আরিফুল ঝড়ের পর জায়েদের তোপ

আরিফুল হক আর কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের শেষের ঝড়টাই গড়ে দিল পার্থক্য। খুলনা টাইটান্সের বড় সংগ্রহের নাগাল পেল না চিটাগং ভাইকিংস। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখলেন তরুণ পেসার আবু জায়েদ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2017, 10:58 AM
Updated : 12 Nov 2017, 01:35 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের প্রথম ম্যাচে চিটাগংকে ১৮ রানে হারিয়েছে খুলনা। ১৭০ রানের জবাবে মিসবাহ-উল-হকের দল করে ১৫২ রান।

শেষ ১০ ওভারে ১০২ রান সংগ্রহ করে খুলনা। তার ৬৯ রানই আসে শেষ ৫ ওভারে। সে সময়ে ক্রিজে ঝড় তুলেন আরিফুল-ব্র্যাথওয়েট।

ইনিংসের কোনো পর্যায়ে তেমন ঝড় তুলতে পারেনি চিটাগং। বিশাল রান তাড়ায় তারা অনেকটা নির্ভর করেছিল টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের দিকে। সবচেয়ে বেশি হতাশ করেছেন তারাই।

প্রথম ওভারেই পরপর দুই বলে দুই ওপেনার লুক রনকি ও সৌম্য সরকারকে ফিরিয়ে দেন পেসার জায়েদ। তাকে উড়ানোর চেষ্টায় মিড অনে ধরা পড়েন রনকি। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে ডিপ মিডউইকেট ক্যাচ দেন সৌম্য।

পরের ওভারে ফিরে একটি করে ছক্কা-চারে ১০ রান করা দিলশান মুনাবিরার উইকেট তুলে নেন জায়েদ। ব্র্যাথওয়েটকে উড়ানোর চেষ্টায় মিড অফে ক্যাচ দিয়ে দলের বিপদ আরও বাড়ান এনামুল হক।

৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া চিটাগং প্রতিরোধ গড়ে মিসবাহ-উল-হক ও সিকান্দার রাজার ব্যাটে। দুই জনে দলকে নিয়ে যান একশ রানের কাছাকাছি। রাজাকে বোল্ড করে ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন শফিউল ইসলাম। বোলিংয়ে ফিরে মিসবাহকে ফিরিয়ে দেন জায়েদ।

শেষটায় লুইস রিস, তানবীর হায়দারের ব্যাটে পরাজয়ের ব্যবধান কমায় চিটাগং।

৩৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার জায়েদ। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পেলেন চার উইকেট। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন শফিউল।

এর আগে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনারও। ম্যাচের প্রথম ওভারে চ্যাডউইক ওয়ালটনকে ফিরিয়ে দেন সানজামুল ইসলাম। পরের ওভারে ফিরে বাঁহাতি স্পিনার তুলে নেন মাইকেল ক্লিঙ্গারের উইকেট। মুনাবিরাকে চার হাঁকিয়ে পরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

২৯ রানে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারানো খুলনা প্রতিরোধ গড়ে রাইলি রুশো ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন অধিনায়ক। রুশো খুব একটা স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।

তাসকিন আহমেদের বলে একবার জীবন পেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি রুশো। ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েও ফিল্ডারের ব্যর্থতায় পেয়ে যান ছক্কা। সেই ওভারেই একই চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েন সৌম্যর হাতে।

দুটি করে ছক্কা-চারে ৪০ রান করা মাহমুদউল্লাহকেও বিদায় করেন তাসকিন।

ব্র্যাথওয়েট নামার পর রানের গতি বাড়ে খুলনার। শেষ ৫ ওভারে দলটির ৬৯ রান যোগ করায় দারুণ অবদান ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের। মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করা বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ১৪ বলে খেলেন ৩০ রানের কার্যকর ইনিংস।

শুরুতে বলে বলে রানের দিকে মনোযোগী ছিলেন আরিফুল। তানবীরের ওপর চড়াও হওয়ার আগে ১৬ বলে তার রান ছিল ১৪। লেগ স্পিনারের সেই ওভারে দুটি করে ছক্কা-চারে তুলে নেন ২৪ রান।

২৫ বলে একটি চার আর চারটি ছক্কায় ৪০ রান করা আরিফুলকে ইনিংসের শেষ বলে ফেরান তাসকিন। ডানহাতি এই পেসার ৪৩ রানে নেন ৩ উইকেট। সানজামুল ২ উইকেট নেন ২০ রানে। তানবীর ৪৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য।

চিটাগংকে হারিয়ে তিন ম্যাচে টানা দ্বিতীয় জয় পেল খুলনা। অন্য দিকে তিন ম্যাচে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পেল চিটাগং।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইটান্স: ২০ ওভারে ১৭০/৭ (ওয়ালটন ৫, শান্ত ৯, ক্লিঙ্গার ২, রুশো ২৫, মাহমুদউল্লাহ ৪০, আরিফুল ৪০, ব্র্যাথওয়েট ৩০, আর্চার ১১*; সানজামুল ২/২০, রাজা ০/১৭, মুনাবিরা ১/১৬, শুভাশিস ১/২১, তাসকিন ৩/৪৩, তানবীর ০/৪৪, রিস ০/৯)

চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৫২/৭ (রনকি ২, সৌম্য ০, এনামুল ১৮, মুনাবিরা ১০, মিসবাহ ৩০, রাজা ৩৭, রিস ২২, তানবীর ১৪*, সানজামুল ৫*; জায়েদ ৪/৩৫, আর্চার ১/৩০, শফিউল ১/২৪, ব্র্যাথওয়েট ১/২৯, মোশাররফ ০/২২, মাহমুদউল্লাহ ০/৬)

ফল: খুলনা টাইটান্স ১৮ রানে জয়ী