সবুজ শের-ই-বাংলা এখন বাদামী প্রান্তর!

গোল গ্যালারির মাঝে সবুজের গালিচা। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মাঠে একসময় ছিল চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য। সেসব দিন অতীত বেশ আগেই। ধারণা করা হয়েছিল, সংস্কারের পর মাঠ ফিরে পাবে সেই সবুজ চেহারা। কিন্তু নতুন মৌসুমের প্রথম টেস্ট শুরুর আগের দিন মাঠ যেন বাদামী প্রান্তর!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2017, 12:12 PM
Updated : 26 August 2017, 04:12 PM

গত প্রায় নয় মাস কোনো ম্যাচ হয়নি শের-ই-বাংলায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আরও ভালো করার জন্য এই সময়ে সংস্কার করা হয় মাঠ। উইকেটের উপরিভাগে ইঞ্চিখানেক পুরোনো মাটি সরিয়ে নতুন মাটি ফেলা হয়েছে। আউটফিল্ডের পুরোনো মাটি ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি মতো তুলে ফেলা হয়েছে। পরে সেখানে ফেলা হয়েছে নতুন মাটি। লাগানো হয়েছে নতুন ঘাস।

কিন্তু নতুন এই ঘাস বড় হতে হতে মরে গেছে অনেকটাই। বড় বড় ঘাস রেখেও তাই মাঠের সবুজ চেহারা ফেরানো যাচ্ছে না। বড় ঘাসের কারণে তবু দূর থেকে একটু সবুজাভ লাগে মাঠ। কিন্তু কাছে গেলে মাঠ হয়ে ওঠে বাদামী!

এবার বৃষ্টি হয়েছে প্রচুর, দেওয়া হয়েছে সার। তবু ছড়ায়নি মাঠের ঘাস। বাড়েনি ঘনত্ব। ঘাসগুলোর মাঝে প্রচুর ফাঁক, সেখান দিয়ে মাঠের মাটি ও বালি দৃশ্যমান হয়ে ফুটে ওঠে। এই কারণেই সবুজের ক্যানভাসের বদলে মাঠ হয়ে উঠেছে বাদামী।

সবুজ চেহারাটা অবশ্য সৌন্দর্য্যের জন্যই প্রয়োজনীয়। এমনিতে মাঠ ভালো থাকলে বাদামী মাঠেও খেলা যায়। সমস্যা হলো মাঠও যে ভালো নয় পুরোপুরি!

সংস্কারের আগে মাঠ ছিল সমান। কিন্তু এখন বেশ অসমান। বেশ কয়েকটি জায়গার উঁচু-নিচু খালি চোখেই বোঝা যাচ্ছে। সাধারণত মাঝের উইকেটগুলো থাকে একটু উঁচুতে, সেখান থেকে ঢালু হয়ে সীমানার দিকে নেমে যায় সব ক্রিকেট মাঠ। কিন্তু একপাশে সেই ঢালুও মনে হচ্ছে অসমান। ফিল্ডিংয়ের সময় বল আচমকা লাফিয়ে ওঠার শঙ্কা থাকছেই।

ঘাসের নিচে মাটি এখনও বেশ নরম। এখনও শক্ত হয়ে বসেনি ঘাস। পায়ের একটু জোরে চাপ লাগলেই তাই নিশ্চিত উঠে আসবে মাটি। ফিল্ডিংয়ের সময় স্লাইড করলেও শঙ্কা আছে মাটি উঠে আসার। সামান্য হলেও থাকবে চোটের শঙ্কা।

স্বাগতিক অধিনায়ক হয়ে মাঠের সমালোচনা করা কঠিন। তার পরও ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অস্বস্তিটা লুকালেন না মুশফিকুর রহিম।

“আগে মিরপুর মাঠ যেরকম ছিল, সেরকম হয়ত নেই এখন। দুদলের জন্য একটু হলেও অস্বস্তিকর হবে। তবে আমরা এখানে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছি। কিছুটা জানি। মাস দুয়েকের মধ্যে হয়ত আরও ভালো হবে মাঠ।”

ম্যাচের আগে দিন আউটফিল্ডের অবস্থা দেখে কিছু বিস্মিত অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথও।

“মাঠ দেখলাম, আউটফিল্ডে ঘাস এখনও বেশ লম্বা। আশা করি ঘাস কেটে ছোট করা হবে, ব্যাটসম্যানদের জন্য তাহলে ভালো হবে।”

ঘাস কেটে ছোট করা হয়েছে শুক্রবার বিকেলেই। তাতে মাঠের চেহারা হয়েছে আরও বাদামী। ঘাস শক্ত হয়ে বসেনি বলে এবং মাটি এখনও নরম বলে আউটফিল্ড ভারী হবেই। চার মারতে টাইমিংয়ের পাশাপাশি হয়ত গায়ের জোরও লাগবে ব্যাটসম্যানদের।  

সব মিলিয়ে ‘হোম অব ক্রিকেটের’ মাঠ এখন অস্বস্তির প্রতিশব্দ। আপাতত আশা, মিরপুর টেস্টে যেন না হয় বিব্রতকর কিছু। অপেক্ষা, বিপিএল শুরু হওয়া নাগাদ যদি ভালো হয় মাঠ!