রিভার্স সুইং নিয়ে কাজ করছেন তাসকিনরা

ঘামে ভেজা জবজবে শরীর। গায়ের সঙ্গে লেপ্টে আছে জার্সি। মুখ বেয়ে শরীর চুইয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ঘাসে। মাত্রই দুই দফায় ৮ ওভার বোলিং করে বাইরে এসেছেন তাসকিন আহমেদ। রুমাল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বললেন, “আজকে অনেক খাটুনি হচ্ছে”। খানিকপর নিজে থেকেই আবার বললেন, “এই কন্ডিশনে ভালো করতে হলে অবশ্য এরকম খাটুনিই দরকার।”

ক্রীড়া প্রতিবেদক চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2017, 01:09 PM
Updated : 5 August 2017, 02:56 PM

চট্টগ্রামে ক্যাম্পের প্রথম দিনে এভাবে ঘাম ঝরেছে সবারই। তার পরও এই কন্ডিশনে ফাস্ট বোলারদের খাটুনি একটু বেশিই। পেসাররা সবাই যেমন নেটে বোলিং করেছেন লম্বা সময়।

অস্ট্রেলিয়া যখন আসবে, গরম তখনও এখনকার চেয়ে খুব কম থাকার কথা নয়। আর উইকেট তো বরাবরই পেসারদের জন্য বিরুদ্ধ। সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ পেসারদের জন্য হবে কঠিন চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ জয় করতে অনুশীলনে এত খাটুনি।

গত মার্চে শ্রীলঙ্কায় খেলে আসা তাসকিনের কাছে দেশের কন্ডিশন মনে হচ্ছে আরও চ্যালেঞ্জিং। তরুণ ফাস্ট বোলার জানালেন, দেশের কন্ডিশনে কার্যকর হতে ভাণ্ডারে নতুন অস্ত্র যোগ করতে কাজ করছেন তারা। 

“শ্রীলঙ্কায় গরম ছিল, কিন্তু মনে হয় তবু এখানকার চেয়ে ভালো ছিল। কারণ বল একটু হলেও মুভ করত। এই কন্ডিশনে রিভার্স সুইং একটা অস্ত্র হতে পারে। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি। শিখতে চেষ্টা করছি কিভাবে বল রিভার্স করানো যায়।”

“চেষ্টা করছি, কিভাবে আরও ধারাবাহিক ভাবে নিখুঁত লাইনে বল করা যায়। এখানে পেস সহায়ক কম থাকবে উইকেট। পেসারদের অনেক ধৈর্য ধরতে হবে। পুরোনো বলের কারুকাজ বাড়াতে হবে।”

পেসারদের কাজটা কঠিন বলে একাদশে জায়গা নিয়ে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বেশি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজেই হয়ত সর্বোচ্চ দুই পেসার নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ। হতে পারে এক পেসারও। সেই একমাত্র বা দুজনের একজন পেসার হতে পারবেন তাসকিন? তিনি নিজে বেশ আত্মবিশ্বাসী।

“আত্মবিশ্বাস আছে। আমি মনে করি সেই সামর্থ্যও আমার আছে। যদিও অভিজ্ঞতা অনেক কম আমার, মাত্র চারটি টেস্ট খেলেছি। তার পরও যারা পারে, তারা সব কন্ডিশনেই পারে। আমাকেই জানতে হবে কোন কন্ডিশনে কিভাবে বল করতে হয়, কিভাবে সফল হতে হয়। লাইন-লেংথ, বৈচিত্র এসব নিয়ে অনেক কাজ করছি। কোচিং স্টাফরা অনেক সাহায্য করছে। আমার আত্মবিশ্বাস আছে যে সুযোগ পেলে ভালো করব।”

এখানকার কন্ডিশন যেমন কঠিন, ক্রিকেট বিশ্ব জুড়ে উইকেটগুলোও ফাস্ট বোলারদের জন্য হয়ে উঠছে আরও কঠিন। বেশির ভাগ মাঠেই উইকেট ব্যাটিং স্বর্গ। নতুন নতুন অস্ত্র যোগ করার তাই বিকল্প দেখছেন না তাসকিন।

“আগে একটা সময় ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা পেস বোলারদের স্বর্গ ছিল। এখন সেসব নেই। পিচগুলো অনেকটাই ব্যাটসম্যানদের পক্ষে থকে। পেসারদের কাজটা অনেক কঠিন। প্র্যাকটিস সেশন যদি আগের মতোই থাকে তাহলে হবে না। আলাদা কিছু করতে হলে আলাদা অনুশীলনও করতে হবে। এটাই আমরা চেষ্টা করছি বড় বড় কোচদের কাছ থেকে শেখার। যত পারছি শেখার চেষ্টা করছি।”

কতটা শিখতে পারলেন, সেটির কিছুটা প্রমাণ হয়ত মিলতে পারে কদিন পরই। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শুরু বাকি আর মাত্র তিন সপ্তাহ।