বিবর্ণ ব্যাটিংয়ে শুরু দিনটি শেষ হলো বোলিং-ফিল্ডিংয়ের হতাশায়। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনটি পুরোপুরিই অস্ট্রেলিয়ার। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ৩০৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে নিজেরা দিন শেষ করেছে ২ উইকেটে ২২৫ রানে। পিছিয়ে আর ৮০ রান, হাতে এখনও ৮ উইকেট।
আগের টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ওয়ার্নার এবার অপরাজিত ৮৮। ২৬৬ মিনিট উইকেটে থেকেও সেঞ্চুরি করতে পারেননি ওয়ার্নারের মত ব্যাটসম্যান, চার মাত্র চারটি! কন্ডিশন বুঝে স্বভাব-বিরুদ্ধ ব্যাটিংয়ে ফুটে উঠল দারুণ নিবেদনের প্রতিচ্ছবি।
হ্যান্ডসকম খেলেছেন দারুণ, কোনো সুযোগ দেননি। আগের টেস্টে দুই ইনিংসে ভালো শুরু করেও বড় কিছু করতে পারেননি। এবার সেটির পুনরাবৃত্তি হতে দেননি। দিন শেষে অপরাজিত ৬৯ রানে।
তৃতীয় উইকেটে দুজনের অবিচ্ছ্নি জুটির রান ১২৭। শেষ সেশনে অস্ট্রেলিয়া হারায়নি কোনো উইকেট, রান এসেছে ১১৪।
অথচ বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ক্যাচে শুরুতেই ফেরেন ম্যাট রেনশ। মুস্তাফিজের লেগ স্টাম্পে থাকা বল গ্লান্স করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি রেনশ, ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় গ্লাভসে জমান মুশফিক।
আসলে যে ব্যাটিং কঠিন ছিল, সেটি বোঝা গেছে ওয়ার্নারের ব্যাটিংয়ে। শট খেলা কঠিন। তাই নিজের প্রিয় পথে হাঁটেননি ওয়ার্নার। কন্ডিশন ভাবনায় বেছে নেন ধীরে চলার বিরুদ্ধ পথ।
৮১ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন স্মিথ। ওয়ার্নারের সঙ্গে জুটি শতরানের পথে। ম্রিয়মান বাংলাদেশকে তাজা করলেন তাইজুল ইসলাম। নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই বোল্ড করলেন স্মিথকে (৫৮)। টার্ন করবে ভেবে খেলতে চেয়েছিলেন, বল উঠল সামান্য, ভেতরে ঢুকে খুঁজে নিল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক।
সেই উইকেট জাগিয়ে দিতে পারত বাংলাদেশকে। উল্টো দারুণ ব্যাটিংয়ে মুশফিকদের জীবনীশক্তি শুষে নিলেন ওয়ার্নার ও হ্যান্ডসকম। আর ওই দুটি সুযোগ হাতছাড়া তো ছিলই।
ওয়ার্নার অর্ধশতক স্পর্শ করেন ৯৮ বলে। পঞ্চাশে ছিল মাত্র দুটি চার। দিন শেষে ১৭০ বলে ৮৮। নিজের ব্যাটিংয়ের ধরনর সঙ্গে আপোস করে প্রমাণ রাখলেন টেম্পারামেন্ট ও নিবেদনের। দেখিয়ে দিলেন তিনি এভাবেও খেলতে পারেন।
তারা লড়াই ছাড়েননি বলেই দিনটি অস্ট্রেলিয়ার। প্রথম ইনিংসে বড় লিড গড়ে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য। ঘুরে দাঁড়াতে তাই তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের চাই নতুন পরিকল্পনা, নতুন প্রাণশক্তি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩০৫
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৬৪ ওভারে ২২৫/২ (রেনশ ৪, ওয়ার্নার ৮৮*, স্মিথ ৫৮, হ্যান্ডসকম ৬৯*; মিরাজ ০/৫৩, মুস্তাফিজ ১/৪৫, সাকিব ০/৫২, তাইজুল ১/৫০, নাসির ০/৪, মুমিনুল ০/৬, সাব্বির ০/৯)