ব্যাটে-বলে ভারতকে জেতালেন পান্ডিয়া

দলের বিপর্যয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে পাল্টা আক্রমণে দুর্দান্ত ইনিংস। বল হতে প্রথম দুই ওভারেই উইকেট দুটি। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে হার্দিক পান্ডিয়া গড়ে দিলেন ম্যাচের ভাগ্য। বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬ রানে হারিয়েছে ভারত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2017, 05:09 PM
Updated : 17 Sept 2017, 05:09 PM

রোববার চেন্নাইতে পান্ডিয়া ও মহেন্দ্র সিং ধোনির দারুণ দুটি ইনিংসে ভারত তুলেছিল ২৮১ রান। বৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১ ওভারে ১৬৪। তুলতে পারে তারা ১৩৭।

পান্ডিয়ার ৬৬ বলে ৮৩ রানের ইনিংস বদলে দেয় ভারতীয় ইনিংসের গতিপথ। ৮৮ বলে ৭৯ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত দলকে টেনে নেন ধোনি।

এই দুজনের জুটির আগে রীতিমত ধুঁকছিল টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত। উইকেট থেকে বেশ মুভমেন্ট আদায় করে নেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন বলের দুই বোলার প্যাট কামিন্স ও নাথান কোল্টার-নাইল।

দুজনই ভালো বোলিং করলেও উইকেট পান কোল্টার-নাইল। শুরুতেই তিন উইকেট নিয়ে ভরতকে দেন জোর ধাক্কা। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে আরও বেড়িয়ে যাওয়া বল তাড়া করে আউট অজিঙ্কা রাহানে। পয়েন্টে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অসাধারণ রিফ্লেক্স ক্যাচে শূন্য রানে বিদায় বিরাট কোহলি। মনিশ পান্ডেও খুলতে পারেননি খাতা।

ষষ্ঠ ওভারে ভারত তখন ৩ উইকেটে ১১। দলকে খানিকটা টানেন রোহিত শর্মা ও কেদার যাদব। তবে দুজনই আউট হন থিতু হয়ে। দুজনকেই শর্ট বলে ফেরান মার্কাস স্টয়নিস।

৮৬ রানে নেই ভারতের ৫ উইকেট। ক্রিজে শেষ স্বীকৃত জুটি ধোনি ও পান্ডিয়া। দলকে উদ্ধারও করেন তারা দুজনই।

শুরুতে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে থিতু হন দুজন। এক-দুই করে টানেন দলকে। এরপর অ্যাডাম জ্যাম্পাকে তুলোধুনো করে হাত খোলেন পান্ডিয়া। টানা তিন ছক্কাসহ এক ওভারে নেন ২৪ রান।

পরে আরেকটি ছক্কা মারেন জ্যাম্পাকে। শেষ পর্যন্ত আউটও হন জ্যাম্পার বলেই। ৫টি চার ও ছক্কায় ৮৩।

ধোনির রান তখন ৬২ বলে ৩৭। প্রথম বাউন্ডারির দেখা পেতে লেগে যায় ৬৭ বল! তবে শেষ দিকে খেলেছেন দুর্দান্ত সব শট। চারটি চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ করে আউট হয়েছেন শেষ ওভারে।

আটে নেমে ভুবনেশ্বর কুমারের ৩০ বলে ৩২ রানের ইনিংসটিও ছিল মহামূল্য। ভারত তোলে ২৮১ রান।

ইনিংস বিরতিতেই নামে বৃষ্টি। একবার থামলে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ৩৭ ওভারে ২৩৮। খেলা শুরু হ্য়ার আগে আবার বৃষ্টি। এবার লক্ষ্য ২১ ওভারে ১৬৪।

টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় নিলে খুব কঠিন নয়। তবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গতিই পেল না শুরু থেকে। অভিষেকে ওপেনিংয়ে নামা হিল্টন কাটরাইট ব্যাটে-বলেই করতে পারছিলেন না। তাকে বোল্ড করেই প্রথম ব্রেক থ্রু দেন জাসপ্রিত বুমরাহ।

এরপর ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও পান্ডিয়ার ঝলক। নিজের পরপর দুই ওভারে ফেরান স্টিভেন স্মিথ ও ট্রাভিস হেডকে। ভরসা হয়ে টিকে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। তাকে বেশ কিছুক্ষণ ভুগিয়ে শেষে দারুণ ডেলিভারিতে ফেরান কুলদিপ যাদব।

টর্নেডো ব্যাটিংয়ে মাঝে একটু আশা দেখিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কুলদিপের টানা চার বলে মারেন এক চার ও তিন ছক্কা। লেগ স্পিনার যুঝবেন্দ্র চাহালকেও ওড়ান গ্যালারিতে। তবে খুব বেশি স্থায়ী হয়নি সেই ঝড়। চাহালকে উড়িয়ে মারতে গিয়েই আউট ধরা পড়েন ১৮ বলে ৩৯ রান করে।

অস্ট্রেলিয়ার শেষ আশাও শেষ তখনই। জেমস ফকনারের রানে কেবল কমেছে একটু ব্যবধান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভারে ২৮১/৭ (রাহানে ৫, রোহিত ২৮, কোহলি ০, মনিশ ০, কেদার ৪০, ধোনি ৭৯, পান্ডিয়া ৮৩, ভুবনেশ্বর ৩২*, কুলদিপ ০*; কামিন্স ০/৪৪, কোল্টার-নাইল ৩/৪৪, ফকনার ১/৬৭, স্টয়নিস ২/৫৪, জ্যাম্পা ১/৬৬)

অস্ট্রেলিয়া: ১৩৭/৯ (লক্ষ্য ২১ ওভারে ১৬৪) (ওয়ার্নার ২৫, কার্টরাইট ১, স্মিথ ১, হেড ৫,ম্যাক্সওয়েল ৩৯, স্টয়নিস ৩, ওয়েড ৯, ফকনার ৩২*, কামিন্স ৯, কোল্টার-নাইল ২, জ্যাম্পা ৫*; ভুবনেশ্বর ১/২৫, বুমরাহ ১/২০, পান্ডিয়া ২/২৮, কুলদিপ ২/৩৩, চাহাল ৩/৩০)।

ফল: ভারত ২৬ রানে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ভারত ১-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: হার্দিক পান্ডিয়া