‘প্রস্তুতির ৮০ ভাগ খুব ভালো হয়েছে’

বৃষ্টিতে তখন খেলা বন্ধ। ড্রেসিং রুমের সামনে ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সৌম্য সরকার। বল একটু থামিয়ে মাঠের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আজ ব্যাটিং করতে পারলে খুব ভালো হতো…।”

ক্রীড়া প্রতিবেদক চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2017, 12:33 PM
Updated : 11 August 2017, 01:48 PM

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পাননি সাব্বির রহমানও। খেলা না হওয়ায় হতাশ তিনিও। চট্টগ্রামে তিন দিনের ম্যাচের শেষ দিনটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার আক্ষেপ দলের সবারই। 

তবে গত এক সপ্তাহে ফিরে তাকিয়ে শেষ দিনের আক্ষেপ মিলিয়ে যাচ্ছে তুষ্টির আড়ালে। চট্টগ্রামে প্রস্তুতি ক্যাম্প নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট দল।

নতুন মৌসুমের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল ফিটনেস ক্যাম্প দিয়ে। সপ্তাহ তিনেকের ফিটনেস ট্রেনিং শেষে শুরু হয় স্কিল ট্রেনিং। নিবিড় অনুশীলনের জন্য গত ৪ অগাস্ট চট্টগ্রামে আসে দল।

চট্টগ্রামে টানা তিন দিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অনুশীলন করেছে দল। ইনডোরসহ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মোট ৫ জায়গায় একই সঙ্গে চলেছে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন।

৫টি নেটে অনুশীলনের ধরন ছিল আলাদা। এক নেটে বোলিং মেশিনে ব্যাটিং হয়েছে উইকেটে গ্রানাইটের স্লাব রেখে, আরেক নেটে চলেছে থ্রো ডাউন। সেন্টার উইকেটের দুটির একটিতে ছিল একটু বাউন্সি উইকেট, অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের খেলার প্রস্তুতির জন্য। আরেকটি সেন্টার উইকেট ছিল একটু মন্থর, টার্নিং উইকেট।

নাথান লায়নকে সামলানোর প্রস্তুতির জন্য ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল দুই তরুণ অফ স্পিনার সঞ্জিত সাহা ও নাঈম হাসানকে। দুজনই বেশ লম্বা। তাই লায়নের বাউন্স সামলানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এই দুজনকে খেলে।

তিন দিন ঘাম ঝরানোর পর একদিন বিশ্রাম। এরপর তিন দিনের ম্যাচ। প্রথম দুদিনে বৃষ্টির বাগড়ার মধ্যেও খেলা হয়েছে অনেকটা। শেষ দিনটিই কেবল পুরো গেল বৃষ্টির পেটে। শেষটুকু বাদ দিলে চট্টগ্রামে আসার উদ্দেশ্য অনেকটাই সফল। যা করতে চেয়েছিল দল, তার বেশিরভাগই করতে পেরেছে।

শেষ দিনে দলের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাব্বির শোনালেন চট্টগ্রাম পর্ব নিয়ে দলের সন্তুষ্টির কথা।

“যেটি চেয়েছিলাম যে ব্যাটসম্যানরা খুব ভালো করে ব্যাট করবে, বোলাররা বল করবে, সেটার বেশিরভাগই সম্ভব হয়েছে। আজকের দিনের জন্য খুব বেশি বাকি ছিল না। যে তিন দিনে যে অনুশীলন আমরা করেছি, এরপর একদিন বিশ্রাম নিয়ে দুই দিন ম্যাচ খেলা, যতটুকু খেলার দরকার ছিল আমরা মোটামুটি খেলেছি।”

“যে অনুশীলনের জন্য আমরা এসেছিলাম, তার ৮০ শতাংশ হয়েছে। যে ২০ ভাগ হয়নি, সেটায় আমাদের হাত নেই। যা কাজ করেছি, অনেক ভালো কাজ করেছি। সামনে যা আছে, সবকিছুর জন্য প্রস্তুতিটা ভালো হয়েছে আমাদের।”

ক্যাম্পে শুরু থেকেই থাকা প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের কণ্ঠেও তৃপ্তির ছোঁয়া।

“সব মিলিয়ে খুব ভালো হয়েছে চট্টগ্রামের ক্যাম্প। তিন দিনের ম্যাচে ভালো প্রতিযোগিতা হয়েছে। যে দুই দিন খেলা হয়েছে, আমরা খুব ভালো ক্রিকেট দেখেছি।”

শনিবার সকালে ঢাকায় ফিরবে দল। টেস্টের আগে বাকি অনুশীলনপর্ব মিরপুরে। নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে দল আরও একটি। মিরপুরে সেই ম্যাচ হতে পারে ১৬ ও ১৭ অগাস্ট।

অস্ট্রেলিয়া প্রস্তুতি ক্যাম্প করছে উপমহাদেশের কন্ডিশনের কাছাকাছি বলে বিবেচিত ডারউইনে। সেখান থেকে ১৮ অগাস্ট আসবে তারা ঢাকায়। ২৭ অগাস্ট থেকে প্রথম টেস্ট মিরপুরে, দ্বিতীয় টেস্ট ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রামে।

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার এটি মাত্র তৃতীয় টেস্ট সিরিজ। অস্ট্রেলিয়া টেস্ট খেলতে সবশেষ বাংলাদেশে এসেছিল সেই ২০০৬ সালে।