দনাঞ্জয়াকে ছাপিয়ে নায়ক ভুবনেশ্বর

২২ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়া ভারতের ত্রাতা মহেন্দ্র সিং ধোনি ও ভুবনেশ্বর কুমার। আকিলা দনাঞ্জয়ার স্পিন জাল ছিন্ন করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দলকে এনে দিয়েছেন দারুণ জয়। 

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2017, 06:57 PM
Updated : 24 August 2017, 06:59 PM

ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৩ উইকেটে জিতে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ভারত। আরেকটি হারে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার পথ আরেকটু কঠিন হয়ে গেছে শ্রীলঙ্কার। ২০১৯ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে শেষ তিন ম্যাচে অন্তত দুটিতে জিততে হবে তাদের।

মিলিন্দা সিরিবর্দনার অর্ধশতকে শ্রীলঙ্কা ৮ উইকেট করে ২৩৬ রান। বৃষ্টির বাধায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য ৪৭ ওভারে নেমে এলে ভারত পায় ২৩১ রানের নতুন লক্ষ্য। ভুবনেশ্বর-ধোনির ব্যাটে ৩ উইকেট হাতে রেখে ৪৪.২ ওভারে ওই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত।

বিয়ের পরদিন মাঠে নেমে ৫৪ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাচ সেরা দনাঞ্জয়া। তবে ভুবনেশ্বরের ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকে শেষ হাসি হেসেছে অতিথিরাই।

এমনিতে অফ স্পিনার দনাঞ্জয়া। অফ স্পিনে নিয়ন্ত্রণ দুর্দান্ত, দুসরা ও ক্যারাম বলও কার্যকরী। লেগ স্পিন ও গুগলিও পারেন। শুধু পারেনই না, সেই সব অস্ত্রের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহারে কাঁপিয়ে দিতে পারেন স্পিনে বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপকেও। বৃহস্পতিবার তারই অনুপম প্রদর্শনী দেখা গেল পাল্লেকেলেতে।    

মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় ভারতের শুরুটা ছিল চমৎকার। শ্রীলঙ্কায় টানা ব্যর্থতায় দাড়ি টানা রোহিত শর্মা পান অর্ধশতক। শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ১০৯ রানের জুটিতে দলকে গড়ে দেন জয়ের ভিত।

ষোড়শ ওভারে রোহিতকে ফিরিয়ে ‘ব্রেক থ্রু’ এনে দেন দনাঞ্জয়া। লেগ স্পিনে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি, ফিরেন ৪৫ বলে ৫৪ রান করে।

সিরিবর্দনার বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের অসাধারণ এক ক্যাচে পরের ওভারে ফিরেন ধাওয়ান। এক রানের জন্য অর্ধশতক পাননি তিনি।

ভারতের তিন ব্যাটিং ভরসা কেদার যাদব, বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল বুঝতেই পারেননি দনাঞ্জয়ার গুগলি। চার বলের মধ্যে তিন জনই ফিরেছেন বোল্ড হয়ে। দুর্দান্ত সেই ওভারেই ম্যাচে ফিরে শ্রীলঙ্কা।

পরের দুই ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া ও অক্ষর প্যাটেলকে বিদায় করেন দনাঞ্জয়া। এগিয়ে এসে চড়াও হতে গিয়ে স্টাম্পড হন পান্ডিয়া। তাকে বিদায় করেই প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান তরুণ স্পিনার। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অক্ষর ফিরেন এলবিডব্লিউ হয়ে।   

১০৯/০ থেকে ১৩১/৭। ম্যাচ তখন অনেকটাই শ্রীলঙ্কার মুঠোয়। অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে শতরানের জুটিতে তাদের হতাশ করে ভারতকে অসাধারণ এক জয় এনে দেন ধোনি-ভুবনেশ্বর। ৮০ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং করা ভুবনেশ্বর। ধোনি একটি চারে ৪৫ রানে।

এর আগে পাল্লেকেলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে একের পর এক ব্যাটসম্যানদের সুযোগ হাতছাড়ার দৃশ্য দেখেছে শ্রীলঙ্কা। অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা ছাড়া দুই অঙ্কে পৌঁছেছিলেন প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের বাকি সবাই। কিন্তু নিজেদের ইনিংস খুব একটা বড় করতে পারেননি কেউই।

ম্যাথিউস ফিরে যাওয়ার সময় শ্রীলঙ্কার স্কোর ১২১/৫। চামারা কাপুগেদারার সঙ্গে সিরিবর্দনার ৯১ রানের জুটিতে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে রোহিতের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় সিরিবর্দনার ৫৮ বলে ৫৮ রানের চমৎকার ইনিংস। এরপরও আড়াইশ রানে যাওয়া সম্ভব ছিল।

কাপুগেদারা, দনাঞ্জয়াকে ফিরিয়ে তার আগেই থামিয়ে দেন বুমরাহ। ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার।

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে .২৩৬/৮ (ডিকভেলা ৩১, গুনাথিলকা ১৯, মেন্ডিস ১৯, থারাঙ্গা ৯, ম্যাথিউস ২০, সিরিবর্দনা ৫৮, কাপুগেদারা ৪০, দনাঞ্জয়া ৯, চামিরা ৬*, ফার্নান্দো ৩*; ভুবনেশ্বর ০/৫৩, বুমরাহ ৪/৪৩, চাহাল ২/৪৩, পান্ডিয়া ১/২৪, প্যাটেল ১/৩০, কেদার ০/৩২)

ভারত: (লক্ষ্য ৪৭ ওভারে ২৩১) ৪৪.২ ওভারে ২৩১/৭ (রোহিত ৫৪, ধাওয়ান ৪৯, রাহুল ৪, কেদার ১, কোহলি ৪, ধোনি ৪৫*, পান্ডিয়া ০, প্যাটেল ৬, ভুবনেশ্বর ৫৩*; মালিঙ্গা ০/৪৯, ফার্নান্দো ০/৩২, ম্যাথিউস ০/১১, চামিরা ০/৪৫, দনাঞ্জয়া ৬/৫৪, সিরিবর্দনা ১/৩৯)

ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৩ উইকেটে ভারত জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আকিলা দনাঞ্জয়া।