মুমিনুল-নাসিরের পাশাপাশি তানবীরও

একজন জায়গা হারিয়েছেন একাদশে, একজন টেস্ট দলের বাইরে অনেক দিন। মুমিনুল হক ও নাসির হোসেনের জন্য এই ম্যাচ ছিল একটা সুযোগ। ফেরার দাবিটা জানিয়ে রাখলেন দুজনই, তবে জোড়ালো হলো না। ৬০-৭০ রানে হয়ত দরজায় মৃদু টোকা দেওয়া যায়। কিন্তু দরজা নিশ্চিত করে খুলতে তো চাই সেঞ্চুরির দামামা!

ক্রীড়া প্রতিবেদক চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2017, 12:06 PM
Updated : 10 August 2017, 12:06 PM

মুমিনুল আউট হয়েছেন ৭৩ রানে, নাসির ৬২। এই দুজনের পর পঞ্চাশ ছাড়ালেন তানবীর হায়দারও। কিন্তু তিনিও শেষ পঞ্চাশ পেরিয়েই।

চট্টগ্রামের প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ২৮৩ রানে অলআউট হয়েছে তামিমের দল। আগের দিন ৯ উইকেটে ১৪০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল মুশফিকের দল।

আগের দিন উইকেটে বেশ বাউন্স থাকলেও এদিন অনেকটা ছিল মন্থর। বাউন্স ছিল বেশ কম। পেসারদের কাজ ছিল কঠিন। তবু দারুণ বোলিংয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন।

বৃষ্টিতে এদিনও খেলা শুরু হয় একটু দেরিতে। তামিমের শুরুটা ছিল সতর্ক, মুমিনুলের শুরুটায় খানিকটা অস্বস্তি।

তামিমকে মনে হচ্ছিলো বড় কিছু করত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সময় নিয়ে খেলছিলেন। কিন্তু মুমিনুলের ডাকে সাড়া দিয়ে কাভার থেকে মাহমুদুল্লাহর সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে গেলেন ২৯ রানে। ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় শরীরী ভাষা বলছিল, ওভাবে আউট হওয়ায় প্রচণ্ড হতাশ তামিম।

খানিকপর শুভাশিসকে অন ড্রাইভে চার মারেন মুমিনুল। রুবেলকে কাভার ড্রাইভে। খেলতে থাকেন স্বচ্ছন্দে। পঞ্চাশ পেরিয়ে যান অনায়াসেই। স্পিন খেলছিলেন ভালোভাবেই। কিন্তু হঠাৎই সাকলাইন সজিবকে স্কুপ মতো করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে।

১৬৪ মিনিট উইকেটে থেকে মুমিনুল ৭৩ করেছেন ১৩৫ বলে। চার ছিল পাঁচটি।

সাব্বির রহমান অবশ্য ফিরে গেছেন তার বেশ আগেই। দারুণ দুটি অফ ড্রাইভে শুরু করলেও ১০ রানে বোল্ড তাইজুলের বলে।

পাঁচে নেমে শুরু থেকে স্বচেছন্দে খেলেছেন নাসির। স্পিনে পায়ের কাজ ছিল দেখার মত। উইকেটে যাওয়ার খানিক পরই বেরিয়ে এসে সাকলাইনকে ছক্কা মারেন লং অন দিয়ে। পঞ্চাশের আগেই ছক্কা মেরেছেন আরও দুটি। বেশি চড়াও হয়েছিলেন তাইজুলের ওপর। একবার উড়িয়ে ফেলেছেন লং অন গ্যালারিতে, আরেকবার লং অফ দিয়ে। তাইজুলকে সোজা চার মেরেই ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ।

সম্ভাবনাময় ইনিংসটির ইতিও স্পিনে। তরুণ অফ স্পিনার নাঈম হাসানের বাড়তি স্পিনে ক্যাচ দিয়েছেন শর্ট লেগে। তিনটি ছক্কার পাশে ৯২ বলে ৬২ রানের ইনিংসে তিনটি চার।

তানবীর খেলেছেন ওয়ানডের গতিতে। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেট ও হাই পারফরম্যান্স দলের হয়ে তার পারফরম্যান্সে ছিল উন্নতির প্রমাণ। এদিনও দারুণ ব্যাট করে ৬১ বলে করেছেন ৫১। ইনিংসটি আরও বড় করতে পারলে হয়ত নির্বাচকদের মন জয় করতে পারতেন আরেকটু বেশি।

এরপর সানজামুল একটু লড়েছেন। লোয়ার অর্ডারে বাকিরা সুবিধা করতে পারেননি। অনুশীলনের জন্য ৬১ ওভার পরই নেওয়া হয় নতুন বল। তাতে তামিমের দলের ইনিংস শেষ হয় দ্রুতই।

মুশফিকের সেরা বোলার ছিলেন রুবেলই। সমান ৩ উইকেট নিলেও শুরুতে সাকলাইন ছিলেন নির্বিষ। পরে ফিরে একটু ভালো করেছেন।

বিকেলে মুশফিকের দল ব্যাটিং নামে দ্বিতীয় ইনিংসে। আবারও প্রায় একইভাবে আউট ইমরুল কায়েস।

মুস্তাফিজ এবার পেয়েছেন নতুন বল। তার প্রথম দু বলেই চার মারেন ইমরুল। কিন্তু তৃতীয় বলটি একটি গ্রিপ করল, লাফিয়ে উঠল প্রথম ইনিংসের মতো। ইমরুল খেললেন জায়গায় দাঁড়িয়ে, পয়েন্টে ক্যাচ!

সৌম্য ও শান্ত খেলছিলেন এরপর। কিন্তু বৃষ্টিতে আগেই শেষ হয় দিনের খেলা।

নুরুল হাসান সোহান দলে থাকলেও মুশফিকের দলের হয়ে কিপিং করেছেন মুশফিকই। এটাও হয়ত টেস্টের জন্য তার চাওয়ার বার্তা!
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর: 
 
মুশফিকের দল ১ম ইনিংস: ৯ উইকেটে ১৪০ (ইনিংস ঘোষণা) 
 
তামিমের দল ১ম ইনিংস: ৭৮.৩ ওভারে ২৮৩ (আগের দিন ৪৯/১) (তামিম ২৯, লিটন ৫, মুমিনুল ৭৩, সাব্বির ১০, নাসির ৬২, তানবীর ৫১, সানজামুল ২২, তাসকিন ২, রাব্বি ২, শফিউল ১০*, মুস্তাফিজ ২, রুবেল ১৭-২-৫৪-৩, শুভাশিস ৭.৪-৩-১৭-০, আল আমিন ৮.২-১-২২-০, নাঈম ৯-১-২৩-১, তাইজুল ১৮.৩-০-৮০-২, সাকলাইন ১৭-৪-৬৪-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৮-০)।
 
মুশফিকের দল দ্বিতীয় ইনিংস: ৫ ওভারে ২৪/১ (ইমরুল ৮, সৌম্য ৯*, শান্ত ৭*, মুস্তাফিজ ১ উইকেট)