আশা জাগালেন বোলাররা

ব্যাটসম্যানরা বড় কোনো পুঁজি গড়তে পারেননি। স্কোর বোর্ডে যা আছে তা নিয়েই লড়াই করা শুরু করে দিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম দিনের শেষ বেলায় অস্ট্রেলিয়াকে মিরাজ-সাকিবরা বুঝিয়ে দিয়েছেন সামনে ঠিক কী অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2017, 03:31 AM
Updated : 27 August 2017, 12:17 PM

বাংলাদেশের ২৬০ রানের জবাবে রোববার প্রথম দিনের খেলা শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেট ১৮ রান।

একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্রুত ফিরেছেন ডেভিড ওয়ার্নার। এখনও টিকে আছেন স্টিভেন স্মিথ। লিড নিতে অধিনায়কের ওপর অনেকখানি নির্ভর করবে অস্ট্রেলিয়া।

প্রথম দিন বল হাতে পাননি মুস্তাফিজুর রহমান। উইকেট যে গ্রিপ পাওয়া যাচ্ছে তাতে দ্বিতীয় দিন এই পেসার কঠিন পরীক্ষা নিতে পারেন স্মিথদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৯ ওভারে ১৮/৩ (ওয়ার্নার ৮, রেনশ ৬*, খাওয়াজা ১, লায়ন ০, স্মিথ ৩*; শফিউল ০/৮, মিরাজ ১/৭, সাকিব ১/৩)

সাকিবের শিকার লায়ন

নাইটওয়াচম্যান ন্যাথান লায়ন টিকেন মাত্র ৫ বল। সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন শূন্য রানে। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ১৪/৩।

পাগলামি করে রান আউট খাওয়াজা

সাকিব আল হাসানের বল সফট হ্যান্ডে খেলেই ছুটলেন ওসমান খাওয়াজা। সেখানে রান নেওয়ার কোনো সুযোগই ছিল না। কিপিং থেকে ছুটে গিয়ে বল ছুড়েন মুশফিকুর রহিম। বল ধরে প্রথম প্রচেষ্টায় স্টাম্পে লাগাতে পারেননি সৌম্য সরকার। কিন্তু বেশি দূরে থাকায় দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় স্টাম্প ভেঙে বিদায় করেন খাওয়াজাকে।

ওয়ার্নারকে ফেরালেন মিরাজ

দেশের মাটিতে নতুন বলে উইকেট নেওয়ার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নিজের তৃতীয় ওভারেই ফিরিয়ে দিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারকে।

মিরাজের বলে আম্পায়ার আলিম দার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন ডেভিড ওয়ার্নার। তাতে পাল্টায় সিদ্ধান্ত।  কিন্তু পরের বলে আর বাঁচেননি। টার্ন আশা করে খেলেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, কিন্তু সোজা বল আঘাত হানে তার প্যাডে। এবার রিভিউ না নিয়ে ওয়ার্নার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটা ধরেন।

২৬০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

শেষ আর শুরুটা দারুণ হল অস্ট্রেলিয়ার। শুরুতে ১০ রানে নিয়েছিল ৩ উইকেট, শেষটায় ২০ রানে ৪। মাঝের সময়টুকুতে রাজত্ব করেছেন নিজেদের পঞ্চাশতম টেস্ট খেলতে নামা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।

অর্ধশতক পেয়েছেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই। গড়েছেন ১৫৫ রানের জুটি। কিন্তু অন্য কোনো জুটিতে পঞ্চাশও হয়নি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে নাসিরের ৪২।

শুরুতে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দেন পেসার প্যাট কামিন্স। তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন দুই মূল স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার ও নাথান লায়ন। এক উইকেটে পেয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, সেটা মহামূল্য। তামিমকে ফিরিয়ে তিনিই ভেঙেছিলেন বাংলাদেশের প্রতিরোধ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৭৮.৫ ওভারে ২৬০ (তামিম ৭১, সৌম্য ৮, ইমরুল ০, সাব্বির ০, সাকিব ৮৪, মুশফিক ১৮, নাসির ২৩, মিরাজ ১৮, তাইজুল ৪, শফিউল ১৩, মুস্তাফিজ ০*; হেইজেলউড ০/৩৯, কামিন্স ৩/৬৩, লায়ন ৩/৭৯, অ্যাগার ৩/৪৬, ম্যাক্সওয়েল ১/১৫)।

তাইজুলকে ফিরিয়ে লায়নের ২৫০ উইকেট

তাইজুল ইসলামকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে নিজের তৃতীয় উইকেট নিয়েছেন নাথান লায়ন। আর্ম বল বুঝতেই পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

তাইজুলকে ফিরিয়ে টেস্টে ত্রয়োদশ স্পিনার হিসেবে ২৫০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছালেন লায়ন।

ক্রিজে এখন শেষ উইকেট জুটি, শফিউল ইসলামের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

রিভিউ নিয়ে নাসিরকে ফেরাল অস্ট্রেলিয়া

মিরাজের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকেননি আরেক অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। অ্যাশটন অ্যাগারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন তিনি।

আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। তাতে পাল্টায় সিদ্ধান্ত, ২৩ রান করে ফিরে যান নাসির। তার বিদায়ের সময় দলের স্কোর ২৪৬/৮।

তাইজুল ইসলামের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন শফিউল ইসলাম।

বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ফিরলেন মিরাজ

একটা রিভিউ খরচ করে ফেলেছিলেন সাব্বির রহমান, কেন সেই রিভিউ নিয়েছিলেন তিনিই বলতে পারবেন। অন্যটা মুশফিকুর রহিম, অনেক ভেবে শেষ মুহূর্তে রিভিউ নিয়েছিলেন অধিনায়ক। তার কোনো একটা থাকলেই বেঁচে যেতেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

নাথান লায়নের বলে শর্ট লেগে পিটার হ্যান্ডসমের হাতে ধরা পড়েন দুটি চারে ১৮ রান করা মিরাজ। বল তার ব্যাট ছোঁয়নি, ক্যাচ গেছে প্যাডে লেগে। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অসহায় হাসিতে মাঠ ছাড় তরুণ অলরাউন্ডার। তার বিদায়ে ভাঙে ৪২ রানের জুটি।

নাসির হোসেনের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।

৩৫ মিনিট পর খেলা শুরু

এক পশলা বৃষ্টিতে ৩৫ মিনিট বন্ধ ছিল খেলা। বিরতির পর প্রথম বলেই পয়েন্ট দিয়ে প্যাট কামিন্সকে চার হাঁকিয়েছেন নাসির হোসেন।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ

নাসির হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজের ইনিংস মেরামতের প্রচেষ্টায় বাধ সেধেছে বৃষ্টি। ৬৭তম ওভার অসমাপ্ত রেখেই মাঠ ছেড়েছে দুই দল।

বাংলাদেশের স্কোর ২১৮/৬। নাসির ১১ ও মিরাজ ৬ রানে অপরাজিত।

রিভিউ নিয়েও বাঁচলেন না মুশফিক

অ্যাশটন অ্যাগারের বল স্পিন করবে ভেবে খেললেন মুশফিকুর রহিম, বল এলো সোজা, আঘাত হানলো প্যাডে। আম্পায়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দিলে রিভিউ নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। তাতে পাল্টায়নি সিদ্ধান্ত, ১৮ রান করে ফিরে যান মুশফিক।

মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে চার হাঁকিয়ে দলের সংগ্রহ দুইশ রানে নিয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্রিজে তার সঙ্গী নাসির হোসেন। দুই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় সেশনে তামিম-সাকিবকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলা তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানকে হারিয়ে অস্বস্তি নিয়ে চা-বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।

চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১৯০/৫। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ক্রিজে আছেন নাসির হোসেন।

দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টা নিরাপদেই কাটায় বাংলাদেশ। গোল বাধে পরের ঘণ্টায়। উইকেট আরও মন্থর হয়েছে, বল আসছে থেমে। সেই ধোঁকায় পড়ে ফিরেছেন তামিম, নাথান লায়নের বাড়তি বাউন্সে সাকিব।

নিজেদের পঞ্চাশতম টেস্টে অর্ধশতক পাওয়া তামিম-সাকিবের জুটিতে আসে ১৫৫ রান।

বাড়তি গতির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তিন উইকেট নেওয়া প্যাট কামিন্স। জশ হেইজেলউড আছেন রিভার্স সুইংয়ের সন্ধানে।

বিদায় নিলেন সাকিবও

তামিম ইকবালের বিদায়ের পর চেপে ধরার সুফল পেল অস্ট্রেলিয়া। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন সাকিব আল হাসান।

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের জায়গায় বল করতে আসা নাথান লায়নের বাড়তি বাউন্সে খোঁচা মেরে শেষ হয় ১১টি চারে গড়া সাকিবের ৮৪ রানের ইনিংস।

সাকিব লায়নের ২৪৮তম শিকার। এই উইকেটে রিচি বেনোর পাশে দাঁড়ালেন অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনার।

অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন দুই বছর পর টেস্ট খেলতে নামা নাসির হোসেন

তামিমকে ফেরালেন ম্যাক্সওয়েল

দেড়শ রানের জুটি গড়ে ফিরে গেলেন তামিম ইকবাল। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অফ স্পিনে কাট করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, মন্থর উইকেটের জন্য বল একটু দেরিতে এলে ঠিক মতো শট খেলতে পারেননি। সহজ ক্যাচ চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ডেভিড ওয়ার্নারের কাছে।

১৪৪ বলে তিনটি ছক্কা আর ৫টি চারে ৭১ রান করা তামিমের বিদায়ে ভাঙে তার সঙ্গে সাকিব আল হাসানের ১৫৫ রানের জুটি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে কোনো জুটিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

তামিমের বিদায়ের সময় দলের স্কোর ১৬৫/৪। সাকিবের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

সাকিবের পর তামিম

সাকিব আল হাসানের পর নিজের পঞ্চাশতম টেস্টে অর্ধশতক পেয়েছেন তামিম ইকবাল। ১১৯ বলে আসে তার ২৩তম অর্ধশতক।

নাথান লায়নকে তিনবার উড়িয়েছেন তামিম। লায়ন আর জশ হেইজেলউডের বলে আছে একটি করে চার। খেলছেন দারুণ ধৈর্য নিয়েও।

প্রতিরোধের পর শতরানের জুটি

দলের বিপদে আবার বুক চিতিয়ে লড়ছেন তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান। গড়েছেন নিজেদের দ্বিতীয় শতরানের জুটি।

চতুর্থ উইকেটে ৯৭ বলে এসেছিল তাদের ৫০। জুটির রান তিন অঙ্কে গেছে ১৮৩ বলে।

দুই জন সবশেষ ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে জুটি বাধার সময় করেছিলেন ১৩২ রান। তার আগের তিনটি জুটিতে পঞ্চাশ পর্যন্ত যেতে পারেননি একবারও।

বাংলাদেশের একশ
 
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই বাংলাদেশের রান তিন অঙ্কে নিয়ে গেছেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান।
 
১৮তম ওভারে পঞ্চাশ স্পর্শ করে বাংলাদেশের স্কোর। সময় গড়ানোর সঙ্গে বাড়ছে রানের গতি। ৩০তম ওভারে একশ রানে গেছে সংগ্রহ।

সাকিবের অর্ধশতক
 
লাঞ্চের পর প্রথম ওভারেই সাকিব স্পর্শ করলেন হাফ সেঞ্চুরি। ৬৫ বলে ৫০। টেস্ট ক্যারিয়ারে সাকিবের ২২তম।
 
বাংলাদেশের হয়ে ৫০তম টেস্ট খেলতে নেমে ৫০ রান এই প্রথম। এর আগে ৫০তম টেস্টে সর্বোচ্চ ছিল মোহাম্মদ আশরাফুলের ১২!

৩ উইকেট হারানোর পর তামিম-সাকিবের প্রতিরোধ
বাজে শুরুর পর তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। ১০ রানে ৩ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা মধ্যাহ্ণ-বিরতিতে গেছে স্বস্তি নিয়ে।
প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৯৬/৩। তামিম ৩৩ ও সাকিব ৪৮ রানে অপরাজিত। এরই মধ্যে দুই জন গড়েছেন ৮৬ রানের জুটি। 
দিনের শুরুতে আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। কন্ডিশন ছিল পেস বোলিংয়ের জন্য সহায়ক। তার পুরো সুবিধা নিয়েছেন প্যাট কামিন্স। ফিরিয়েছেন সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমানকে। 
মন্থর উইকেট থেকে সুবিধা পাওয়া অফ স্পিনার নাথান লায়নকে চমৎকারভাবে সামাল দিয়েছেন সাকিব-তামিম।
তামিম শুরু থেকেই সতর্ক। নিজের জোনে বল পেলেই কেবল চড়াও হচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়নকে স্বাগতম জানান ছক্কায়। প্রান্ত বদল করার পর অফ স্পিনারকে আরও একবার উড়িয়েছেন তিনি।
নিজের মতো করেই খেলছেন সাকিব। ৬২ বলের ইনিংসে খেলেছেন কিছু ঝুঁকিপূর্ণ শট।
তামিম-সাকিব জুটিতে প্রতিরোধ
দলের বিপদের সময় অর্ধশত রানের জুটি গড়েছেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান।
৯৭ বল খেলে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান ৫০তম টেস্ট খেলতে নামা এই দুই ক্রিকেটার। ২১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৬৫ রান।
টেস্টে এ নিয়ে মাত্র পঞ্চমবার জুটি বাধলেন তামিম-সাকিব। সবশেষ সেই ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে এক সঙ্গে ব্যাটিংয়ে দেখা গেছে তাদের। সেই ম্যাচে শতক পেয়েছিলেন দুই জনেই। 

সপ্তম ওভারে লায়ন, তামিমের ছক্কা
 
জশ হেইজেলউডকে সরিয়ে সপ্তম ওভারে নাথান লায়নকে আক্রমণে আনেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। শেষ বলে এগিয়ে এসে অফ স্পিনারকে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে ওড়ান তামিম ইকবাল।

শূন্য রানে ইমরুল-সাব্বিরের ফেরা
প্যাট কামিন্সের দারুণ বোলিং আর ব্যাটসম্যানদের বাজে শটে ঢাকা টেস্টের প্রথম সকালেই চাপে বাংলাদেশ। আগের ওভারে সৌম্য সরকারকে বিদায় করা ডানহাতি এই পেসার পরপর দুই বলে ফিরিয়েছেন ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমানকে। দুই জনের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে ঠিকমতো পারেননি ইমরুল। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে আসা ক্যাচ গ্লাভসে জমান ম্যাথু ওয়েড।  
পরের বলে উইকেটররক্ষক ওয়েডকে সহজ ক্যাচ দেন সাব্বির। শট খেলার সময় ব্যাট মাটিতে লেগেছিল কিন্তু ব্যাটের কানায় বলের স্পর্শ তার না বোঝার কোনো কারণ নেই। অমন ক্যাচ দেওয়ার পরও কেন রিভিউ নিয়েছিলেন তিনিই। 
৪ ওভারে ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। নিজেদের ৫০তম টেস্টে জুটি বেঁধেছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা দুই ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান।
সৌম্যর পর দ্রুত বিদায় ইমরুলের
খোঁচ মেরে শুরুতেই ফিরেছেন সৌম্য সরকার। প্যাট কামিন্সের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে পিটার হ্যান্ডসকমের হাতে ধরা পড়েছেন বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। দুটি চারে ৮ রান করে সৌম্য ফেরার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১০/১।
নিজের ৫০তম টেস্ট খেলা তামিম ইকবালের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন ইমরুল কায়েস।

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
আগের রাত জুড়ে ভারী বৃষ্টি হয়েছে মিরপুরে। তবে সকাল থেকে আবহাওয়া ভালো। সংস্কারের পর নতুন আউটফিল্ডকে তাই সকালের পরীক্ষায় নামতে হয়নি। টস হলো সময় মতোই। সেই পরীক্ষায় জিতেছেন মুশফিকুর রহিম। নিয়েছেন ব্যাটিং।

নেই মুমিনুল, একাদশে নাসির

টসের একটু আগেও ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন নাসির হোসেন, তাকে বল থ্রো করছিলেন মুমিনুল হক। সম্ভাব্য একাদশের চিত্র ফুটে ওঠে এতেই। ২ বছর পর টেস্ট খেলছেন নাসির। মোসাদ্দেক হোসেনের অসুস্থতায় দলে ফেরা মুমিনুলের ফেরা হয়নি একাদশে।

একাদশে ফিরেছেন শফিউল ইসলামও। একাদশে নেই লিটন দাস। তার মানে সবশেষে টেস্টের মত কিপিং করবেন মুশফিকুর রহিম। তাইজুল ইসলামকে সহ বাংলাদেশ নামছে তিন স্পিনার নিয়ে।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান। 

অস্ট্রেলিয়ার একাদশ আগের দিন সংবাদ সম্মেলনেই জানিয়ে দিয়েছিলেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। একাদশে ফিরেছেন উসমান খাওয়াজা। চার বছর পর টেস্ট খেলবেন অ্যাশটন অ্যাগার।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, ম্যাট রেনশ, উসমান খাওয়াজা, স্টিভ স্মিথ, পিটার হ্যান্ডসকম, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ম্যাথু ওয়েড, অ্যাশটন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, নাথান লায়ন, জশ হেইজেলউড।

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার সেরা সময়

ঢাকা টেস্টে মুখোমুখি হচ্ছে ‘অচেনা’ দুই দল। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার কোনো খেলোয়াড়েরই একে অপরের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের অভিজ্ঞতা নেই। ২০০৬ সালের পর টেস্টে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছে দেশ দুটি।

বাংলাদেশ এখন কন্ডিশনের ফায়দা নিতে শিখেছে। নিজেদের শক্তি অনুযায়ী উইকেট বানানোর সাহস দেখাচ্ছে। প্রতিপক্ষ যত প্রতাপশালীই হোক, জবাব দেওয়ার সম্পদ আছে। মুশফিকুর রহিম বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার উপযুক্ত সময় এখনই।

বাংলাদেশের কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে ঘোষণা দিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করতে চায় দল। সাকিব আল হাসানের মতে, দেশের মাটিতে প্রায় অপরাজেয় বাংলাদেশ। ২-০ ব্যবধানে জয় সম্ভব মনে করছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও। স্বাগতিকদের আত্মবিশ্বাসী ঘোষণায় বিস্মিত অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ।

সাকিব-তামিমের ৫০তম টেস্ট

সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের ৫০তম টেস্ট স্মরণীয় করে রাখতে সতীর্থদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা দুই ক্রিকেটারের মাইলফলক টেস্ট জয় দিয়ে রাঙিয়ে রাখতে চান অধিনায়ক।

টেস্টের আঙিনায় প্রায় দেড় যুগে বাংলাদেশের হয়ে এই মাইলফলক ছোঁয়া ক্রিকেটারের সংখ্যা হতে যাচ্ছে পাঁচ। সাকিব-তামিমের আগে এই স্বাদ পেয়েছিলেন হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিম।