হাজার সাতেক দর্শক ধারণক্ষমতার সেনওয়েস পার্কে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা দুইটায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম ম্যাচ। ১৫ বছরের মধ্যে এটাই হবে এই মাঠে প্রথম টেস্ট।
দেশের মাটিতে উপমহাদেশের দলগুলোর বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ইদানিং অজেয়। ২০১১ সালের পর হারেনি কোনো ম্যাচ। বাংলাদেশের রেকর্ড তো খুবই বিব্রতকর। চার টেস্ট খেলে চারটিতেই ইনিংস পরাজয়।
এবার বাংলাদেশ দলে নেই সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের অভাব দারুণভাবে অনুভব করবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা দলেও নেই ডেল স্টেইন, ভার্নন ফিল্যান্ডার, এবি ডি ভিলিয়ার্স। শক্তির বিচারে তাই খুব এগিয়ে নেই স্বাগতিকরা, যতটা এগিয়ে তারা কন্ডিশনের বিবেচনায়।
“আমরা নিউ জিল্যান্ডে একই ধরনের উইকেটে খেলেছি। ঠিক মতো প্রয়োগ করতে পারলে বাউন্সার সামলাতে না পারার কোনো কারণ নেই। বেনোনিতে প্রস্তুতি ম্যাচেও আমরা বাউন্সার ঠিকঠাক খেলেছি।”
ব্যাটিংয়ের চেয়ে অধিনায়কের দুর্ভাবনা বেশি বোলিং নিয়ে। সহায়ক কন্ডিশনে খেলার সুবিধা নিতে পারছেন না পেসাররা। ২০১৩ সালের পর টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো পেসার। একটানা সঠিক লাইন-লেংথে বল করে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ঘাটতি অনেক দিন ধরেই চিন্তার কারণ।
দক্ষিণ আফ্রিকার একাদশ ঠিক হবে ম্যাচের দিন পিচ দেখার পর। এই মাঠ তাদেরও খুব চেনা নয়। স্থানীয় কোনো ক্রিকেটার নেই বর্তমান দলে। সেনওয়েস পার্কে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই দলটির কারোরই। এই মাঠের একমাত্র টেস্ট হয়েছিল সেই ২০০২ সালে। সেই ম্যাচে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশই। স্বাগতিকদের জন্য অচেনা মাঠের উইকেট দেখে এসে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছেন মুশফিক।
“আজকে উইকেট দেখে মনে হল, উইকেট একটু বেশি শুকনা। মনে হয় না, আহমরি কোনো মুভমেন্ট পাওয়া যাবে। আমার মনে হয়, খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট হবে। দুই-তিন দিন পর থেকে হয়তো স্পিনাররা একটু সহায়তা পাবে। যা আমাদের জন্য ভালো হবে। আমরা ভালো শুরু করতে চাই আর তার মোমেন্টামটা ধরে রাখতে চাই।”
দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরিষ্কার ফেভারিট ধরে এগোচ্ছেন মুশফিক। চাপ সরিয়ে দিচ্ছেন দু প্লেসিদের কাঁধে।
“এর আগে তো আমরা দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডকে হারাতে পারিনি। এমন কেউ চিন্তাও করেনি, কিন্তু এটা তো হয়েছে। অবশ্যই হবে, আমার মনে হয় না এটা অসম্ভব। যদি ভাগ্য আমাদের পক্ষে থাকে তাহলে অবশ্যই ভালো একটা টেস্ট ম্যাচ উপহার দিতে পারবো।”
দু প্লেসির কাছে এটা বাংলাদেশের নিজেদের প্রমাণের বড় সুযোগ। মুশফিকও সেভাবেই দেখেন। চলতি বছরে এটা তাদের চতুর্থ সফর। সেই সফরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান পচেফস্ট্রুমে।
“আমরা ভারতে, নিউ জিল্যান্ডে প্রথম টেস্ট খুব ভালো খেলেছি। ভারতে তিন দিন খুব ভালো খেলেছি। শ্রীলঙ্কায় দ্বিতীয় টেস্ট জিতেছি। আমাদের এখানে আরেকটু বেশি সময় ধরে ভালো খেলতে হবে। প্রতিটি সেশন ভালো খেলে এগিয়ে যেতে হবে।”
কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ নিয়ে বেশি না ভেবে বাংলাদেশ তাই বেশি মনোযোগ দিতে চায় নিজেদের দিকে। অধিনায়ক ব্যাটসম্যানদের কাছে চান রান, বোলারদের কাছে উইকেট। তাহলেই কেবল জেতা সম্ভব।