গুনারত্নের ব্যাটে রেকর্ড রান তাড়া করে শ্রীলঙ্কার জয়

আগের দিনের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান ফিরে যান সকালেই। তবুও হাল ছাড়েনি শ্রীলঙ্কা। শুরুতে স্বাগতিকদের পথ দেখান নিরোশান ডিকভেলা। দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে বাকিটুকু সারেন আসেলা গুনারত্নে। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে দেশের মাটিতে রেকর্ড রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে দিনেশ চান্দিমালের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2017, 10:14 AM
Updated : 18 July 2017, 10:37 AM

একমাত্র টেস্টে ৩৮৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

শ্রীলঙ্কার মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়ার রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের। ২০১৫ সালে পালেকেল্লেতে সেই টেস্ট ৭ উইকেট জিতেছিল অতিথিরা। টেস্টে লঙ্কানরা সর্বোচ্চ ৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল দেশের মাটিতেই, ২০০৬ সালে পি সারা ওভালে।

জয়ের জন্য শেষ দিন শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ২১৮ রান, জিম্বাবুয়ের ৭ উইকেট। স্পিন সহায়ক উইকেটে এই সমীকরণ মেলাতে পারেনি অতিথিরা। শেষ দিনের এক সেশন হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় শ্রীলঙ্কা।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ১৭০ রান নিয়ে খেলা শুরু করে শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই কুসল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেন গ্রায়েম ক্রিমার। দলের সংগ্রহ দুইশ পার হতেই আবার আঘাত। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে এবার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে বিদায় করেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক।

২০৩ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়া শ্রীলঙ্কা প্রতিরোধ গড়ে ডিকভেলা-গুনারত্নের ব্যাটে। জিম্বাবুয়ের স্পিন আক্রমণ সামলে দুই জনে গড়েন ১২১ রানের দারুণ জুটি। অনেকবার একটুর জন্য ব্যাটের কানা নেয়নি বল, কখনও ক্যাচ পড়েছে ফিল্ডারের একটু সামনে। ভাগ্যকে পাশে পাওয়া দুই ব্যাটসম্যান কক্ষপথে ফেরান দলকে।

১১৮ বলে ৬টি চারে ডিকভেলার ৮১ রানের চমৎকার ইনিংস শেষ হয় অপ্রয়োজনীয় এক শটে। শন উইলিয়ামসকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে রেজিস চাকাভার গ্লাভসবন্দি হন তিনি।

আট নম্বর ব্যাটসম্যান পেরেরার টেস্টে অর্ধশতক আছে চারটি। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে। প্রথম ইনিংসেও গুনারত্নের সঙ্গে গড়েছিলেন ভালো একটি জুটি। দলের প্রয়োজনের সময় যথারীতি দুই জনে আবার চীনের প্রাচীর। সেখানে হতাশায় শেষ হল জিম্বাবুয়ের সব প্রচেষ্টা। শেষের দিকে প্রথমবারের মতো পেসার এনেও লাভ হয়নি। ভাঙা যায়নি ৬৭ রানের ম্যাচ জেতানো জুটি।

প্রথম দিন থেকে হ্যামস্ট্রিংয়ের সঙ্গে লড়াই করা গুনারত্নে অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা অলরাউন্ডার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়া পেরেরা অপরাজিত ২৯ রানে।

অসংখ্য সুযোগ তৈরি করা ক্রিমার ৪ উইকেট নিয়েছেন ১৫০ রানে। উইকেটরক্ষক চাকাভা বেশ কয়েকটি ক্যাচ-স্টাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া না করলে খেলার চিত্রটা ভিন্নরকম হতে পারতো।

১১ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩৫৬

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৪৬

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৩৭৭

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮৮) ১১৪.৫ ওভারে ৩৯১/৬ (করুনারত্নে ৪৯, থারাঙ্গা ২৭, মেন্ডিস ৬৬, চান্দিমাল ১৫, ম্যাথিউস ২৫, ডিকভেলা ৮১, গুনারত্নে ৮০*, পেরেরা ২৯*; রাজা ০/৫৮, উইলিয়ামস ২/১৪৬, ক্রিমার ৪/১৫০, ওয়ালার ০/১০, পোফু ০/১০)

ফল: শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ১-০ ব্যবধানে জয়ী শ্রীলঙ্কা