সংবাদ সম্মেলনে আবেগী মুশফিক

টেস্টে দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে সাধারণত আসেন সেরা পারফরমার। সেই হিসাবে ২ উইকেট নেওয়া শুভাশিস রায় চৌধুরী আসতে পারেন বলে ধারণা করছিলেন সবাই। অবাক করে দিয়ে আসেন মুশফিকুর রহিম। দলের ব্যর্থতার দিনে দেখা গেল আবেগী এক অধিনায়ককে।

ক্রীড়া প্রতিবেদক ব্লুমফন্টেইন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2017, 07:12 PM
Updated : 6 Oct 2017, 07:31 PM

দল রানের পাহাড়ে চাপা পড়েছে, সেই দুর্ভাবনা স্পষ্ট বোঝা যায় মুশফিকের শরীরি ভাষায়। হতাশ, ম্লান অধিনায়ক দায় নিলেন নিজের কাঁধে। 

ব্লুমফন্টেইন টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৩ উইকেটে ৪২৮ রান। বোলিং ব্যর্থতায় আরও একবার প্রশ্নবিদ্ধ অধিনায়কের টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত।

প্রসঙ্গটা উঠতেই মুশফিকের কণ্ঠে ফুটে উঠল অসহায়ত্ব। কথা বলতে গিয়ে একটু যেন কেঁপেও উঠলেন অধিনায়ক।

“আমার তো মনে হচ্ছে, টসে জেতাটাই ভুল হয়ে গেছে ভাই। শেষ দুইটা ম্যাচে যা হচ্ছে, জীবনে কখনও এমন হয়নি- মনে হচ্ছে টস হারলেই ভালো হয়।”

দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে অধিনায়ক বলেছিলেন, ফল নিয়ে ভাবার দরকার নাই- সবাই নিজের সেরা চেষ্টা করুক। সেই বার্তাতেও খুব একটা কাজ হয়নি। দিন শেষে দলের ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধেই নিলেন তিনি।

“অবশ্যই এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যর্থতা। আমি হয়তো দলকে সেভাবে উৎসাহ দিতে পারছি না। বা বোলারদের সেভাবে গাইড করতে পারছি না। বোলাররা চেষ্টা করছে হয়তোবা, হয়নি। এটা আমার ব্যর্থতা।”

বোলারদের গাইড করার প্রসঙ্গ ধরেই আসে লম্বা সময় ধরে তার সীমানায় ফিল্ডিং করার কথা। সহ-অধিনায়ক মাঠে নেই, চোটের জন্য খেলছেন না। অধিনায়ক যদি সীমানায় ফিল্ডিং করেন, বোলারদের সঙ্গে কথা বলবে কে?

মুশফিক জানান, টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়ায় সীমানায় ফিল্ডিং করতে হয় তাকে। তার কাছ থেকে রান পেয়ে যায় প্রতিপক্ষ, ঝুঁকি থাকে ক্যাচ ফস্কানোর।

উইকেট দেখে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার শন পোলক বলেছিলেন, টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার কথা। মুশফিক টস জিতে ফিল্ডিং নেন কিন্তু সেই সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি তার বোলাররা। 

“এটা আমারও ব্যর্থতা হতে পারে। আমি হয়তো ঠিক মতো বার্তাটা দিতে পারিনি। মাঠে আমি হয়তো বোলিং করে জায়গায় ফেলতে পারিনি! এছাড়া তো আমার আর কিছু বলার নেই।”

কোর্টনি ওয়ালশরের মতো কিংবদন্তি পেসার বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক এই পেসার এখনও যখন নেটে বোলিং করেন, তাকে সামলাতে বেগ পেতে হয় ব্যাটসম্যানদের। শিষ্যদের শেখাতে পারেন, কিন্তু মাঠে নেমে তো আর তিনি কাজটা করে দিয়ে আসতে পারেন না। এমন কোচ থাকার পরও বোলাররা শিখতে না পারায় হতাশ মুশফিক।

“আমাদের এতো ভালো ভালো কোচ আছে। এখন আমাদের বোলিং কোচ নিজে গিয়ে তো আর মাঠে বোলিং করবেন না।... কেউ যদি শিখতে না পারে, বাস্তবায়ন না করতে পারে, সেটাকে আমি আমাদের ব্যর্থতা বলব।”

টস জিতে যখন ফিল্ডিং নিয়েছিলেন তখন কি ভেবেছিলেন অধিনায়ক।

“অনেক বড় একটা সুযোগ ছিল। ওরা যদি নতুন বলটা ব্যবহার করতে পারত, তাহলে শুরুতে দুই-তিনটা উইকেট পড়তে পারতো। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হয়নি, এর বেশি আর কিছু বলার নেই।”

“বোলিংয়ের জন্য শুরুতে এটা খুব ভালো উইকেট ছিল। কিন্তু আমাদের বোলাররা সেই সুবিধাটা নিতে পারেনি। প্রথম সেশনে আমরা অনেক রান দিয়েছি। হয় ওরা খুব ফুল লেংথে বল করেছে নয়তো অনেক বেশি টেনে করেছে। ওরা সঠিক-লাইন লেংথ খুঁজে পায়নি প্রথম সেশনে।”