প্রথম দিনে ‘জিতলেন’ শফিউল, অপেক্ষায় মুমিনুল

সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন এই মাঠেই। গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পরের টেস্টেই স্কোয়াডের বাইরে। বলা হয়েছিল বিশ্রাম, আসলে কারণ ছিল ফিটনেস ও বোলিং নিয়ে বিরক্তি। সেই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই এবার অন্য চেহারায় শফিউল ইসলাম। প্রস্তুতি ম্যাচে আগুনে বোলিংয়ে জানিয়ে রাখলেন টেস্ট দলে ফেরার দাবি।

ক্রীড়া প্রতিবেদক চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2017, 08:10 AM
Updated : 9 August 2017, 03:01 PM

গতি, আগ্রাসন, সুইং আর বাউন্স মিলিয়ে শফিউল নিয়েছেন ৫ উইকেট। তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে ৯ উইকেটে ১৪০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে মুশফিকের দল। দিনশেষে ১ উইকেট হারিয়ে তামিমের দলের রান ৪৯।

প্রস্তুতি ম্যাচে অনুশীলনটা মুখ্য। তবু এই ম্যাচে আছে বেশ কিছু হিসাব। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট দলে জায়গা নিয়ে পেসারদের লড়াইয়ে বড় প্রভাবক হতে পারে এই ম্যাচের পারফরম্যান্স। সেখানে প্রথম দিনে জিতলেন শফিউল।

স্কোয়াড থেকে বাদ পড়া মাহমুদউল্লাহ আর একাদশে জায়গা হারানো মুমিনুল হকের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ। মাহমুদউল্লাহ ‘হেরেছেন’ প্রথম সুযোগে। শফিউলের দারুণ বলে ফিরেছেন শূন্য রানে। দিনশেষে অপরাজিত মুমিনুল অপেক্ষায়, জয় কিংবা পরাজয়ের!

চট্টগ্রামে আগের রাত থেকেই ছিল বৃষ্টি। সকালে একটু ছুট দিলেও আবার নামে ভারী বৃষ্টি। আকাশ ছিল ঘন কালো মেঘে ঢাকা। তবে শঙ্কা উড়িয়ে সকাল ১১টাতেই আবার ঝলমলে রোদ।

ম্যাচের উইকেট অবশ্য জন্ম দিলো প্রশ্নের। ইংল্যান্ড সিরিজের মত অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও মন্থর ও টার্নিং উইকেট হবে বলেই অনুমান। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমেরও রায় তেমন উইকেটের পক্ষে। কিন্তু অনুশীলন ম্যাচের উইকেট সবুজাভ, রেখে দেওয়া হয়েছে বেশ খানিকটা ঘাস। হয়ত অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের সামলানোর প্রস্তুতির কথা ভেবেই। উইকেট দেখেই টস জিতে ফিল্ডিং নিলেন তামিম।

খেলা শুরু হতে হতে দুপুর ১২টা ৪০। বেড়েছে রোদের তাপ। তবে তার চেয়েও বেশি উত্তাপ ছড়ালেন শফিউল।

দুর্দান্ত প্রথম স্পেলেই শফিউল ফেরালেন সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহকে।

একটু লাফিয়ে ওঠা বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলে সৌম্য (১) ক্যাচ দেন দ্বিতীয় স্লিপে। আরেকপাশে তাসকিন আহমেদকে স্কয়ার ড্রাইভে চার মেরে শুরু করেছিলেন ইমরুল। কিন্তু শফিউলের যে বলে আউট হলেন, তাতে করার ছিল সামান্যই। অফ স্টাম্প ঘেষা লেংথ থেকে লাফানো বল ব্যাটে ছোবল দিয়ে আশ্রয় নিল লিটন দাসের গ্লাভসে।

মাহমুদউল্লাহ খুলতে পারেননি রানের খাতা। গতিময় এক ডেলিভরিতে উড়েছে তার বেলস।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকের লড়াই। শুরুটায় নড়বড়ে ছিলেন শান্ত। শফিউলের বলে দুই দফায় বেঁচে গেছেন ক্যাচ মতো দিয়ে। তবে পরে খেলেছেন দারুণ। মুশফিক শুরু থেকেই খেলেছেন থিতু ব্যাটসম্যানের মত।

দিনের সেরা দুটি শট এসেছে সম্ভবত মুশফিকের ব্যাট থেকেই। শফিউলের বলে স্ট্রেট একটা পুশে বাউন্ডারি, কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে স্ট্রেট ড্রাইভে।

কিন্তু সম্ভাবনাময় ইনিংসটির অপমৃত্যু সঞ্জিত সাহার নিরীহ এক বলে। শর্ট বলে গায়ের জোরে মারতে গিয়ে এই অফ স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন ৩০ রানে।

শান্ত বিদায় নেন পঞ্চাশ পেরিয়েই। খানিকক্ষণ লড়াই করে নুরুল হাসান সোহান (১৬) তাসকিনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন পয়েন্টে।

মুশফিকের দলকে এরপর যা একটু টেনেছেন তাইজুল ইসলাম। ২৬ রানের ইনিংসে তার কয়েকটি শট দেখে মুগ্ধ খেলা দেখতে আসা দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার।

দ্বিতীয় স্পেলে অন্য প্রান্ত দিয়ে ফিরেও রুবেলকে বোল্ড করেছেন শফিউল, পরের ওভারে তাইজুলকে ফিরিয়েছেন শর্ট বলে। তামিমদের ব্যাটিংয়ে নামাতে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় মুশফিকের দল।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি তামিমের দলেরও। ১ রানে রুবেলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান লিটন দাস। কিন্তু পরের ওভারে সেই রুবেলের বলেই আবার ক্যাচ দেন স্লিপে।

তামিম ও মুমিনুল অবশ্য পরের সময়টুকু কাটিয়ে দিয়েছেন লড়াই করে। দ্বিতীয় দিনে তামিম চাইবেন ব্যাটিং প্র্যাকটিস, মুমিনুলের জন্য ইনিংসটি আরও বেশি কিছু।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মুশফিকের দল: ৯ উইকেটে ১৪০ (ডিক্লে.) (সৌম্য ১, ইমরুল ৫, শান্ত ৫৩, মাহমুদউল্লাহ ০, মুশফিক ৩০, সোহান ১৬, তাইজুল ২৬, সাকলাইন ১, রুবেল ১, ; শফিউল ৭.১-৩-১৭-৫, তাসকিন ৯-১-৩২-১ , মুস্তাফিজ ৯-৪-১৫-১, রাব্বি ৪-০-১৭-০, সঞ্জিত ৬-০-১৯-১, সানজামুল ১১-২-৩২-১, তানবীর ১-০-০১-০)।

তামিমের দল:  ১৭ ওভারে ৪৯/১ (তামিম ২৩*, লিটন ৫, মুমিনুল ১৯*)