সোমবার রাতে আবু ধাবিতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৩২ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। ৫ ম্যাচ সিরিজে এগিয়ে গেছে ২-০ ব্যবধানে।
বাবরের ১০১ রানের ইনিংস পাকিস্তানকে এনে দেয় ২১৯ রান। থারাঙ্গার অপরাজিত ১১২ রানের পরও শ্রীলঙ্কা করতে পারে ১৮৭।
বাবরের এটি সিরিজে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে ৩৩ ইনিংসে ৭ সেঞ্চুরি করে গড়লেন নতুন রেকর্ড। সংযুক্ত আরব আমিরাতে টানা পঞ্চম সেঞ্চুরিতেও গড়েছেন আরেকটি রেকর্ড।
দুই সেঞ্চুরিয়ান রেকর্ড গড়লেও ম্যাচ সেরা কিন্তু আরেকজন। লোয়ার অর্ডারে অপরাজিত হাফসেঞ্চুরি ও বাবরের সঙ্গে শতরানের জুটিতে দলকে উদ্ধার, পরে বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের নায়ক শাদাব খান।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানকে চেপে ধরেছিলেন শ্রীলঙ্কার নতুন বলের দুই বোলার লাহিরু গামাগে ও সুরাঙ্গা লাকমল। পরে থিসারা পেরেরাও দারুণ বোলিংয়ে দুই উইকেট নিলে পাকিস্তান ৬ উইকেট হারায় ১০১ রানে।
সেই বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলে বাবর ও শাদাবের জুটি। সপ্তম উইকেটে দুজনে গড়েন ১০৯ রানের জুটি।
পরিস্থিতি বুঝে বাবর খেলেছেন ১৩৩ বলে ১০৩ রানের দারুণ ইনিংস। আউট হয়েছেন শেষ ওভারের প্রথম বলে।
মাত্র ৩৩ ইনিংসেই ৭ সেঞ্চুরি করে ছাড়িয়েছেন হাশিম আমলাকে। ৪১ ইনিংসে ৭ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার আমলার।
এই সিরিজের আগে আরব আমিরাতে সবশেষ সিরিজেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা তিন সেঞ্চুরি করেছিলেন বাবর। কোনো এক দেশে টানা ৫ সেঞ্চুরি এই প্রথম দেখল ওয়ানডে ক্রিকেট।
২০১০-১১ মৌসুমে ভারতে টানা চারটি সেঞ্চুরি করে আগের রেকর্ড গড়েছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
বাবর আউট হলেও প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করে ৫২ রানে অপরাজিত থেকে যান শাদাব। ১৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনার পড়ে ৩ উইকেট নিয়ে নাড়িয়ে দেন শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার। টপ অর্ডারে ছোবল দেন জুনাইদ খান ও হাসান আলি। মাঝারি রান তাড়া্য়ও ছন্নছাড়া শ্রীলঙ্কা ৯৩ রানে হারায় ৭ উইকেট। ওপেন করতে নামা থারাঙ্গা তখনও টিকে। খাদের কিনারা থেকে দলকে আশা দেখায় অধিনায়কের ব্যাট।
অষ্টম উইকেটে অধিনায়ককে সঙ্গ দেন জেফ্রি ভ্যান্ডারসে। দুজনের ৭৬ রানের জুটিতে জয় দৃষ্টিসীমায় চলে আসে লঙ্কানদের।
২২ রান করে ভ্যান্ডারসের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। থারাঙ্গা তুলে নেন ১৫তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। প্রয়োজনীয় রান রেট যদিও ক্রমশ বাড়ছিল, থারাঙ্গা ছিলেন বলে ছিল শ্রীলঙ্কার আশাও।
কিন্তু লোয়ার অর্ডার দাঁড়াতে পারল না। শেষ দুই ব্যাটসম্যানই রান আউট। ১৪৪ বলে ১১২ রানে অপরাজিত থেকে যান থারাঙ্গা।
ওয়ানডেতে আদ্যন্ত ব্যাটিংয়ের এটি একাদশ নজির, শ্রীলঙ্কার প্রথম। তবে দলের হারে ম্লান অধিনায়কের কীর্তি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২১৯/৯ (ফখর ১১, শেহজাদ ৮, বাবর ১০১, হাফিজ ৮, মালিক ১১, সরফরাজ ৫, ইমাদ ১০, শাদাব ৫২*, হাসান ৭, রাইস ০, জুনাইদ ০*; লাকমল ১/৪২, গামাগে ৪/৫৭, ভ্যান্ডারসে ১/৪৪, থিসারা ২/৩৪, দনঞ্জয়া ০/৩০, সিরিবর্দনা ০/৯)।
শ্রীলঙ্কা: ৪৮ ওভারে ১৮৭ (ডিকভেলা ৩, থারাঙ্গা ১১২*, মেন্ডিস ১০, থিরিমান্নে ১২, চান্দিমাল ২, সিরিবর্দনা ৩, থিসারা ৭, দনঞ্জয়া ১, ভ্যান্ডারসে ২২, লাকমল ১, গামাগে ৩; জুনাইদ ১/২১, রাইস ১/৩৭, হাসান ১/৩২, ইমাদ ০/৩, হাফিজ ১/২৪, মালিক ১/১৭, শাদাব ৩/৪৭)।
ফল: পাকিস্তান ৩২ রানে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-০ তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: শাদাব খান