স্টোকসের সেঞ্চুরি আর উইন্ডিজের ক্যাচ ছাড়ার আক্ষেপ

ঘা হজম করেই তবে জেগে উঠল ওয়েস্ট ইন্ডিজ? আগের টেস্টে বিধ্বস্ত হওয়ার পর তুমুল সমালোচনায় বিদ্ধ ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার যেন অন্য দল। অন্তত একটি দিনের জন্য হলেও উজ্জ্বল। দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন বেন স্টোকস। তবে দিনের নায়ক কেমার রোচ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। দারুণ বোলিংয়ে দুই ফাস্ট বোলার দিনজুড়ে ভুগিয়েছেন ইংলিশদের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2017, 06:14 PM
Updated : 25 August 2017, 06:14 PM

হেডিংলি টেস্টের প্রথম দিনে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ২৫৮ রানে। সেঞ্চুরিতে ইংলিশদের টেনেছেন স্টোকস। এই সিরিজ দিয়ে ফেরা রোচ আর এই ম্যাচে দলে ফেরা গ্যাব্রিয়েল গতিময় ও আগ্রাসী বোলিংয়ে নিয়েছেন চারটি করে উইকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভালো দিনটি হতে পারত আরও দারুণ। কিন্তু বোলিং ভালো হলেও ফিল্ডিং যে আগের মতোই। ৮ রানে সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া জো রুট করলেন ৫৯। ৯ রানে বেঁচে যাওয়া স্টোকস করলেন সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ড তাই পারল লড়াই করতে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অবশ্য দিনটা শেষ করতে পারেনি স্বস্তিতে। ওপেনার কাইরান পাওয়েলকে হারিয়ে তুলেছে ১৯ রান।

উইকেট এমন কঠিন কিছু ছিল না। হেডিংলির উইকেটে বল মুভ করে বরাবরই। এদিনও করেছে। তবে উইকেট ব্যাটসম্যানদের দিকেই ছিল বেশি। ক্যারিবিয়ান বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংই ভুগিয়েছে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের।

সবচেয়ে অভিজ্ঞ অ্যালেস্টার কুককে সবার আগে ফিরিয়ে শুরু। ইংল্যান্ডের সফলতম ব্যাটসম্যানকে ১১ রানে ফেরান গ্যাব্রিয়েল। সবচেয়ে অনভিজ্ঞ দুই তরুণ মার্ক স্টোনম্যান ও টম ওয়েস্টলিকে ফেরান রোচ। ১৫ ওভারে ইংল্যান্ড তখন ৩ উইকেটে ৩৭!

ডাভিড মালানের সঙ্গে লাঞ্চের আগ পর্যন্ত সময়টা পার করে দেন জো রুট। তবে লাঞ্চের পরপর মালানকেও ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার।

৭১ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে কিছুদূর টানেন রুট ও স্টোকস। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক মিলে পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৬৯ রানের জুটি।

রুট আরও একবার স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। টানা ১২ টেস্টে হাফসেঞ্চুরি করে ছুঁয়ে ফেলেন এবি ডি ভিলিয়ার্সের রেকর্ড।

তবে এবার ইনিংসটাকে লম্বা করতে পারেননি বেশি। আউট হয়েছেন আলসে এক শটে। দেবেন্দ্র বিশুকে সুইপ করতে চেয়েছিলেন, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল যায় স্লিপে।

আক্রমণে ফেরা গ্যাব্রিয়েল বেশিক্ষণ টিকতে দেননি জনি বেয়ারস্টোকে (২)। সপ্তম উইকেটে মইন আলিকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়ে তোলেন স্টোকস। মইনকে ফিরিয়ে ৬৮ রানের জুটি ভাঙেন রোচ।

৯ রানে জীবন পাওয়া স্টোকস আরেকবার বেঁচে যান ৯৮ রানে। এবার ক্যাচ ছাড়েন গ্যাব্রিয়েল। পরের বলে ২ রান নিয়ে ১২২ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। ৩৮ টেস্টে স্টোকসের এটি ষষ্ঠ সেঞ্চুরি।

খানিক পর প্রায়শ্চিত্ত করেন গ্যাব্রিয়েল, ঠিক ১০০ রানেই বাউন্সারে ফেরান স্টোকসকে। নতুন ব্যাটসম্যান স্টুয়ার্ট ব্রড বেঁচে যান উইকেটকিপার শেন ডাওরিচকে সহজ ক্যাচ দিয়েও। ওই ওভারেই ব্রডকে দারুণ ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন গ্যাব্রিয়েল।

দলে ফেরা ক্রিস ওকসের ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ২৩ রান। তাকে ফিরিয়েই ইনিংসের ইতি টানেন রোচ।

গ্যাব্রিয়েল আর রোচ মিলে চার-চার আট উইকেট। মূল স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু ৬ ওভারে ১ উইকেট নিলেও বিস্ময়করভাবে রোস্টন চেইসকে দ্বিগুণ ওভার বোলিং করান অধিনায়ক হোল্ডার।

ব্যাটিংয়ে নেমে ধুঁকেছে ক্যারিবিয়ান ওপেনাররাও। তাদের নড়বড়ে ব্যাটিং দেখে ৫ স্লিপ দাঁড় করান ইংলিশ অধিনায়ক রুট। কাইরান পাওয়েলকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন জেমস অ্যান্ডারসন। প্রথম ইংলিশ ক্রিকেটার হিসেবে কুক নেন ১৫০তম ক্যাচ।

নাইটওয়াচম্যান বিশুকে নিয়ে বাকি সময়টা পার করে দিয়েছেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৭০.৫ ওভারে ২৫৮ (কুক ১১, স্টোনম্যান ১৯, ওয়েস্টলি ৩, রুট ৫৯, মালান ৮, স্টোকস ১০০, বেয়ারস্টো ২, মইন ২২, ওকস ২৩, ব্রড ০, অ্যান্ডারসন ০*; রোচ ৪/৭১, গ্যাব্রিয়েল ৪/৫১, হোল্ডার ১/৪৫, চেইস ০/৫৯, বিশু ১/২৭)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১২ ওভারে ১৯/১ (ব্র্যাথওয়েট ১৩*, পাওয়েল ৫, বিশু অ্যান্ডারসন ১/৫, ব্রড ০/১২, ওকস ০/২)