীর তৃতীয় পরাজয়।
লেগ স্পিনার রশিদ আর অফ স্পিনার নবি মিলে ৮ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। দুই জনে মিলে ডট বল করেন ৩২টি। তাদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের দিনে ৭ উইকেটে ১১৫ রান করে রাজশাহী। জবাবে জস বাটলারের অপরাজিত ফিফটিতে ২৯ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কুমিল্লা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত মুমিনুল হক ও রনি তালুকদারকে হারানো রাজশাহীকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন লেন্ডল সিমন্স। তার ব্যাটে প্রতি ওভারেই আসছিল বাউন্ডারি। উইকেট পতনের মধ্যেও সচল ছিল রানের চাকা।
ষষ্ঠ ওভারে আরাফাত সানিকে টানা তিনটি চার হাঁকিয়ে একটি সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান সিমন্স। সে সময়ে দলের স্কোর ছিল ৪৮/২।
রান পূর্ণ করার পর মাটিতে শুয়ে পড়েন ডানহাতি উদ্বোধনী করেন। স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সিমন্স মাঠ ছাড়ার পর কমতে শুরু করে রানের গতি। সেখান থেকে দলকে বের করে আনতে পারেননি কেউই।
প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের মধ্যে সিমন্স ছাড়া দুই অঙ্কে যান কেবল মুশফিকুর রহিম। টার্নের বিরুদ্ধে রশিদকে খেলতে গিয়ে বাটলারকে সহজ ক্যাচ দেন অধিনায়ক।
শেষের দিকে পুরো ২০ ওভার খেলার দিকে ছিল রাজশাহীর ব্যাটসম্যানদের মনোযোগ। ফরহাদ রেজা ও মোহাম্মদ সামির চেষ্টায় একশ ছাড়ায় দলটির সংগ্রহ।
কুমিল্লার স্পিনারদের একেবারেই খেলতে পারছিলেন না ব্যাটসম্যানরা। সবচেয়ে দুর্বোধ্য ছিলেন রশিদ। ১৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনার ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। বিপিএলে ৪ ওভার বল করে এর চেয়ে কম রান দেওয়ার নজির আছে মাত্র একটি।
তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে কুমিল্লাকে নেতৃত্ব দেওয়া নবি ১৫ রানে নেন ৩ উইকেট।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় পাগলাটে শুরু করেন লিটন দাস। ফিরতে পারতেন প্রথম ওভারে। উইকেট-মেইডেন পেতে পারতেন সামি। ওভারের শেষ বলে মিড অন থেকে পিছিয়ে গিয়ে ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি ফ্র্যাঙ্কলিন।
বেশি আক্রমণ করার মাশুল দেন ওভারের শেষ বলে। জায়গা করে নিয়ে খেলতে হয়ে ফিরেন বোল্ড হয়ে। এরপর আর উইকেটের দেখা পায়নি গতবারের রানার্সআপরা।
ওপেনার বাটলার আর তিন নম্বরে নামা ইমরুল কায়েস ছিলেন সঠিক বলের অপেক্ষায়।
স্কোর বোর্ডে রানের কোনো চাপ ছিল না। উইকেটের আচরণ বুঝে তারা খেলেন ঝুঁকিহীন ক্রিকেট। অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেটে দুই জনে গড়েন ৯৭ রানের জুটি।
৩৯ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কায় ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন বাটলার। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা ইমরুল ৪১ বলে করেন ৪৪ রান। ওই ছক্কার পাশে তার ইনিংসে চার চারটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১১৫/৭ (সিমন্স ৪০* আহত অবসর, মুমিনুল ২, রনি ০, মুশফিক ১৬, ফ্র্যাঙ্কলিন ৭, মিরাজ ৬, ওয়ালার ১, রেজা ২৫*, নিহাদ ১, সামি ১০*; সানি ০/২২, নবি ৩/১৫, আল আমিন ১/২৪, রশিদ ১/৭, ব্রাভো ১/২৮, সাইফ ০/১৮)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৫.১ ওভারে ১২০/১ (লিটন ২৩, বাটলার ৫০*, ইমরুল ৪৪*; সামি ০/১৩, রেজা ১/৩১, মিরাজ ০/১৩, উইলিয়ামস ০/৩৩, ফ্র্যাঙ্কলিন ০/৮, নিহাদ ০/১৬, ওয়ালার ০/৬)
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৯ উইকেটে জয়ী