শুরুর জুটিতেই খেলা শেষ

সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা ৪২.৫ ওভারে ২৮২/০ (বাংলাদেশ ২৭৮/৭)

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Oct 2017, 07:28 AM
Updated : 15 Oct 2017, 09:38 PM

এক জুটিতেই জয়

বাংলাদেশের রানটা জয়ের জন্য কম ছিল নি:সন্দেহে। তাই বলে বোলিংয়ে এতটা অসহায় আত্মসমর্পণ!

নিষ্প্রাণ উইকেটে একদমই ধারহীন বোলিংয়ে লড়াইও করতে পারল না বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ শেষ করে দিল উদ্বোধনী জুটিতেই। জিতে গেল ৪৩ বল বাকি রেখেই।

২১ চার ও ২ ছক্কায় ১৪৫ বলে ১৬৮ রানে অপরাজিত কুইন্টন ডি কক। ১১২ বলে ১১০ রানে অপরাজিত আমলা। দুজনের ২৮২ রানের অপরাজেয় জুটিতে হয়েছে এক গাদা রেকর্ড।

বাংলাদেশ রান আরেকটু বেশি করলে হয়ত উদ্বোধনী জুটির বিশ্বরেকর্ডও হয়ে যেত! ২৮৬ রানের রেকর্ড সনাৎ জয়াসুরিয়া ও উপুল থারাঙ্গা জুটির। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৮/৭ (ইমরুল ৩১, লিটন ২১, সাকিব ২৯, মুশফিক ১১০*, মাহমুদউল্লাহ ২৬, সাব্বির ১৯, নাসির ১১, সাইফ উদ্দিন ১৬; রাবাদা ৪/৪৩, প্যাটারসন ০/৬৯, তাহির ১/৪৫, প্রিটোরিয়াস ২/৪৮, ফেলুকওয়ায়ো ০/৬০, দুমিনি ০/৮)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪২.৫ ওভারে ২৮২/০ (ডি কক ১৬৮*, আমলা ১১০*; রুবেল ০/৫০, তাসকিন ০/৬১, সাকিব ০/৪৮, সাইফ ০/৪৬, নাসির ০/২৯, মাহমুদউল্লাহ ০/১১)

হলো না এবারও

জুটি ভাঙার আরেকটি সুযোগও হাতছাড়া হলো। তাসকিনের পর এবার ক্যাচ ছাড়লেন দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার নাসির হেসেন।

মাশরাফির বলে উড়িয়ে মেরেছিলেন ডি কক। লং অনে লাফিয়ে বলটি দুই হাতে পেয়েও জমাতে পারেননি নাসির। ১৫৯ রানে জীবন পেলেন ডি কক।

এবার সব জুটির সেরা

উদ্বোধনী জুটির সীমানা ছাড়িয়ে  ডি কক-আমলা ছাড়িয়ে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সব জুটিকেই। গড়লেন নতুন রেকর্ড।

২০১৫ বিশ্বকাপে হ্যামিল্টনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলার ও জেপি দুমিনির ২৫৬ রান ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার আগের সেরা জুটি। অনায়াসেই সেটি ছাড়িয়ে গেলেন ডি কক ও আমলা।

৪০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান বিনা উইকেটে ২৬০।

ডি ককের দেড়শ

৫৬ বলে প্রথম ৫০ ছুঁয়েছিলেন কুইন্টন ডি কক, পরের পঞ্চাশে লেগেছে ৪৪ বল। সেঞ্চুরি থেকে দেড়শ যেতে লাগল আরও কম বল, মাত্র ৩৪টি।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ডি কক পেলেন দেড়শ রানের স্বাদ।

চূড়ায় আমলা-ডি কক

এক জুটিতেই অনেক রেকর্ডের মালা গাঁথলেন কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা। দেশের ইতিহাসেই সেরা উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড গড়লেন দুজন।

আগের জুটিতেও ছিলেন আমলা। সঙ্গী রাইলি রুশো। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জোহানেসবার্গে ২৪৭ রানের জুটি গড়েছিলেন দুজন। আমলা-ডি কক জুটি ছাড়িয়ে গেলেন সেটিকে।

৩৯ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ২৫৪।

আমলার সেঞ্চুরি

যে ওভারে জীবন পেলেন ৯৪ রানে, সেই ওভারেই আমলা ছুঁয়ে ফেললেন সেঞ্চুরি।

তার অন্য দশটি সেঞ্চুরি থেকে একটু আলাদা এই সেঞ্চুরি। স্ট্রোকের ঝুলঝুরি নেই। বরং নিয়মিত সিঙ্গেল-ডাবলসে গড়া ইনিংস। বাউন্ডারি মাত্র ৮টি, তার পরও ৯৯ বলে সেঞ্চুরি!

তার ২৬তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ৩৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ২৪৫।

পারলেন না তাসকিন

অবশেষে জুটি ভাঙার সুযোগ মিলেছিল। কিন্তু পারলেন না তাসকিন। তাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন আমলা। কিন্তু ফলো থ্রুতে ক্যাচ নেওয়ার কঠিন কাজটি করতে পারলেন না তাসকিন। ৯৪ রানে জীবন পেলেন আমলা।

আরেকটি রেকর্ড

একের পর এক রেকর্ডের পালায় এবার পেছনে পড়ে গেল ২০ বছর পুরোনো এক রেকর্ডও। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেরা উদ্বোধনী জুটি!
 
সেই ১৯৯৭ সালে নাইরোবিতে ২২৫ রানের জুটি গড়েছিলেন কেনিয়ার দিপক চুদাসামা ও কেনেডি ওটিয়েনো। সেটি ছাড়িয়ে গেলেন ডি কক ও আমলা জুটি।
 
৩৭ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান বিনা উইকেটে ২৩৭ । ১৪০ রানে খেলছেন ডি কক, ৯৪ রানে আমলা।

জুটির ডাবল সেঞ্চুরি

একশ, দেড়শ হয়ে কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলার জুটি ছুঁয়ে ফেলল দুইশ রানও।

উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুইশ রান এল সব দেশ মিলিয়ে এই নিয়ে চারবার। আগের তিন বারের দুবার ছিল শ্রীলঙ্কান জুটি, একবার কেনিয়ার।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়েও উদ্বোধনী জুটিতে দুইশ হলো চারবারই। ডি কক-আমলা জুটিতে দুবার।

৩৩ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ২০৩। ১১৭ রানে খেলছেন ডি কক, আমলা ৮৪।

ডি ককের সেঞ্চুরি

ছবি: ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা

ইনিংসের প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেছিলেন। এরপর আর থামাথামি নেই। তাকে বিন্দুমাত্র অস্বস্তিতেও ফেলতে পারেননি কোনো বোলার। অনায়াসেই কুইন্টন ডি কক করে ফেললেন সেঞ্চুরি।

সাকিবকে চার মেরে স্পর্শ করলেন সেঞ্চুরি। বল লেগেছে ঠিক ১০০টি। ৮৬ ওয়ানডেতে তারা ত্রয়োদশ সেঞ্চুরি।

৩০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ১৮৪।

আমলা- ডি কক জুটির রেকর্ড

দেড়শ ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা উদ্বোধনী জুটির রেকর্ডও গড়ে ফেললেন হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক।

২৭ ওভার শেষে দুজনের জুটির রান ১৫৯। ২০০২ সালে বেনোনিতে গ্যারি কারস্টেন ও হার্শেল গিবসের ১৫৫ রানের জুটি ছিল আগের রেকর্ড।

৮৬ রানে খেলছেন ডি কক, ৭১ রানে আমলা।

আমলার পঞ্চাশ

কুইন্ট ডি ককের পর হাফ সেঞ্চুরি করলেন হাশিম আমলাও। সময়ের হিসেবে ডি ককের পেছনে থাকলেও গতিতে এগিয়ে, পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৪৮ বলে।

বলের চেয়ে রান বেশি হলেও বাউন্ডারি মাত্র চারটি! কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়েই দারুণ স্ট্রাইক রেটে হাফ সেঞ্চুরি।

এর মধ্যেই ৭ জন বোলার ব্যবহার করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি। লাভ খুব বেশি হয়নি।

১৯ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ১১৩। ৬০ রানে খেলছেন ডি কক, ৫২ রানে আমলা।

শুরুর জুটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার একশ

রান তাড়ায় অনায়াসেই এগিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্বোধনী জুটিতেই হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক দলকে এনে দিয়েছেন শতরান।

১৭ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে ১০৪।

৭৫ ইনিংস এক সঙ্গে ব্যাট করে দুজনের এটি দশম শতরানের জুটি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রেকর্ডটি এখন এককভাবে এই জুটির। ৬৬ ইনিংসে ৯টি শতরানের জুটি ছিল হার্শেল গিবস ও গ্যারি কারস্টেনের।

ডি ককের ফিফটি

দুই ওপেনার এগোচ্ছিলেন সমান তালে। ১৫তম ওভারে এক পর্যায়ে দুজনের রানই ছিল সমান। ৪৫ রানে পাশাপাশি, ৪৬ ও ৪৭ রানেও। শেষ পর্যন্ত আগে অর্ধশতক ছুঁলেন ডি কক।

সাইফুদ্দিনকে বাউন্ডারিতে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৫৬ বলে। ওয়ানডেতে এটি তার ১৫তম।

পঞ্চাশ রানের জুটিতে শুরু
 
দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম উদ্বোধনী জুটি আরও একবার দলকে এনে দিলেন ভালো শুরু। হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক গড়লেন আরও একটি অর্ধশত রানের জুটি।
 
ইনিংসের প্রথম বলেই রুবেলকে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেছিলেন ডি কক। এরপর বাংলাদেশের তিন পেসারের কেউ খুব একটা ভোগাতে পারেননি দুই প্রোটিয়া ওপেনারকে। 
 
৯ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান বিনা উইকেটে ৫৫।

২৭৮ রানে থামল ইনিংস

শেষ ওভারে রাবাদাকে চার ও ছক্কা মেরে শেষ বলে আউট হলেন সাইফ উদ্দিন। অভিষিক্ত অলরাউন্ডার আউট হয়েছেন ১১ বলে ১৬ রানে। রাবাদা শেষ করেছেন ৪ উইকেট নিয়ে। 

৫০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৭ উইকেটে ২৭৮। শেষ ১০ ওভারে ৭৬ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অবশ্য এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে আড়াইশ ছুঁতে পেরেছিল একবারই। ২০০৭ বিশ্বকাপের সুপার এইটে গায়ানায় তুলেছিল ৮ উইকেটে ২৫১।

বাংলাদেশের ইনিংসের মেরুদণ্ড মুশফিকের ইনিংস। চারে নেমে ১১০ রানে অপরাজিত ১১৬ বলে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৮/৭ (ইমরুল ৩১, লিটন ২১, সাকিব ২৯, মুশফিক ১১০*, মাহমুদউল্লাহ ২৬, সাব্বির ১৯, নাসির ১১, সাইফ উদ্দিন ১৬; রাবাদা ৪/৪৩, প্যাটারসন ০/৬৯, তাহির ১/৪৫, প্রিটোরিয়াস ২/৪৮, ফেলুকওয়ায়ো ০/৬০, দুমিনি ০/৮)

নাসিরের বিদায়

আগের বলেই বেরিয়ে এসে কাভার দিয়ে চার মেরেছিলেন রাবাদাকে। পরের বলেই আউট নাসির হোসেন। শর্ট বলে পুল করেছিলেন, জোর পাননি শটে। বৃত্তের ভেতরই সোজা মিড উইকেটে আমলার হাতে।

৮ বলে ১১ করে ফিরলেন নাসির। ৪৭.২ ওভারে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ২৫৩।

মুশফিকের দারুণ সেঞ্চুরি

টেস্ট সিরিজের বিতর্ক ঘেরা সময়টা পেরিয়ে রঙিন পোশাকের প্রথম ম্যাচেই উজ্জ্বল মুশফিক। উপহার দিলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।

১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০৮ বলে মুশফিক ছুঁয়েছেন সেঞ্চুরি।

মুশফিকের এটি পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম। দেশের বাইরে মাত্র দ্বিতীয়। দেশের বাইরে আগের সেঞ্চুরিটি ছিল সেই ২০১১ সালে, জিম্বাবুয়েতে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের প্রথম সেঞ্চুরিও এটি। সৌম্য সরকারের ৯০ ছিল আগের সর্বোচ্চ।

ফিরলেন সাব্বির

সময়ের দাবি ছিল শট। সাব্বির আউট হলেন সেই চেষ্টায়। রাবাদাকে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন কাভার দিয়ে। বল গেল সীমানায় ফিল্ডারের হাতে।

একটি করে চার ও ছয়ে ২০ রান করে আউট হয়েছেন সাব্বির। বল খেলেছেন ২১টি।

বাংলাদেশ ৪৫.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২৩৭।

এবার পারলেন না মাহমুদউল্লাহ

বেরিয়ে এসে রাবাদাকে ছক্কা মেরেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু পারলেন না প্রিটোরিয়াসকে মারতে। মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন প্রিটোরিয়াস।

মাহমুদউল্লাহকে বেরিয়ে আসতে দেখে স্লোয়ার শর্ট বল করেছিলেন প্রিটোরিয়াস। তাতেই টাইমিংয়ে গড়বড়। বল উঠেছে শুধু আকাশে। বৃত্তের ভেতরই ক্যাচ নিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।

২৬ রানে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ। ভাঙল ৬৯ রানের জুটি। বাংলাদেশ ৩৮.১ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৫।

আরেক জুটির পঞ্চাশ
 
সাকিবকে হারানোর ধাক্কা অনেকটাই সামাল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটিতে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের তৃতীয় সফলতম জুটি আরও একবার পথ দেখাচ্ছে দলকে। চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটিতে হয়েছে পঞ্চাশ।
 
মুশফিক তো শুরু থেকে্ই খেলছেন দারুণ। আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে মাহমুদউল্লাহকেও। ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার কাগিসো রাবাদাকে বেরিয়ে এসে দুর্দান্ত এক ছক্কা মেরেছেন তিনি।
 
দুজনের এটি দ্বাদশ অর্ধশত রানের জুটি। সেঞ্চুরি জুটি আছে আরও দুটি।
  
বাংলাদেশের রান ৩৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৮। ৬৬ রানে খেলছেন মুশফিক, ১৯ রানে মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশের দেড়শ

সাকিব আল হাসান আউট হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন মুশফিক। তাহিরের বলে মাহমুদউল্লাহর দারুণ এক বাউন্ডারিতে দলের রান স্পর্শ করেছে দেড়শ।

৩০ ওভারে ১৫০ রান বাংলাদেশের, উইকেট পড়েছে ৩টি। ৫৪ রান নিয়ে খেলছেন মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ৫। অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ২৪।

মুশফিকের পঞ্চাশ

প্যাটারসনের বলে এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারলেন কাভার দিয়ে। বল সীমানার ওপারে। ছক্কায় পঞ্চাশ ছুঁলেন মুশফিকুর রহিম। লেগেছে ৫২ বল।

মুশফিক উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই গতি পেয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। জুটির সঙ্গী সাকিবকে হারালেও কমেনি তার ব্যাটের ধার ও গতি। খেলেছেন দারুণ সব শট।

মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এটি ২৭তম ফিফটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলা আগের ৫ ইনিংস মিলিয়ে করতে পেরেছিলেন ৩৬ রান!

জুটি ভাঙলেন তাহির

সাকিব-মুশফিকের জুটি যখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছে দারুণভাবে, তখনই দক্ষিণ আফ্রিকাকে ম্যাচে ফেরালেন ইমরান তাহির। সাকিবকে ফিরিয়ে ভাঙলেন জুটি।

তাহিরের গুগলি না বুঝেই হয়ত ড্রাইভ করেছিলেন সাকিব। ব্যাটের কানায় লেগে বল স্লিপে হাশিম আমলার হাতে। জুটি গড়ে ওঠার পরও স্লিপ রাখায় কৃতিত্ব দিতে হবে অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসিকেও।

২৯ রানে আউট হলেন সাকিব। ২৬ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১২৬।

জুটির পঞ্চাশ

জুটি ভাঙতে জেপি দুমিনিকে আক্রমণে এনেছেন ফাফ দু প্লেসি। তবে দুমিনির ওভারেই অর্ধশতক হলো সাকিব-মুশফিক জুটির।

বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে জুটি আরও একবার দারুণভাবে এগিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশকে। তৃতীয় উইকেটে দুজন জুটি বেঁধেছেন এই প্রথম। তাতেই ছাড়িয়ে গেছেন পঞ্চাশ। সব মিলিয়ে দুজনের এটি ত্রয়োদশ অর্ধশত রানের জুটি। শতরানের জুটি আছে চারটি। দুটিই বাংলাদেশের রেকর্ড।

২৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১২০। ৩১ রানে খেলছেন মুশফিক, ২৮ রানে সাকিব।

শতরান পেরিয়ে

ইমরুল কায়েস আউট হওয়ার পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন মুশফিকুর রহিম। দুজনে মিলে বেশ ভালোভাবেই টানছেন দলকে।

তিন নম্বরে নামা সাকিব নিজের সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ছেড়ে অনেকটাই ধীরে খেলছেন। মনোযোগ তার সিঙ্গেলসে। মুশফিক অবশ্য খেলছেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। মেরেছেন দারুণ তিনটি চার।

২২ ওভার শেষে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১০১। তৃতীয় উইকেট জুটির রান ৩৪।

সাকিবের ৫ হাজার

মাইলফলক ছুঁতে প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। তিনে নামা সাকিব আল হাসান সেটি ছুঁয়ে ফেললেন ইনিংসের ২০তম ওভারে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁলেন ৫ হাজার ওয়ানডে রান।

দুইশ উইকেট ছাড়িয়েছেন সাকিব বেশ আগেই। ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান ও ২০০ উইকেটের ‘ডাবল’ সবচেয়ে কম ম্যাচে ছুঁলেন সাকিবই, মাত্র ১৭৮ ম্যাচে।

বাজে শটে আউট ইমরুল

লেগ স্টাম্পের বাউন্সার টেস্ট সিরিজেও বেশ ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। ওয়ানডের শুরুতেও একই অবস্থা। আউট হলেন ইমরুল।

লেগ স্টাম্পে থাকা শর্ট বল হালকা খেলে ফাইন লেগে সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন ইমরুল। বল ব্যাটে আলতো ছুঁয়ে লেগে গেল কিপারের হাতে।

অস্বস্তিকর শুরুর পর যখন কেবল হাত খুলতে শুরু করেছেন তখনই আউট ইমরুল। প্রিটোরিয়াসের বলে ফিরলেন ৩১ রানে। বাংলাদেশ ১৪ ওভারে ২ উইকেটে ৬৭।

ইমরুলের রক্ষা

দক্ষিণ আফ্রিকা দশম ওভারেই আক্রমণে আনল স্পিন। প্রথম ওভারেই প্রায় সফল হয়েই গিয়েছিলেন ইমরান তাহির। কিন্তু বেঁচে গেলেন ইমরুল।

গুগলিতে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন ইমরুল। বল তার গ্লাভসে লেগে উঠে যায় বাতাসে। তবে কিপার ও স্লিপ, দুজন থেকেই বল ছিল একটু দূরে। ১৬ রানে রক্ষা পেলেন ইমরুল।

১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৪৪।

তিনে সাকিব

তিন নম্বর পজিশনটি বেশ কিছুদিন ধরেই হয়ে আছে বাংলাদেশের সমস্যা। সাব্বির রহমানকে নিয়ে পরীক্ষা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার নতুন চমক। তিনে সাকিব আল হাসান!

টি-টোয়েন্টিতে বেশ কবার তিনে খেললেও ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আগে একবারই তিনে ব্যাট করেছিলেন সাকিব। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তিনে খেলার কারণ ছিল ১৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটি। সেবার প্রথম বলেই বোল্ড হয়েছিলেন সাকিব।

লিটনের বিদায়

এক পাশে দারুণ খেলছিলেন লিটন দাস, আরেক পাশে ধুঁকছিলেন ইমরুল কায়েস। অথচ প্রথমে আউট হলেন লিটনই।

দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন বলের দুই বোলারের পারফরম্যান্সও বাংলাদেশের শুরুর মত। এক পাশে দুর্দান্ত রাবাদা, আরেক পাশে বিবর্ণ প্যাটারসন। তবে এখানে উল্টো হয়নি, প্রথম উইকেটের দেখা পেলেন রাবাদাই।

লেংথে পিচ করে বেরিয়ে যাওয়া দারুণ ডেলিভারি ছোবল দিল লিটনের ব্যাটে। স্লিপে দারুণ ক্যাচ নিলেন ফাফ দু প্লেসি। ক্যাচ সঠিক ছিল কিনা বুঝতে তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নিলেন আম্পায়াররা। মাঠের বড় পর্দায় শুরুতে ‘নট আউট’ দেখানোয় সংশয় জাগলেও পরে দেখানো হলো আউট।

২১ রানে ফিরলেন লিটন। ৮.৫ ওভারে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৪৩।

মন্থর শুরু

কাগিসো রাবাদা শুরু করেছিলেন ওয়াইড দিয়ে। তবে লাইন-লেংথ খুঁজে পান দ্রুতই। আরেক পাশে অভিষিক্ত ডেন প্যাটারসনের শুরুটাও খারাপ হয়নি। বাংলাদেশের দুই ওপেনার খুব বেশি সুযোগ পাননি শট খেলার। ৫ ওভারে রান বিনা উইকেট ১৬।

প্রথম ৫ ওভারে বাউন্ডারি হয়েছে দুটি। ৩ ওভার বোলিংয়ে মাত্র ৪ রান দিয়েছেন রাবাদা।

ওপেনিংয়ে ইমরুল-লিটন

তামিম ইকবাল নেই চোটে, একাদশে জায়গা পাননি সৌম্য সরকারও। নতুন উদ্বোধনী জুটিতে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। প্রথমবার একসঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি বেঁধেছেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস।

প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডে খেলছেন লিটন। দশম ওয়ানডে খেলতে নামা ব্যাটসম্যান আগে ওপেন করেছিলেন একবারই। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে।

প্যাটারসনের প্রথম

দক্ষিণ আফ্রিকা দলেও অভিষেক হচ্ছে একজনের। প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামছেন ডেন প্যাটারসন। ২৮ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার খেলেছেন চারটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।

দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি কক, ফাফ দু প্লেসি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ডেভিড মিলার, জেপি দুমিনি, ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো, কাগিসো রাবাদা, ডেন প্যাটারসন, ইমরান তাহির।

সাইফ উদ্দিনের অভিষেক

তিন পেসারের পাশাপাশি বাংলাদেশ একাদশে পেস বোলিং অলরাউন্ডারও আছেন একজন। দেশের ১২৫তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেক হচ্ছে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের।

দেশের মাটিতে গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন সাইফ উদ্দিন। গত এপ্রিলে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। এরপর হাই পারফরম্যান্স দলের হয়ে ব্যাটে-বলে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড সফরে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ওয়ানডে অভিষেক।

বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন।

টস জিতে ব্যাটিং

কয়েন ছুড়লেন ফাফ দু প্লেসি, মাশরাফি বিন মুর্তজা ডাকলেন ‘হেড’। জিতলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। টেস্ট সিরিজে যেটি নিয়ে ছিল সবচেয়ে বেশি আলোচনা, সেটির পুনরাবৃত্তি হলো না এবার। ব্যাটিং নিল বাংলাদেশ।

নেই তামিমও

মুস্তাফিজকে হারানোর পর আরেকটি বড় ধাক্কা। আগের দিন যদিও বলা হয়েছিল, তামিম ইকবালের খেলার সম্ভাবনা বেশি, ম্যাচের আগে এলো দুঃসংবাদ। চোট পুরোপুরি কাটিয়ে না উঠতে পারায় প্রথম ওয়ানডে খেলতে পারছেন না তামিমও।

দলের সেরা ব্যাটসম্যান ও সেরা বোলারকে ছাড়াই লড়াইয়ে নামছে বাংলাদেশ। টেস্টের মত ওয়ানডেতেও পাওয়া যাচ্ছে না সেরা দল। 

দুঃস্বপ্নের অতীত

টেস্টের মত ওয়ানডেতেও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের অতীতটা ভুলে যাওয়ার মত। ১২টি ওয়ানডে খেলে ১০টিতেই হার, দুটি ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে।

প্রথম ওয়ানডের ভেন্যু কিম্বার্লির ডায়মণ্ড ওভালে দুটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। এই মাঠে ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ও ২০০৩ বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেই তারা হেরেছে ৭ উইকেটে।

ম্যাচের আগেই ধাক্কা

ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগেই বড় এক ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডের আগের দিন অনুশীলনে পা মচকে গেছে মুস্তাফিজুর রহমানের। বোলিং আক্রমণের সবচেয়ে ক্ষুরধার অস্ত্রকে ছাড়াই তাই মাঠে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

প্রথম ম্যাচে নিশ্চিত করেই নেই। বাকি দুই ওয়ানডেতে মুস্তাফিজ খেলতে পারবেন কিনা, সেটি বোঝা যাবে পরে।

আক্রমণের মন্ত্রে মাশরাফি

শরীরী ভাষায় জড়তা, আচরণের সংশয়-অস্বস্তি। আত্মবিশ্বাসের প্রবল ঘাটতি। টেস্ট সিরিজ জুড়ে বাংলাদেশ ছিল এমনটিই। তবে ওয়ানডে সিরিজের শুরুতেই সব জড়তা ঝেড়ে ফেলতে চান মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক দিয়েছেন আক্রমণের ডাক।

ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগের দিন মাশরাফি বলেছেন, “দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রক্ষণাত্মক ক্রিকেট খেলার প্রশ্নই উঠে না। যদি এমন ভাবনা থাকে, নিজেদের দিনে আমরা ওদের হারাতে পারব, আমার মনে হয় তাহলে আমরা সুযোগই পাব না। ব্যাটিং-বোলিং যাই করি এখান থেকে বের হয়ে আসার একমাত্র পথ হচ্ছে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা।”