ঢাকার রান পাহাড়ে চাপা পড়ল খুলনা

প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটস হেরেছিল মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতায়। বিস্ফোরক সব নাম ছিল একদমই চুপসে। হারের ঘা হয়তো জাগিয়ে দিল তাদের। দ্বিতীয় ম্যাচেই বারুদের বাক্সে বিস্ফোরণ। রানের পাহাড় গড়ল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা, যার কোনো জবাবই খুঁজে পেল না খুলনা টাইটানস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Nov 2017, 05:06 PM
Updated : 5 Nov 2017, 05:43 PM

বিপিএলে প্রথম ম্যাচের হারের ধাক্কা পেছনে ফেলে দাপটের সঙ্গে জয়ে ফিরেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার খুলনা টাইটানসকে হারিয়েছে ৬৫ রানে। 

এভিন লুইস ও ক্যামেরন ডেলপোর্টের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ২০২ রান তোলে ঢাকা। এই মৌসুমের এটি প্রথম দুইশ রানের ইনিংস। রান তাড়ার শুরু থেকেই পথ হারানো খুলনা গুটিয়ে যায় ১৩৭ রানে।

টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া ঢাকা প্রথম ৩ ওভারে তুলেছিল ২২ রান। চতুর্থ ওভারে শফিউলকে পরপর তিন বলে এক ছক্কা, দুই চার মারেন কুমার সাঙ্গাকারা। ১১ বলে ২০ করে সেই ওভারেই আউট হন সাঙ্গাকারা।

তবে সেই যে ঝড়ের শুরু, সেটি আরও প্রবল হয় লুইস ও ডেলপোর্টের ব্যাটে। চার-ছক্কা এসেছে প্রতি ওভারেই। ৯.১ ওভারে দলের রান স্পর্শ করে শতরান।

ঝড়ের গতি থামেনি এরপরও। সবচেয়ে বেশি তাণ্ডবের শিকার হন মোশাররফ হোসেন রুবেল। বাঁহাতি এই স্পিনারের একমাত্র ওভারে ডেলপোর্টের দুটি ছক্কা একটি চারসহ রান আসে ২১।

শফিউলের করা পরের ওভারে লুইসের ব্যাট থেকে আসে চার ও ছক্কা। শেষ পর্যন্ত এই জুটির তাণ্ডব থেমেছে ওই ওভারেই। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৪০ বলে ৬৩ করে আউট হন লুইস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১১৩ রান আসে ৫৪ বলে।

ডেলপোর্ট ছিলেন আরও বেশি খুনে মেজাজে। ২১ বলে করেন পঞ্চাশ, যা এবারের আসরে এখনও পর্যন্ত দ্রুততম ফিফটি। তবে সঙ্গীকে হারানোর খানিক পর তিনিও বিদায় নেন। ৫ ছক্কায় ৩১ বলে করেন ৬৪। যদিও টিভি রিপ্লতে দেখা গেছে, এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্তটি ছিল বড় ভুল।

এই জুটি ভাঙার পর একটু কমে রানের গতি। সুবিধা করতে পারেননি পোলার্ড-সাকিবরা। তবে শেষ দিকে সুনিল নারাইনের দুটি ছক্কায় ঠিকই দুইশর ঠিকানায় পৌঁছে যায় ঢাকা।

বিপিএলে এটি অষ্টম দুইশ রানের স্কোর। ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজিই করল পাঁচবার! ২০১৩ আসরে ঢাকার ২১৭ রান এখনও বিপিএলের রেকর্ড।

রান তাড়ায় ন্যূনতম চ্যালেঞ্জটুকুও জানাতে পারেনি খুলনা। ওপেনিং নাজমুল হোসেন শান্ত পারেনি অশান্ত হতে। ছোট্ট ঝড় তুলে বিদায় নিয়েছেন চাডউইক ওয়ালটন (১৩ বলে ৩০)।

আবু হায়দার রনির অসাধারণ ফিরতি ক্যাচে ফিরেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। বড় ভরসা রাইলি রুশো ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু বোল্ড হয়েছেন ১৪ বলে ২৩ রানে।

ম্যাচ কার্যত শেষ হয়ে যায় শেষের বেশ আগেই। বাকি সময়টুকুতে আলো ছড়ান সৈয়দ খালেদ আহমেদ। সিলেটেরই সন্তান এই মিডিয়াম পেসার খেলছেন ঢাকার হয়ে। অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রথম বলেই বোল্ড করে দেন আরিফুল হককে। পরে ফেরান আকিলা দনঞ্জয়াকেও।

শেষ দিকে ২৪ বলে ৩৬ করে নিজেকে খানিকটা চেনান প্রায় অচেনা জোফ্রা আর্চার। তাতে একটু বেড়েছে ম্যাচের দৈর্ঘ্য, একটু কমেছে ব্যবধান। এরপরও সেই ব্যবধান অনেক বড়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ডাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ২০২/৭ (সাঙ্গাকারা ২০, লুইস ৬৬, ডেলপোর্ট ৬৪, পোলার্ড ৫, সাকিব ১, নারাইন ১৬, মোসাদ্দেক ১০*, জহুরুল ৩, আবু হায়দার ২*; দনঞ্জয়া ০/৩০, আবু জায়েদ ২/২৯, শফিউল ২/৪১, আর্চার ১/৩৪, মাহমুদউল্লাহ ০/১১, ব্র্যাথওয়েট ১/৩৪, মোশাররফ ০/২১)।

খুলনা টাইটানস: ১৮.১ ওভারে ১৩৭ (ওয়ালটন ৩০, শান্ত ৫, ব্র্যাথওয়েট ০, রুশো ২৩, মাহমুদউল্লাহ ৪, আরিফুল ৫, আর্চার ৩৬, দনঞ্জয়া ৭, মোশাররফ ১৭, শফিউল , আবু জায়েদ ১*; শহিদ ১/১৭, আবু হায়দার ৩/১৩, সাকিব ২/২৫, নারাইন ২/৩২, খালেদ ২/৩৪, পোলার্ড ০/১৪)

ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৬৫ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্যামেরন ডেলপোর্ট