মুশফিকের ভাবনাতেও হোয়াইটওয়াশ

মৌলিক কাজগুলো ঠিকঠাক করলে, মাঠে পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারলে টেস্ট সিরিজে না জেতার কারণ দেখেন না মুশফিকুর রহিম। উপমহাদেশে অস্ট্রেলিয়া অজেয় কোনো দল নয়। তাই ২-০ ব্যবধানে জেতার আশা অধিনায়কের কাছে অসম্ভব কিছু নয়। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2017, 03:58 PM
Updated : 26 August 2017, 04:10 PM

কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে স্পষ্ট করে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি টেস্টই জিততে চান। সাকিব আল হাসানও মনে করেন, ২-০ ব্যবধানে জেতা সম্ভব। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন মুশফিকও।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার শুরু হবে প্রথম টেস্ট। সতীর্থদের ম্যাচের প্রথম বল থেকে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার তাগিদ দিয়েছেন স্বাগতিক অধিনায়ক।  

“আমাদেরকে লড়াই শুরু থেকে শুরু করতে হবে। জয়ের জন্য আমাদেরকে সব বিভাগেই ভালো করতে হবে। মৌলিক ব্যাপারগুলো ঠিক রাখতে হবে।”

দেশের মাটিতে নিজেদের সবশেষ সিরিজে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জেতারও উদাহরণ দিলেন মুশফিক।

“আগেও ভালো খেলোয়াড়দের বিপক্ষে খেলেছি। এই দলটির বিপক্ষে প্রথম খেলছি, এটা একটু ব্যতিক্রম হতে পারে।… এমন শীর্ষ দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ নিয়মিত হয় না। আমরা এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চাই যেন ভবিষ্যতে আরও বেশি বেশি খেলার সুযোগ পাই।”

মুশফিক মনে করেন, হুট করে কোচ বলেছেন আর সাকিব তাতে সায় দিয়েছেন ব্যাপারটা এমন নয়। গত দুই-আড়াই বছর ধরে দেশের মাটিতে টেস্টেও ভালো খেলায় যে আত্মবিশ্বাস জন্মেছে তার জন্যই অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইওয়াশ করার লক্ষ্য ঠিক করতে পারছে বাংলাদেশ।

“বিশ্ব ক্রিকেট আমাদের এখন যেভাবে মূল্যায়ন করছে, এটা কিন্তু একটা-দুইটা ম্যাচ জেতার কারণে নয়। বরং ধারাবাহিক পারফর্মের জন্য। এটা আমাদের আরো সামনে নিয়ে যেতে হবে। … আমাদের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো যথেষ্ট ক্রিকেটার আছে।”

“কাজটা মোটেও সহজ হবে না। ওরা শেষ পর্যন্ত লড়বে। ওদের অধিনায়ক স্মিথকে আমি দেখি বিশ্বের সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে। অফ স্পিনার নাথান লায়ন সিরিজে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারেন। সিরিজে দুই দলের সমান সুযোগ থাকবে।”

২০০৬ সালে সবশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। দুই দেশের বর্তমান দলটির কারোরই মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা নেই।

অচেনা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দারুণ কিছু করা খুব নিয়মিত চিত্র। অভিষেকে জ্বলে উঠা অনেক ক্রিকেটারের উদাহরণ দিলেন অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও হবে ১১ জনের অন্য ধরনের ‘অভিষেক’। তার বিশ্বাস, সেখানেও চমকে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করবেন কোনো এক সতীর্থ।

“দেখা যায়, যারই অভিষেক হয় সেই পাঁচ উইকেট নেয় বা পঞ্চাশ রান করে। এ জন্য আমরা খুঁজছিলাম কাকে অভিষেক করানো যায় (হাসি), কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি এখনো।”

হাথুরুসিংহে অনেক দিন অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। মুশফিক মনে করেন, এবার তার সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।

“তথ্য না থাকলে অনেকে অনেক সময় ভালো কিছু করে ফেলে। তবে এখন যে প্রযুক্তি, তাতে না খেললেও অনেক কিছু পরিকল্পনা করা যায়।”

এই সিরিজ হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালে। নিরাপত্তা শঙ্কায় শেষ সময়ে সফর স্থগিত করে অস্ট্রেলিয়া। পরে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও দল পাঠায়নি তারা। এবার আসায় কৃতজ্ঞতা জানালেন মুশফিক।   

“ওরা না এলে দুইটা টেস্ট আমাদের কম খেলা হত। তাদের আসাটা বাংলাদেশের ক্রিকেট দর্শকদের জন্যও অনেক আনন্দের ব্যাপার। আশা করি বিশ্ব ক্রিকেট খুব ভালো একটা সিরিজ পেতে যাচ্ছে।”

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের পয়েন্ট বাড়িয়ে নেওয়ার হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের নয় নম্বর থেকে উঠে আসার সুযোগ দুই হাতে কাজে লাগাতে চান মুশফিক। তবে এটাকে মূল লক্ষ্য না করে এগোতে চান প্রতিটি ম্যাচ ধরে। 

“আমরা অন্যান্য দলের মতো বছরে ১০-১২টা করে টেস্ট খেলি না। তাই আমাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক দিন পর পর খেলি বলে প্রতিটি ম্যাচ আমাদের জন্য ঐতিহাসিক হয়ে যায়। চাইবো ম্যাচ শেষেও যেন এই টেস্ট ঐতিহাসিক হয়ে থাকে।