অবশ্য টেস্টে তিন নম্বর পজিশন খুব অচেনা নয় ইমরুলের। তিন বছর পর টেস্ট দলে ফিরে ২০১৪ সালে তিন নম্বরে নেমেই পেয়েছিলেন প্রথম শতক। পরের তিনটি ইনিংসেও খেলেছিলেন তিন নম্বরেই।
সেই বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে ফিরেই করেছিলেন শতক। পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ১৫০ রানের দারুণ ইনিংস খেলে উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের সঙ্গে নিজের জায়গা পাকা করে নেন ইমরুল।
টেস্টে ২৫টি উদ্বোধনী জুটি দেখেছে বাংলাদেশ। রান (২ হাজার ২০৫) ও গড় (৪৭.৯৩) দুই দিক থেকেই সেরা তামিম-ইমরুল। টেস্টে দলের দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ডও এই দুই জনের অধিকারে।
চলতি বছরের শুরুতে নিউ জিল্যান্ড সফরে প্রথম টেস্ট পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। ওয়েলিংটনে চোট পাওয়ায় খেলেননি ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে। ইমরুলের জায়গায় খেলতে নেমে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে সৌম্য করেন ৮৬ রান।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পরের সাত ইনিংসে করেন আরও তিনটি অর্ধশতক। শ্রীলঙ্কা সফরে টানা করেছিলেন ৭১, ৫৩ ও ৬১ রান। আপাতত তামিমের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে তিনিই প্রথম পছন্দ। দুই জন ৮ ইনিংসে ৪৬.৮৭ গড়ে করেছেন ৩৭৫।
কলম্বোয় বাংলাদেশের সবশেষ টেস্টে তিন নম্বরে ব্যাট করেন ইমরুল। প্রথম ইনিংসে আউট হয়ে যান ৩৪ রান করে, পরের ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা ইমরুল জানান, কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে তাকে তিন নম্বরের খেলার কথা বলেছেন।
“শ্রীলঙ্কায় শেষ টেস্টে কিন্তু আমি তিনে ব্যাটিং করেছি। কোচ আমাকে তিনে ব্যাটিং করার কথা বলেছেন। নেটে সেভাবেই ব্যাটিং করছি। ওপেনার থেকে তিন নম্বরে ব্যাটিং করা কঠিন, মানিয়ে নিতে হচ্ছে।”
চার নম্বরে দারুণ সাফল্য পাওয়া মুমিনুল হক কিছু দিন আগেও ছিলেন তিন নম্বরে বাংলাদেশের প্রথম পছন্দ। শেষ ৬ ইনিংসে একটি অর্ধশতক পাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় শেষ টেস্টে একাদশে জায়গা হারান তিনি। পরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে শুরুতে স্কোয়াডেই ছিলেন না। মোসাদ্দেক হোসেনের চোটে অবশ্য পরে দলে ফিরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ইমরুল সাফল্য পেলে আপাতত আর তিনে খেলা হচ্ছে না মুমিনুলের। সতীর্থ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি ইমরুল। সুস্থ প্রতিযোগিতাকে দলের জন্য ইতিবাচক মনে করছেন তিনি।
“প্রতিযোগিতা বেশি থাকলে ম্যানেজমেন্ট সবচেয়ে ভালো জনকে খেলানোর জন্য বেছে নিতে পারে। আমি বলবো দলের জন্য এটা একটা ভালো দিক এবং তারা পারফর্মও করবে।”
“তিন নম্বরে জায়গা স্থায়ী কি না? না, এমন কিছু বলা হয়নি। নির্ভর করছে আমার পারফরম্যান্সের ওপর। পারফর্ম করলে হয়তো তিনে থাকবো। সেটা না পারলে হয়তো দলেই থাকবো না।”
শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা, ভারতের রাহুল দ্রাবিড় তিন নম্বরে খেলে দারুণ সফল হয়েছেন। তাদের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন ইমরুল। প্রায় নয় বছরের ক্যারিয়ারের এখনও থিতু হতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আসা-যাওয়া আর একাদশে থাকার লড়াই তার জন্য নতুন নয়। আত্মবিশ্বাস আছে আরও একবার জয়ী হবেন সেই লড়াইয়ে।
“খারাপ খেললে জায়গা থেকে সরে যেতে হয়। আসার পর আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। কী হতো বা কী হতো না, সে সব নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। এখন সামনে যে দিন আছে, এগুলোতে মনোযোগ দেওয়া ভালো বলে মনে করি।”