সিলেট স্টেডিয়ামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ মাশরাফি-সাকিব-মাহমুদউল্লাহ

সিলেট শহর থেকে বিমানবন্দর সড়কের একপাশে স্টেডিয়ামের বড় ফটক। সেটি দিয়ে সামনে এগোলেই দুই পাশে চা বাগান। সেই পথ পেরিয়ে স্টেডিয়ামের মূল আঙিনায় প্রবেশের ফটক। প্রথম দর্শনেই ভালো লাগার মতো চারপাশের সৌন্দর্য। ভেতরটাও চোখ জুড়িয়ে দেয় প্রথম দেখাতেই। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম যেন সৌন্দর্যের আধার!

ক্রীড়া প্রতিবেদকসিলেট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2017, 11:17 AM
Updated : 3 Nov 2017, 01:44 PM

ড্রেসিং রুম, প্রেসবক্সসহ মাঠের দুপ্রান্তের স্থাপনা, চারপাশের গ্যালারি চোখে লেগে থাকার মতো। পূর্ব পাশের গ্যালারির ওপর নতুন করে গড়া দোতলা গ্যালারি আর সেটির শেড সৌন্দর্যে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। আর এই স্টেডিয়ামের প্রতীক ‘গ্রিন গ্যালারি’ তো আছেই। সব মিলিয়ে নয়নভিরাম এক স্টেডিয়াম।

আগে স্টেডিয়ামের নাম ছিল সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম। সংস্কার করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উপেযাগী করার পর নাম হয় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ২০১৩ সালে এখানে নিউ জিল্যান্ড সিরিজের খেলা হওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হয়নি। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খেলা দিয়ে যাত্রা শুরু হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের।

প্রাথমিক পর্বে সেবার ‘বি’ গ্রুপের ছয়টি ম্যাচ হয়েছিল এখানে। এরপর আরেক দফা সংস্কার হয়। মাঠের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিক করা হয়। এর পর ঘরোয়া ক্রিকেটসহ, বিভিন্ন বয়সভিত্তিক, একাডেমি বা ‘এ’ দলের খেলা হচ্ছে নিয়মিতই। এবার বিপিএল দিয়ে আবারও হতে যাচ্ছে বড় এক ক্রিকেট উৎসব।

গ্রিন গ্যালারির সংস্কার পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় অবশ্য মরা ঘাস ও মাটি মিলিয়ে আপাতত রূপ নিয়েছে ‘ব্রাউন’ গ্যালারির। গ্রিন গ্যালারি আগের সবুজ চেহারা ফিরে ফেলেই পূর্ণতা পাবে সৌন্দর্য। আউটফিল্ডও আরেকটু ভালো করার জায়গা আছে।

তবে যেটুকু আছে, সেটির সৌন্দর্যেই মুগ্ধ বাংলাদেশের বড় তারকারা। মাশরাফি বিন মুর্তজার মতে এই স্টেডিয়াম বিশ্বমানের।

“সিলেটে তিন-চার বছর আগে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলেছিলাম। এবারও খুব ভালো লাগছে। গ্যালারি ও ড্রেসিং রুম যেমন দেখলাম, এটা আন্তর্জাতিক মানের। আগেরবারের থেকে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। দর্শকদের গ্যালারি অনেক ভালো হয়েছে। এ ছাড়া এখানে চারটা ড্রেসিং রুম আছে। মাঠটা দেখতেও দারুণ। আমাদের এই মাঠ আসলে আন্তর্জাতিক মানের।”

মাশরাফি যে টুর্নামেন্টের কথা বলছেন, সেটি হয়েছিল ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে। বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। সেই টুর্নামেন্টের এক ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তার নেতৃত্বে টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছিল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

সেই স্মৃতি তো আছেই, সঙ্গে মাঠের সৌন্দর্য মিলিয়ে সাকিবের এটি অন্যতম প্রিয় মাঠ।

“সিলেট সবসময়ই আমার প্রিয় ভেন্যুর মধ্যে একটি। কারণ পারিপার্শ্বিকতা মিলিয়ে জায়গাটি সুন্দর। ঘোরার মতো জায়গা আছে। সুন্দর হোটেল আছে। স্টেডিয়ামটা দেখতেও বিদেশি স্টেডিয়ামের মতো। যেটা আমার কাছে মনে হয় আমাদের দেশের জন্য অনন্য। সব মিলিয়ে খুব ভাল পরিবেশ।”

মাশরাফির মতো ২০১৩ সালের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কথা মনে পড়ল মাহমুদউল্লাহরও। তার মতে, সেই সময়ের চেয়ে এখন আরও অনেক বেড়েছে মাঠের সৌন্দর্য।

“মাঠ খুবই ভালো লাগছে। এখানে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হয়েছিল। তখনকার চেয়ে এখন সুন্দর লাগছে গ্যালারিটা। আশা করি, উইকেটও ভালো হবে; এখানে অনেক দর্শক আসবে। এখানে আমরা দুটি ম্যাচ খেলব, আশা করি, সুখস্মৃতি নিয়েই ঢাকায় ফিরতে পারব।”

বিপিএলকে ঘিরে সিলেটে এমনিতেই জেগেছে রোমাঞ্চ ও উত্তেজনার ঢেউ। টিকেট নিয়ে দর্শকের যে উন্মাদনা, তাতে গ্যালারিতেও আলোড়ন উঠবে সন্দেহ নেই। এবার মাঠের ক্রিকেট দারুণ হলেই সোনায় সোহাগা। সৌন্দর্যময় মাঠে ভরা গ্যালারির সামনে ২২ গজের লড়াই রোমাঞ্চকর হলে বিপিএলের শুরুটাও হয়ে উঠবে দারুণ প্রাণবন্ত।