সেই চম্পকার দ্বারস্থ বিসিবি

বাংলাদেশের প্রথম বোলিং কোচ তিনি। বলা হয়, সেরা বোলিং কোচও। তার কোচিংয়ের ছোঁয়া পাওয়া বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছে কোচ ও মানুষ হিসেবে এখনও তুমুল জনপ্রিয়। সেই চম্পকা রামানায়েকের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করছে বিসিবি, যদি আবার তাকে বোলিং কোচ করে আনা যায়।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2017, 11:54 AM
Updated : 16 July 2017, 11:54 AM

এমনিতে খবরটিকে বিস্ময়করই মনে হতে পারে। প্রথমত, কোর্টনি ওয়ালশের মত একজন কিংবদন্তিকে বোলিং কোচ হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ। তার দায়িত্বের মেয়াদ ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। দ্বিতীয়ত, চম্পকা রামানায়েকে এখন শ্রীলঙ্কার বোলিং কোচ। কাজটা তাই কঠিন। সেই কঠিনের পেছনেই ছুটছে বিসিবি।

যেহেতু এখনো এটি আলোচনার পর্যায়ে আছে, আনুষ্ঠানিকভাবে তাই এখনই কিছু বলছে না বিসিবি। এক বিসিবি পরিচালক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শুধু এটুকু বললেন, “কথা-বার্তা চলছে। দেখা যাক কতটা পারি।”

প্রশ্ন উঠতে পারে, হঠাৎ কেন চম্পকাকে আনার প্রয়োজন হলো। বিসিবির ওই কর্তা জানালেন, জাতীয় দলের প্রয়োজনের ধরন ও ওয়ালশকে আরও বড় পরিসরে কাজে লাগানো, দুটি মিলিয়েই চম্পকার পেছনে ছুটছে বিসিবি।

গত অগাস্টের শেষদিকে বোলিং কোচ হিসেবে ওয়ালশের নাম ঘোষণা করে বিসিবি। এরপর থেকে টানা খেলার মধ্যে ছিল দল। পেসারদের নিয়ে আলাদা কাজ করা এবং একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন ওয়ালশ সামান্যই।

এবার একটু ফুরসত পাওয়ায় পেস বোলিং ক্যাম্প শুরু করতে যাচ্ছে বিসিবি। যেখানে থাকবেন জাতীয় দল ও এর আশেপাশে থাকাসহ সম্ভাবনাময় পেসাররা। যেটি শুরু হবে দু-একদিনের মধ্যেই।

এই ক্যাম্প কেবলই শুরু। সম্ভব হলে ওয়ালশকে এখন এভাবেই কাজে লাগানোর ইচ্ছেটা বিসিবির বেশি। আর জাতীয় দলের প্রয়োজনের ধরনটাও দাবি করছে আরেকটু বাড়তি কিছু।

পেস বোলিং নিয়ে ওয়ালশের জ্ঞান, তার অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য নিয়ে সংশয় নেই কারও। তবে বাংলাদেশ দলের বাস্তবতায় প্রয়োজন পড়ছে আরও গভীরে যাওয়ার মত একজন, যিনি পেসারদের হাতে-কলমে শেখাতে পারবেন আরও বেশি। এই জায়গাটায় খাটতে পারবেন আরও বেশি। কাজ করে যেতে পারবেন টানা ও ক্লান্তিহীন। এই প্রয়োজনের তাগিদেই উঠে এসেছে চম্পকার নাম।

২০০৮ সালের মার্চে নিজেদের প্রথম বোলিং কোচ হিসেবে এই শ্রীলঙ্কানকে নিয়োগ দিয়েছিল বিসিবি। দুই বছরের মেয়াদে তার কাজে দারুণ খুশি ছিল ক্রিকেটার-বোর্ড সবাই। মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কাজে নিজেকে প্রমাণ করতে পারায় স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি পারিশ্রমিক দাবি করেছিলেন চম্পকা। সেটিতে আবার সেই সময় রাজি হয়নি বিসিবি।

সাবেক এই লঙ্কান পেসার তখন দেশে ফিরে গিয়েছিলেন অনেকটা অভিমান বুকে নিয়েই। তবে বাংলাদেশকে তিনি ভোলেননি। খোঁজ-খবর সবসময় রাখতেন। ক্রিকেটারদের বেশ কজনের সঙ্গেও রেখেছেন যোগাযোগ।

গত কয়েক বছরে বোলিং কোচ হিসেবে চম্পকার ওজন বেড়েছে আরও। পারিশ্রমিকের অঙ্কটাও তাই বেশ বড় হওয়ার কথা। তার পরও দলের প্রয়োজনের তাগিদেই তাকে এবার আনতে চায় বিসিবি।

বিসিবির ওই পরিচালক জানালেন, চম্পকাকে আনার প্রক্রিয়ায় ওয়ালশের যাতে কোনো অশ্রদ্ধা না হয়, সেদিকেও ভীষণ সতর্ক বোর্ড। তার দায়িত্বের এই স্বল্প সময়ে তাকে নিয়ে অভিযোগ খুব একটা নেই। বরং তার অনুপ্রাণিত করার দক্ষতায় মুগ্ধ দলের অনেক ক্রিকেটারই।

পেস বোলিং নিয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা, ওয়ালশের শক্তির এই দুটি জায়গাকেই আরও বিশদ ভাবে কাজে লাগাতে চায় বোর্ড। আপাতত তাই পরিকল্পনা, ওয়ালশকে করা হতে পারে পেস বোলারদের ‘মেন্টর’।

তবে সবকিছুই নির্ভর করছে চম্পকাকে পাওয়া যায় কিনা, সেটির ওপর। কেবল তাকে পেলেই আনা হবে এই পরিবর্তন, নইলে নয়।