মিঠুন-বোপারার ব্যাটে রংপুরের জয়ে শুরু

কেসরিক উইলিয়ামসের শর্ট বলে কাট করলেন মোহাম্মদ মিঠুন। কাভারে ডান দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে অসাধারণ ক্যাচ নিলেন লুক রাইট। খানিকপর রবি বোপারার ব্যাট থেকে বল গেল পয়েন্টে। সহজ ক্যাচ। এবার ছেড়ে দিলেন সেই রাইটই! তার দুর্দান্ত ক্যাচে জেগেছিল রাজশাহীর কিংসের আশা। তার ক্যাচ মিসেই আশার শেষ। বর্তমান রানার্সআপদের হারিয়ে রংপুর রাইডার্স শুরু করল জয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2017, 05:21 PM
Updated : 4 Nov 2017, 05:21 PM

মিঠুনের দারুণ ইনিংসে রংপুর এগিয়েছে জয়ের দিকে। বোপারার ইনিংসে জয়ের ঠিকানায়। বিপিএলের প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহীকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শনিবার রাজশাহীর ১৫৪ রান রংপুর পেরিয়ে যায় ৭ বল বাকি রেখে।

রাজশাহীর শুরুটা ছিল মুমিনুল হককে হারিয়ে। দ্বিতীয় ওভারে সোহাগ গাজীকে বারবার সুইপ খেলার চেষ্টায় আউট হন ৭ বলে ৯ রানে।

রংপুরের ভালো বোলিংয়ে শুরুতে বাউন্ডারির সুযোগ খুব একটা পাচ্ছিলেন না লুক রাইট ও রনি তালুকদার। ৫ ওভারে রান ছিল ২৯।

ষষ্ঠ ওভারে লাসিথ মালিঙ্গাকে পেয়ে বসেন রনি। দুটি চারের পর চোখধাঁধানো ফ্লিকে মারেন ছক্কা। রান বাড়ানোর কাজটি করতে থাকেন রনিই। পুল করে ছক্কা মারেন থিসারা পেরেরাকে।

রংপুর উইকেট পায় আরেক প্রান্তে। স্ট্রাইক বেশি না পেয়ে হয়ত অধৈর্য হয়ে উঠেছিলেন রাইট। আউট হন নাজমুল অপুকে তুলে মারতে গিয়ে। নবম ওভারে আউট হওয়া ইংলিশ ব্যাটসম্যান খেলতে পারেন মাত্র ১৪ বল।

বোলিংয়ে রংপুরের সেরা সময়টি আসে এরপরই। সুইচ হিট খেলে সোজা ফিল্ডারের হাতে তুলে দেন মুশফিকুর রহিম। সামিত প্যাটেলকে এলবিডব্লিউ করে দেন মালিঙ্গা। বাজে বলে জেমস ফ্রাঙ্কলিনের কাছে ছক্কা হজম করার পর মাশরাফি বোল্ড করে দেন রনিকে।

টি-টোয়েন্টিতে প্রথম হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও পাননি রনি। ৩৮ বলে করেছেন ৪৭।

রাজশাহীকে অল্পতে বেঁধে রাখার আয়োজন করে ফেলেছিল রংপুর। শেষে গিয়ে গড়বড় করে বসেন রুবেল।

১৮তম ওভারে দারুণ দুটি ইয়র্কারে শুরু করলেও পরের দুটিই করেন ফুল টস। ড্যারেন স্যামি দুটিতেই মারেন ছক্কা।

১৮ বলে ২৯ রান করা স্যামিকে ফেরান মালিঙ্গা। কিন্তু শেষ দিকে ৫ বলে ১৫ রানের দারুণ এক কার্যকর ইনিংস খেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রাজশাহী পেরিয়ে যায় দেড়শ।

ইনিংসে দ্বিতীয় ওভারে ৫ রানে ১ উইকেট নেওয়ার পর আর বোলিং পাননি সোহাগ গাজী। মৌসুমের প্রথম মেডেনসহ ৪ ওভারে ১৪ ডট বলে ১৮ রানে ১ উইকেট মাশরাফির। বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল অপু ২০ রানে দুটি। কিন্তু রুবেলের শেষ ২ ওভার থেকেই আসে ৩২ রান।

ব্যাটিংয়ের শেষের মত বোলিংয়ের শুরুটাও মিরাজের হাত ধরে দারুণ করে রাজশাহী। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দেন ইংলিশ ওপেনার অ্যাডাম লাইথকে। আরেক ওপেনার জনসন চার্লস ফেরেন ১১ বলে ৯ রান করে।

তৃতীয় উইকেটে মিঠুন ও শাহরিয়ার নাফিসের জুটির শুরুটা ছিল ধীরে। ৮ ওভারে দলের রান ছিল ৪৪। মিরাজকে বিশাল দুটি ছক্কায় হাত খোলেন মিঠুন। দারুণ কয়েকটি শট খেলেন পরেও। রংপুর ফেরে জয়ের পথে।

৬৫ রানের এই জুটি ভাঙে মিঠুনের বিদায়েই। রাইটের সেই দুর্দান্ত ক্যাচ! ৩ ছক্কায় ৩৩ বলে ৪৬।

এরপর গিয়েই বোপারার দুই ছক্কা। রাইটের ক্যাচ মিস। রংপুরের এগিয়ে যাওয়া। ১৮ বলে যখন প্রয়োজন ২২ রান, তখনই বোপারার সেই ক্যাচ মিস। এক প্রান্ত আগলে রাখা শাহরিয়ারকে বোল্ড (৩৪ বলে ৩৫) করেন ফ্রাঙ্কলিন। কিন্তু বোপারা ফিরেন জয় নিয়েই।

শেষের দিকে গিয়ে থিসারা পেরেরার ক্যাচও ছেড়েছে রাজশাহী। এমনকি জয় এনে দেওয়া শটেও পেরেরার ক্যাচ নিতে পারেননি রাইট।

শেষটা হয়ে রইল যেন রাজশাহীর পারফরম্যান্সের প্রতীকি। সুযোগ হাতছাড়ায় ফসকে গেল ম্যাচ। রংপুর শুরু করল দারুণ জয়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১৫৪/৮(মুমিনুল ৯, রাইট ১১, রনি ৪৭, মুশফিক ১১, সামিত ৩, ফ্রাঙ্কলিন ২৬*, স্যামি ২৯, ফরহাদ ০, মিরাজ ১৫; মাশরাফি ১/১৮, সোহাগ ১/৫, অপু ২/২০, রুবেল ০/৪৩, মালিঙ্গা ২/৩৪, থিসারা ০/২৩, বোপারা ০/৯)।

রংপুর রাইডার্স: ১৮.৫ ওভারে ১৫৫/৪ (চার্লস ৯, লাইথ ০, মিঠুন ৪৬, শাহরিয়ার ৩৫, বোপারা ৩৯*, পেরেরা ২০*; মিরাজ ২/৩১, সামিত ০/১৪, নিহাদ ০/২৩, ফরহাদ ১/৩০, উইলিয়ামস ১/৩০, ফ্রাঙ্কলিন ১/২৬)

ফল: রংপুর ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি বোপারা