এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা চিটাগং ভাইকিংসকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দ্বিতীয় ম্যাচে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা পেয়েছে প্রথম জয়।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার চিটাগংয়ের ১৪৩ রান তাড়ায় ১৬ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় কুমিল্লা।
২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার ম্যাচে ফেরার মূল নায়ক সাইফ উদ্দিন। পরে জস বাটলার ও মারলন স্যামুয়েলসের দারুণ ব্যাটিংয়ে জিততে কোনো সমস্যাই হয়নি কুমিল্লার।
রান তাড়ায় কুমিল্লা শুরু করে ঝড়ের গতিতে। লিটনের সঙ্গে বাটলারের নতুন উদ্বোধনী জুটি ৪ ওভারেই তোলে ৪২ রান।
১৩ বলে ২৩ রান করে লিটন আউট হয়ে গেলেও বাটলার চালিয়ে যান। আরেক পাশে সঙ্গ দেন তিনে নামা ইমরুল কায়েস। এই জুটিই কুমিল্লাকে এগিয়ে নেয় জয়ের কাছে।
এই উইকেটের পতনে চিটাগংয়ের বিপদ যেন বাড়ল আরও। চারে নেমে ধুন্দুমার ব্যাটিংয়ে দ্রুতই ম্যাচ শেষ করে দিলেন মারলন স্যামুয়েলস। অনেক পরে নেমেও ছাড়িয়ে যান ইমরুলকে।
১৮ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন স্যামুয়েলস। চারটি চারের সঙ্গে তাসকিনকে মেরেছেন বিশাল ছক্কা। ৩১ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত ইমরুল।
অথচ এত বাজে ভাবে হেরে যাওয়া চিটাগয়ের শুরুটা ছিল বিধ্বংসী। লুক রনকি ও সৌম্য সরকার শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী।
৯ রানে অলক কাপালির হাতে জীবন পাওয়ার পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন রনকি। আরাফাত সানিকে বেরিয়ে এসে মারেন ছক্কা। ওই ওভারেই রিভার্স সুইপে বল গ্যালারিতে পাঠান সৌম্য।
পেস আক্রমণে এনেও রানের গতি বাগে আনা যায়নি। আল আমিনকে টানা দুই বলে চার মারেন রনকি। ডোয়াইন ব্রাভোর প্রথম ওভারে টানা দুটি ছক্কা!
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান ছিল ১ উইকেটে ৬৩। তিনে নেমে দিলশান মুনাবিরা নবিকে ওড়ান ছক্কায়। বড় স্কোরের হাতছানি দলের সামনে। কিন্তু ক্রমেই সেই হাতছানি গেল মিলিয়ে।
হঠাৎ করেই যেন ঠিকঠাক টাইমিং করতে ভুলে গেলেন সৌম্য ও মুনাবিরা। রানের গতি গেল প্রায় থমকে। সেটির বলি হলেন একের পর এক ব্যাটসম্যান।
ব্রাভোর স্লোয়ারে স্কুপ করে সহজ ক্যাচ তুলে দিলেন মুনাবিরা। রানের জন্য ছটফট করতে করতে সাইফ উদ্দিনকে প্যাডল করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন সৌম্য। ঝড়ো শুরুর পরও করেছেন ৩৩ বলে ৩৮।
এক বল পরই আরেকটি ধাক্কা। এবার সাইফ উদ্দিনের বলকে সোজা লং অনে তুলে দিলেন এনামুল হক (৬ বলে ৩)।
প্রথম ১০ ওভারে যে দলের রান ছিল ১ উইকেটে ৯১, শেষ ১০ ওভারে তারা তুলতে পারে মোটে ৫২ রান।
প্রথম ওভারে ১৫ রান গোণার পর দারুণ ভাবে ফিরে ২৯ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন ব্রাভো। ৪ ওভারে ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার সাইফ উদ্দিন।
বাটলার-স্যামুয়েলসদের ঝড়ের পরও ম্যাচের সেরা এই তরুণ অলরাউন্ডারই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৪৩/৭ (রনকি ৪০, সৌম্য ৩৮, মুনাবিরা ২১, এনামুল ৩, মিসবাহ ৬, রিস ৯, রাজা ১৮*, শুভ ৩, সানজামুল ১*; সানি ০/১৯, আল আমিন ১/২৮, ব্রাভো ২/২৯, নবি ১/১৮, রশিদ ০/২১, সাইফ ৩/২৪)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৭.২ ওভারে ১৪৪/২(লিটন ২৩, বাটলার ৪৮, ইমরুল ৩৩*, স্যামুয়েলস ৩৫*; সানজামুল ০/২৭, শুভ ০/২৯, তাসকিন ০/৩৬, শুভাশিস ২/২৪, রাজা ০/১৭, রিস ০/১০)।
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন