বাংলাদেশের সামনে বিশাল লক্ষ্য

দিনের শুরুতে উইকেট পাওয়ার সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। ফাফ দু প্লেসি ও টেম্বা বাভুমার দুই ফিফটিতে রান বাড়িয়ে পচেফস্ট্রুম টেস্টে বাংলাদেশকে আরেকবার অলআউট করার জন্য যথেষ্ট ওভার রেখে ইনিংস ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতপচেফস্ট্রুম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2017, 01:06 PM
Updated : 1 Oct 2017, 02:19 PM

প্রথম টেস্টে জিততে ৪২৪ রানের বড় লক্ষ্য পেয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল। চতুর্থ ইনিংসে এত রান কখনও করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৮ সালে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা ৪১৩ এখনও সেরা। লক্ষ্য তাড়া করে জেতার রেকর্ড তার চেয়ে অনেক পিছনে। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিতেছিল ২১৭ রান করে।

জিততে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে। ম্যাচ বাঁচানোর পথও ভীষণ কঠিন। টিকে থাকতে হবে ১৪১ ওভার। চতুর্থ দিন ৫১ ওভার হাতে রেখে ৬ উইকেটে ২৪৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছেন অধিনায়ক দু প্লেসি।

চতুর্থ দিন দলের সেরা বোলার ছিলেন মুমিনুল হক। আগের ২৩ ম্যাচে ১ উইকেট নেওয়া অনিয়মিত স্পিনার এবার নিয়েছেন তিনটি। পরপর তিন ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছেন দু প্লেসি, বাভুমা ও কুইন্টন ডি কককে। তবে তার আগেই স্কোর বোর্ডে যথেষ্ট রান তুলে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা।

সেনওয়েস পার্কে রোববার ২ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রানের বিশাল লিড পাওয়ায় তারা এগিয়ে ছিল ২৩০ রানে।

আগের দিন ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। চতুর্থ দিন শুরুতে মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ কাটারে উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন হাশিম আমলা। তারপরও এদিন রানের গতিতে বাঁধ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

শুরুতে নড়বড়ে টেম্বা বাভুমাকে শফিউল ইসলামের বলে ৮ রানে জীবন দেন ইমরুল কায়েস। প্রথম ২৮ বলে ৮ রান করা বাভুমাকে যেন পাল্টে দেয় এই ‘উপহার’। এরপরই বদলে যায় খেলা ধরন। দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনিও। শুরু থেকে রান তোলার মনোযোগী ছিলেন দু প্লেসি। জমে যায় তাদের জুটি। ওভার প্রতি রান আসে পাঁচের ওপরে।

স্বাগতিকরা লাঞ্চের আগেই এগিয়ে যায় রানে ৩৭৯। দিনের প্রথম সেশনে কেবল আমলার উইকেট হারিয়ে ২৯.১ ওভারে ১৪৯ রান যোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

লাঞ্চের পর সাফল্য এনে দেন অনিয়মিত বাঁহাতি স্পিনার মুমিনুল। দু প্লেসিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ভাঙেন ১৪২ রানের জুটি। অধিনায়কের ১০১ বলে খেলা ৮১ রানের ইনিংসটি গড়া ৬টি চার ও একটি ছক্কায়।

মুমিনুলের পরের ওভারে লিটন দাসের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান ৭টি চারে ৭১ রান করা বাভুমা। তিনি প্যাডেল সুইপ করবেন বুঝতে পেরে আগেই সরতে থাকেন উইকেটরক্ষক। সুফলও পান, ক্যাচ জমা পড়ে গ্লাভসে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলেও বল ছোটেনি।

এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন ডি কক। বলর কাছাকাছি যেতে পারেননি। মুমিনুলের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল গ্লাভসে জমিয়ে স্টাম্প ভাঙেন লিটন। দ্রুত তিন উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কেশভ মহারাজ ছক্কা হাঁকানোর পর ইনিংস ঘোষণা করেন ফাফ দু প্লেসি। সে সময় ৪২৩ রানে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।

স্কোর বোর্ডে যথেষ্ট রান আছে, যথেষ্ট সময়, ওভার আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য কাজটা তুলনামূলক সহজ। বাংলাদেশের সামনে কঠিন পথ। দুই ইনিংসেই নিজেদের কাজটা করতে পারেননি বোলাররা। প্রথম ইনিংসে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। এবার তাদের সামনে দলকে বাঁচানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৯৬/৩ ডি.

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩২০

দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৫৬ ওভারে ২৪৭/৬ ডি. (মারক্রাম ১৫, এলগার ১৮, আমলা ২৮, বাভুমা ৭১, দু প্লেসি ৮১, ডি কক ৮, ফেলুকওয়ায়ো ৬*, মহারাজ ১৯*; মিরাজ ০/৬৯, শফিউল ১/৪৬, মুস্তাফিজ ২/৩০, তাসকিন ০/২৯, সাব্বির ০/২৫, মাহমুদউল্লাহ ০/২১, মুমিনুল ৩/২৭)