সিরিজ হারল বিবর্ণ বাংলাদেশ

প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেটে হারের পর এবার ১০৪ রানের হার- টানা দুই ম্যাচ বাজেভাবে হেরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারল বাংলাদেশ।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2017, 07:39 AM
Updated : 18 Oct 2017, 07:33 PM

হতাশায় মোড়ানো আরেকটি দিন

দিনের শুরুটা খারাপ ছিল না বাংলাদেশের। অনেকটা সময় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছির প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের। এবি ডি ভিলিয়ার্স নেমেই পাল্টে দেন চিত্র। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে এলোমেলো করে দেন বাংলাদেশের বোলিং। তার ১০৪ বলে ১৭৬ রানে অসাধারণ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা তোলে ৩৫৩ রান।

বোলিংয়ের পর হতাশা ব্যাটিংয়েও। তৃতীয় উইকেটে ইমরুল কায়েস ও মুশফিকের জুটির সময় অবশ্য লড়াইয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে দুজনের কেউ যেতে পারেননি সেঞ্চুরি পর্যন্ত। পরের ব্যাটসম্যানরাও দাঁড়াতে পারেননি কেউ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩৫৩/৬ (আমলা ৮৫, ডি কক ৪৬, দু প্লেসি ০, ডি ভিলিয়ার্স ১৭৬, দুমিনি ৩০, বেহারদিন ৭*, প্রিটোরিয়াস ০, ফেলুকওয়ায়ো ০*; মাশরাফি ০/৮২, তাসকিন ০/৭১, সাকিব ২/৬০, নাসির ০/৪৯, রুবেল ৪/৬২, সাব্বির ০/১১, মাহমুদউল্লাহ ০/১৬)।

বাংলাদেশ: ৪৭.৫ ওভারে ২৪৯ (তামিম ২৩, ইমরুল ৬৮, লিটন ১৪, মুশফিক ৬০, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৫, সাব্বির ১৭, নাসির ৩, মাশরাফি ০, তাসকিন ৩*, রুবেল ৮*; রাবাদা ০/৪০, প্যাটারসন ১/৬৭, প্রিটোরিয়াস ২/৪৮, ফেলুকওয়ায়ো ৪/৪০, তাহির ৩/৫০)।

ফেলুকওয়ায়োর চার

দারুণ বোলিং আর বাজে শট মিলিয়ে ফেলুকওয়ায়োর আরও একটি উইকেট। মাহমুদউল্লাহকে বোল্ড করে এই পেসার নিলেন ইনিংসে চতুর্থ উইকেট।

আবারও সিমে পিচ করে ভেতরে ঢোকা বল। মাহমুদউল্লাহ জায়গায় দাঁড়িয়ে খেললেন ক্রস ব্যাটে। লাইন মিস করে বোল্ড।

সময়ের দাবি মেটাতে একদমই ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ। ৩৫ করেছেন ৪৬ বলে। বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২৩৯।

শূন্যতে শেষ মাশরাফি

দ্রুত শেষের পথে বাংলাদেশ। নাসিরের পর ওই ওভারেই আউট মাশরাফি। ফেলুকওয়ায়ো নিলেন তিন উইকেট।

আবারও ভেতরে ঢোকা বল। মাশরাফি খেলতে চাইলেন লেগ সাইডে। তবে ব্যাটের আগেই বল লাগল প্যাডে। এলবিডব্লিউ শূন্য রানে। বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২৩৪।

ব্যর্থ নাসির

দলের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব শেষ। নিজের জন্য হলেও কিছু করতে পারতেন নাসির হোসেন। কিন্তু ব্যর্থ পুরোপুরি। ফেলুকওয়ায়োর ভেতরে ঢোকা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে দৃষ্টিকটুভাবে বোল্ড নাসির।

৩ রানে আউট হলেন নাসির। বাংলাদেশ ৪৩.২ ওভারে ৭ উইকেটে ২৩৪।

তাহিরের আরেকটি

নিজের শেষ ওভারে আরও একটি উইকেট পেলেন ইমরান তাহির। বাজে শটে আউট সাব্বির রহমান।

অফ স্টাম্পের বাইরের বলকে অন সাইডে উড়িয়ে মারতে চাইলেন সাব্বির। বল উঠল স্রেফ আকাশে। বৃত্তের ভেতরই ক্যাচ নিলেন ফাফ দু প্লেসি।

হাল অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যবধান কমানোর কাজটিও খুব ভালো করতে পারছে না ব্যাটসম্যানরা।

১৮ বলে ১৭ করে ফিরলেন সাব্বির। দলের রান ৪০.২ ওভারে ৬ উইকেটে ২১৯।

পারলেন না সাকিব

ইমরুলের পর সাকিবকেও ফিরিয়ে দিলেন ইমরান তাহির। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ হজম করল জোর ধাক্কা।

আগের ম্যাচে গুগলিতে সাকিবকে আউট করেছিলেন তাহির। এবার জোরের ওপর করা বল। স্লাইডারটি পিচ করে খানিকটা লাফিয়ে বেরিয়েও যাচ্ছিল। থার্ডম্যানে খেলতে গিয়ে সাকিব ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে।

বাংলাদেশের বড় ভরসা আউট ৫ রানেই। ৩১ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ১৭১।

থামলেন ইমরুল

ইমরুল ও মুশফিকের জুটি যখন শতরানের পথে, তখনই ইমরুলের বিদায়। তাহিরের গুগলি বুঝতে না পেরে ফ্লিক করলেন, ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ শর্ট কাভারে।

৭৭ বলে ৬৮ রান করে আউট ইমরুল। ভাঙল ৯৩ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। ২৯ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১৬২।

মুশফিকের ফিফটি

প্রিয় স্লগ সুইপে ইমরান তাহিরকে ছক্কায় ৪৩ থেকে ৪৯। এক বল পর দ্রুত এক সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ। মুশফিকের রহিমের হাফ সেঞ্চুরি। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরির পর এবার আরও একটি দারুণ ইনিংস।

৬০ বলে মুশফিক ছুঁলেন পঞ্চাশ। ওয়ানডেতে তার ২৭তম। বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১৬২।

ইমরুলের পঞ্চাশ

বড় রান তাড়ায় প্রয়োজন টপ অর্ডারের কারও বড় রান। আপাতত সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন ইমরুল কায়েস। ৫৬ বলে স্পর্শ করেছেন অর্ধশতক।

টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ইমরুলের এটি প্রথম ফিফটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৪তম। সেঞ্চুরি আছে দুটি।

২৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১৩০। ৫৮ রান নিয়ে খেলছেন ইমরুল, মুশফিক ৩০। দুজনের জুটির রান ৬১।

জীবন পেলেন ইমরুল

৪৯ রানেই শেষ হতে পারত ইমরুলের ইনিংস। কিন্তু প্যাটারসনের বলে পয়েন্টে ক্যাচ ছাড়লন জেপি দুমিনি। ইমরুলের কাট শট ডাইভ দিয়ে হাতে জমাতে পারেননি দুমিনি।

জুটির পঞ্চাশ

ইনিংসের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি জুটি এলো ইমরুল ও মুশফিক জুটিতে। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

তিন অঙ্কে পা

তামিম ও লিটনকে হারানোর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিম। দলের রান পেরিয়েছে একশ।

১৮ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১০৩ । ইমরুল খেলছেন ৪১ রান নিয়ে, মুশফিক ২০। তৃতীয় উইকেট জুটির রান ৩৪।

এবার আউট লিটন

প্রিটোরিয়াসের পর প্রথম ওভারে উইকেট পেলেন আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো। স্টাম্প সোজা বল লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করলেন লিটন। এলবিডব্লিউ।

খালি চোখেই মনে হচ্ছিলো নিশ্চিত আউট। উইকেটে সঙ্গী ইমরুল কায়েসের সঙ্গে কথা বলে তবু রিভিউ নিলেন লিটন। রিপ্লে দেখাল, বল লাগছিল মিডল স্টাম্পে! উইকেটের সঙ্গে একমাত্র রিভিউটিও হারাল বাংলাদেশ।

উইকেটে গিয়েই দারুণ একটি চার, পরে রাবাদাকে পুল করে ছক্কা মেরেছিলেন লিটন। কিন্তু আউট হলেন ১২ বলে ১৪ রান করে।

বাংলাদেশ ১০.৫ ওভারে ২ উইকেটে ৬৯।

তামিমের বিদায়

প্রথম ওভারের প্রথম স্পেলে চার হজম করে শুরু করেছিলেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। তবে সাফল্যও পেলেন প্রথম ওভারেই। ফিরিয়ে দিলেন তামিম ইকবালকে।

স্টাম্প সোজা বল থার্ডম্যানে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু বুঝতে পারেননি বলটি ছিল একটু স্লোয়ার। বল লাগে প্যাডে, এলবিডব্লিউ।

২৫ বলে ২৩ রান করে আউট তামিম। বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৪৪।

স্বস্তির শুরু

রাগিসো রাবাদা শুরু করেছিলেন প্রথম ওভারে মেডেন নিয়ে। তবে এরপর থেকে ভালোই ব্যাট করছেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। বিধ্বংসী শুরু না হলেও প্রায় বল প্রতি রান তুলছেন দুজন।

৭ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৩৯।

৩৫৩ রানে থামল দক্ষিণ আফ্রিকা

ডি ভিলিয়ার্স আউট হওয়ার পর আর কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ওভারে পড়ে দুই উইকেট। শেষ পর্যন্ত থেমেছে তারা ৫০ ওভারে ৩৫৩ রানে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। ২০০৮ সালে বেনোনিতে ৩৫৮ এখনও সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে এই নিয়ে সপ্তমবার সাড়ে তিনশর বেশি রান করল কোনো দল।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে রুবেল ৪ উইকেট নিয়েছেন ৬২ রানে। ৬০ রানে দুটি সাকিব। বিবর্ণ বাকি সবাই। ৯ ওভারে ৭১ রান গুণেছেন তাসকিন আহমেদ। ১০ ওভারে ৮২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য মাশরাফি। ওয়ানডেতে এত বেশি রান আগে দেননি কখনোই। ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯ ওভারে ৮০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৩৫৩/৬ (আমলা ৮৫, ডি কক ৪৬, দু প্লেসি ০, ডি ভিলিয়ার্স ১৭৬, দুমিনি ৩০, বেহারদিন ৭*, প্রিটোরিয়াস ০, ফেলুকওয়ায়ো ০*; মাশরাফি ০/৮২, তাসকিন ০/৭১, সাকিব ২/৬০, নাসির ০/৪৯, রুবেল ৪/৬২, সাব্বির ০/১১, মাহমুদউল্লাহ ০/১৬)।

টানা দু বলে দুটি

পরপর দুই বলে দুই উইকেট। দুমিনির পরের বলে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকেও আউট করে দিলেন রুবেল হোসেন। উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন, ক্যাচ নিলেন ইমরুল কায়েস। প্রিটোরিয়াস ফিরলেন প্রথম বলেই।

ফিরলেন দুমিনি

শেষ ওভারে ইয়র্কারে জেপি দুমিনিকে ফেরালেন রুবেল হোসেন।

আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে জিতেছে বাংলাদেশ। ৩০ রানে আউট হলেন দুমিনি।

তাণ্ডব চালিয়ে ফিরলেন ডি ভিলিয়ার্স

যেভাবে খেলছিলেন, তাতে ৫০ ওভার উইকেট থাকলে ডাবল সেঞ্চুরিই হয়তো হয়ে যেত ডি ভিলিয়ার্সের। তবে সেটি হলো না। ৪৮তম ওভারে তাকে ফেরালেন রুবেল হোসেন।

চেষ্টা করেছিলেন আরও একটি ছক্কার। ফুল লেংথ বলটিতে উড়িয়ে মেরেছিলেন। সীমানা থেকে ছুটে এসে ক্যাচ নেন সাব্বির।

১০৪ বলে ১৭৬ রানে আউট হলেন ডি ভিলিয়ার্স। ১৫ চারের পাশে ইনিংসে ৭টি ছক্কা।

৪৭.৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ উইকেটে ৩৪৩।

জুটির সেঞ্চুরি

ক্যারিয়ার সেরা রান করলেন যে শটে, এবি ডি ভিলিয়ার্সের সেই বাউন্ডারিতেই সেঞ্চুরি হলো চতুর্থ উইকেট জুটির।

মাত্র ৬৩ বলেই হলো জুটির সেঞ্চুরি। জুটিতে দুমিনির অবদান মাত্র ২০!

৪৭ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ৩৩৯।

ডি ভিলিয়ার্সের ক্যারিয়ার সেরা

ক্যারিয়ারে আগে একবারই দেড়শ করেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই ইনিংসে করেছিলেন ৬৬ বলে অপরাজিত ১৬২। রান সংখ্যায় এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে গেলেন ডি ভিলিয়ার্স।

তাসকিনের টানা তিন বলে দুই ছক্কা ও এক চারে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ার সেরা ১৬২। ছাড়িয়ে যান মাশরাফির বলে বাউন্ডারি মেরে। ৯৯ বলে ১৬৬।

তিনশ পেরিয়ে

এবি ডি ভিলিয়ার্সের খুনে ব্যাটিংয়ে ৪৫ ওভারেই তিনশ ছাড়িয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। ইমরুল দুমিনির ক্যাচ ছাড়ার পর মাশরাফির পরপর দুই বলে ছক্কা মেরে দলকে তিনশর ঠিকানায় নিয়ে যান ডি ভিলিয়ার্স।

৪৫ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ৩০৩।

জীবন পেলেন দুমিনি

সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন জেপি দুমিনি। মাশরাফির বলে চেষ্টা করেছিলেন স্লগ করার। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে উঠে গেল ওপরে। কিন্তু পয়েন্টে সহজ ক্যাচটিও হাতে জমাতে পারলেন না ইমরুল কায়েস।

আরেক জুটির পঞ্চাশ

জেপি দুমিনি দিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গ, ডি ভিলিয়ার্স বাড়াচ্ছেন রান। দুয়ের সমন্বয়ে অর্ধশতক হলো আরও একটি জুটিতে।

৩৯ বলেই হলো জুটির পঞ্চাশ। ৪৩ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ২৭৮।

ডি ভিলিয়ার্সের ২৫তম সেঞ্চুরি

বড় জুটিতে সঙ্গী আমলা বিদায় নিলেও প্রভাব নেই ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিংয়ে। দারুণ খেলেই ছুঁয়ে ফেললেন সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে তার ২৫তম। বাংলাদেশের বিপক্ষে ষষ্ঠ ইনিংসে প্রথম।

৩৪ বলে করেছিলেন অর্ধশতক। পরের পঞ্চাশেও বল লেগেছে ৩৪টি। ৬৮ বলে সেঞ্চুরি। খানিকটা মন্থর উইকেট, বাজে আউটফিল্ডে এই গতিতে সেঞ্চুরি করে আরও একবার চিনিয়েছে তার জাত।

আমলার বিদায়

অবশেষে ভাঙল ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা তৃতীয় উইকেট জুটি। হাশিম আমলাকে ফেরালেন রুবেল হোসেন।

শাফল করে অফ স্টাম্পে এসেছিলেন আমলা। অফ স্টাম্প ঘেষা বলটিতে গ্লাইড করে নিতে চেয়েছিলেন এক রান। বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে কিপারের গ্লাভসে।

৯২ বলে ৮৫ রানে আউট হলেন আমলা। মাত্র চারটি চার হলেও স্ট্রাইক রেট ৯২.৩৯!

৩৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ২৩৬।

দুইশ ছাড়িয়ে

দল একশ ছোঁয়ার আগে জুটি বেঁধেছিলেন দুজন। এই জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছাড়িয়ে গেল দুইশ।

শুরুতে যে নিয়ন্ত্রণ দেখিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা, ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সব এলোমেলো করে দিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। আমলার ৩৮ রানে উইকেটে গিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স, কিন্তু গেছেন আমলাকে ছাড়িয়ে।

দ্বিতীয় পানি পানের বিরতির সময় ৩৩ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২ উইকেটে ২০৫।

৫১ বলে ৭৬ রানে খেলছেন ডি ভিলিয়ার্স, ৮৩ বলে ৭৪ আমলা। জুটির রান ৯০ বলে ১১৫।

জুটির সেঞ্চুরিতে রেকর্ড

ডি ভিলিয়ার্স যেরকম ফর্মে আছেন, তাতে বাজে বল মানে ভয়ানক শাস্তি। সেটিই পেলেন নাসির হোসেন। লোপ্পা ফুলটস করলেন, ডি ভিলিয়ার্স সেটিতে স্বাগত জানালেন বিশাল ছক্কায়। ম্যাচের প্রথম ছ্ক্কায় জুটি স্পর্শ করল শতরান।

৮৪ বলেই হলো জুটির সেঞ্চুরি। আমলা-ডি ভিলিয়ার্স জুটির এটি ১২তম সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি শতরানের জুটির রেকর্ড এখন এককভাবে এই দুজনের। গ্রায়েম স্মিথ ও হার্শেল গিবস জুটির শতরানের জুটি ১১টি।

ডি ভিলিয়ার্স ঝড়

ম্যাচের গতিচিত্রই যেন পাল্টে দিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রায় চার মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমেই তুলেছেন ঝড়। অর্ধশতক করেছেন মাত্র ৩৪ বলেই।

উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই দারুণ পায়ের কাজ, টাইমিং আর উদ্ভাবনী ক্ষমতা মিলিয়ে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন ডি ভিলিয়ার্স। চাপে ফেলে দিয়েছেন বাংলাদেশের সব বোলার-ফিল্ডারকে।

২৯ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা রান ২ উইকেটে ১৭৬।

আমলা-ডি ভিলিয়ার্স জুটিতে পঞ্চাশ

জোড়া উইকেটের পর একটু থমকে যাওয়ার কথা ইনিংস। হলো উল্টো। এবি ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটে নতুন গতি পেল প্রোটিয়া ইনিংস।

আমলা-ডি ভিলিয়ার্স জুটিতে পঞ্চাশ উঠে গেল ৭ ওভারেই। বেড়েছে বাউন্ডারির সংখ্যাও।

২৫ ওভারে রান ২ উইকেটে ১৪০। ৫৫ রানে খেলছেন আমলা, ২৫ বলে ৩২ রানে ডি ভিলিয়ার্স।

আমলার পঞ্চাশ

আরেক পাশে দুটি উইকেট পড়লেও অবিচল আমলা। নিজের মতোই খেলে স্পর্শ করলেন আরও একটি অর্ধশতক।

প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার হাফ সেঞ্চুরি ছুঁলেন ৫৫ বলে। ইনিংসে বাউন্ডারি মাত্র ৩টি, স্ট্রাইক রেট তবু নব্বইয়ের বেশি!

২৩ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ১২৪।

বেঁচে গেলেন ডি ভিলিয়ার্স
 
জোড়া উইকেটের ওভারের পর আরও একটি উইকেট পেতে পারতেন সাকিব। সেটি হতে পারত অনক বড় উইকেট। কিন্তু হলো না!
 
স্টাম্প সোজা আর্ম ডেলিভারিতে কাট মতো করেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ব্যাটের কানায় লেগে বল পেছনে। কিন্তু স্লিপে হাত বাড়িয়ে বল ছুঁতেই পারলেন না নাসির। দ্রুত গতিতে ছোটা বলকে হাতে জমানোর মত রিফ্লেক্স ছিল না ফিল্ডারের। 
 
বোলার সাকিবকে মনে হলো বেশ বিরক্ত। ডি ভিলিয়ার্স রক্ষা পেলেন ২ রানে।
 
২০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ১০০।

সাকিবের আরেকটি

প্রথম উইকেট পেতে অপেক্ষাটা দীর্ঘ সময়ের হলেও দ্বিতীয়টি এলো দ্রুতই। একই ওভারে আরও একটি উইকেট এনে দিলেন সাকিব।

সাকিবের দারুণ ফ্লাইট ও ড্রিফটে বোল্ড ফাফ দু প্লেসি। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক রানের খাতাই খুলতে পারেননি।

১৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ৯০।

অবশেষে উইকেটের দেখা

যেন দীর্ঘ খরার পর একটু বৃষ্টির ছোঁয়া! অবশেষে ওয়ানডে সিরিজে প্রথম উইকেটের দেখা পেল বাংলাদেশ। কুইন্টন ডি কককে ফেরালেন সাকিব আল হাসান।

সাকিবের বলটি একটু স্লাইড করে ঢুকেছে, লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ ডি কক। ৫ ওয়ানডে পর সাকিব পেলেন উইকেটের দেখা।

আগের ম্যাচের ম্যান অব দা ম্যাচ ডি কক এবার ফিরলেন ৪৬ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭.৩ ওভারে ১ উইকেটে ৯০।

দেখা নেই উইকেটের

ডি কক-আমলা জুটিতে ভাঙন ধরাতেই পারছে না বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে অপরাজিত ২৮২, এবার প্রথম পানি পানের বিরতির সময় বিনা উইকেটে ৮২।

যদিও খানিকটা মন্থর উইকেট আর বাজে আউটফিল্ডের কারণে রানের গতি আগের ম্যাচের মত নয়। তবে দুই ব্যাটসম্যান খেলছেন নিয়ন্ত্রিতভাবে, আউট হওয়ার সুযোগও দেননি।

১৬ ওভারে বাউন্ডারি হয়েছে মাত্র তিনটি। তার পরও ওভারপ্রতি পাঁচের বেশি তুলে রান ৮২।

আবারও ভালো শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার

আগের ম্যাচে অপরাজিত ২৮২ রানের রেকর্ড জুটির পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে আবার ভালো শুরু এনে দিলেন হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক। উদ্বোধনী জুটিতে দুজন গড়েছেন অর্ধশত রানের জুটি।

উইকেট বুঝে খুব চটকদার শটের পথে হাঁটেননি দুজন। শট খেলছেন বুঝে শুনে। বাজে আউটফিল্ডের কারণে অবশ্য কমে গেছে বেশ কিছু রান। আউটফিল্ডে সীমানার কাছে গিয়ে থমকে যাচ্ছে বল।

১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ৫০।

সতর্কতায় শুরু

আগের কদিনের বৃষ্টিতে শুরুতে একটু আর্দ্র উইকেট। খানিকটা মন্থরও। টস হেরে ব্যাটিং পাওয়ার পর ফাফ দু প্লেসি বলেছিলেন, শুরুর ১০ ওভার দেখে খেলবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটায় সেটিরই প্রতিফলন।

হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক শুরু করেছেন সতর্ক ব্যাটিংয়ে। নতুন বলে বেশ নিয়ন্ত্রত বোলিং করেছেন মাশরাফি ও তাসকিন। দ্রই প্রোটিয়া ওপেনারও খুব তাড়া দেখাননি ব্যাটিংয়ে। প্রথম ৬ ওভারে বাউন্ডারি হয়েছে দুটি, দুটিই বাজে বলে।  

৬ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ২৪।

ফিরলেন তামিম
অনুমিতভাবেই বাংলাদেশের একাদশে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। তাকে জায়গা দিতে একাদশের বাইরে গিয়েছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন একটিই।
দক্ষিণ আফ্রিকা চোটের কারণে পাচ্ছে না ডেভিড মিলারকে। তার বদলে একাদশে এসেছেন ফারহান বেহারদিন।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন।
 
আবারও টস জয়
 
টস ভাগ্য আবারও বাংলাদেশের পক্ষে। এবার অবশ্য বদলে গেল সিদ্ধান্ত। প্রথম ওয়ানডেতে আগে ব্যাটিং করলেও এবার বাংলাদেশ বেছে নিয়েছে বোলিং। 
 
ভেন্যুতে প্রথমবার
 
পার্লের বোল্যান্ড পার্কে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে। সেই থেকে এই দুই দশকে মাত্র দশম আন্তর্জাতিক ম্যাচ এটি। বাংলাদেশ এখানে খেলছে এই প্রথমবার।
 
ম্যাচের আগে তুমুল আলোচনা-সমালোচনায় বোল্যান্ড পার্কের আউটফিল্ড। অসমান মাঠ, জায়গায় জায়গায় নেই ঘাস। বের হয়ে আছে কালো মাটি। ম্যাচের আগের দিন মাঠ দেখে তামিম ইকবাল বলেছেন “আবাহনী মাঠের মত।”
 
হারের বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জ
 
টেস্ট সিরিজে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর রঙিন পোশাকেও বাংলাদেশ পারেনি উজ্জ্বল হয়ে উঠতে। প্রথম ওয়ানডেতে ২৭৮ রান করেও রেকর্ড ব্যবধানে হারের তিক্ততায় ডুবতে হয়েছে। হারের সেই বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে।
 
বাংলাদেশের জন্য সুখবর, এই ম্যাচে ফিরছেন তামিম ইকবাল। চোট কাটিয়ে এই ওপেনার ফেরায় দলের ব্যাটিং শক্তিই শুধু বাড়ছে না, দলের আত্মবিশ্বাসও আরও বাড়ার কথা।