‘আমরা ঠিক পথেই আছি’

কাগজে-কলমে আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তবে তৃপ্তির জায়গা খুব বেশি দেখছেন না সাকিব আল হাসান। উন্নতির সুযোগ দেখছেন আরও অনেক। তবে উন্নতিটা যে ধাপে ধাপে হচ্ছে, সেটিও বলছেন। ভারতের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক বললেন, ঠিক পথেই আছে দেশের ক্রিকেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদক বার্মিংহাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2017, 07:58 AM
Updated : 16 June 2017, 08:26 AM

সিনিয়র ক্রিকেটাররা এই টুর্নামেন্টে ভালোই করেছে। কিন্তু জুনিয়ররা সেভাবে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। আপনার কি মনে হয়, কেন?

সাকিব আল হাসান: সিনিয়র-জুনিয়র বলে তো লাভ নেই। দায়িত্ব সবারই থাকে। দল হিসেবে আমরা কেমন খেলতে পেরেছি, সেটাই আসল।

সব মিলিয়ে এই টুর্নামেন্টে আমরা খুব যে ভালো করতে পেরেছি তা নয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাত্তা পাইনি, আজকেও। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও। নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গেও খুব ভালো খেলিনি। তবে ভালো ব্যাপার ছিল যে সেদিন জিতেছিলাম। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি অবশ্যই, তবে এখান থেকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। যদি এরকম বড় টুর্নামেন্টে ভালো কিছু করতে চাই, তাহলে অনেক উন্নতি করত হবে অনেক জায়গায়।

নির্দিষ্ট করে বললে, কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে?

সাকিব: সব জায়গায় উন্নতি করতে হবে। বড় দলগুলি যেমন ২৭০ রান হলেও অনেক সময় প্রতিপক্ষকে আটকে দেয়, নিষ্প্রাণ উইকেট হলেও। আমরা সেটা পারি না, উইকেট থেকে সহায়তা লাগে। আবার আমরা যে ব্যাটিং করেও কোনো দলকে উড়িয়ে দেব, সেটাও খুব বেশি পারি না। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটেও। আজকেও যেমন ৩৩০ রান করা উচিত ছিল। আমাদের ৬০-৭০ রানের ঘাটতি ছিল।

বড় বড় দলগুলি এই ভুল করে না। আজ ভারতের ব্যাটসম্যানদের দেখুন, কোনো সুযোগই দেয়নি। এভাবেই যেদিন যে ভালো খেলবে, তার দয়িত্ব নিতে হবে। তো্ এরকম অনেক কিছুই আমরা এখনও করতে শিখিনি বা করতে পারি না। আরও উন্নতি করতে হবে।

ঘাটতিটা কি মানসিকতায় নাকি স্কিলে?

সাকিব: মানসিক শক্তির ঘাটতি একটা ব্যাপার। মানসিকতার উন্নতিও আসলে এমনিতে হবে না। খেলতে খেলতে বা জিততে জিততে হবে। এই যে দেখুন, গত দুই বছরে আমরা অনেক ম্যাচ জিতেছি বলে বিশ্বাস করেছি যে আমরা এখানে সেমিতে উঠতে পারব। কিন্তু সেমি-ফাইনালে আমাদের সেই বিশ্বাসটা ছিল কিনা, সেটি জানার বিষয়। বিশ্বাস ছিল কিনা যে, আমরা এরপর যেতে পারব।

তো ধাপে ধাপে একটা একটা করে এগোচ্ছি। আমার মনে হয়, আমরা সঠিক পথেই আছি। স্রেফ ছোট ছোট কিছু ব্যাপার উন্নতি করতে থাকলেই আমরা হয়ত আরও ভালো জায়গায় যেতে পারব।

এই দলটার মাঝে আর এমন কি ঘাটতি দেখেছেন, যা ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলতে এলে দলের মাঝে দেখতে চান না?

সাকিব: ম্যাচ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই বলা ঠিক না। বিশেষ করে ভালো দিন যদি না যায়, তাহলে ম্যাচ শেষেই আসবে নেতিবাচক ভাবনা। এখন আসলে তাই যদি কিছু বলতে চাই, বলাটা ভুল হবে। এটা সময় নিয়ে সবাই মিলে আলাপ করে বোঝার বিষয়। কিভাবে কাজ করলে এই জায়গাটায় উন্নতি করতে পারি, কিভাবে আরেকটা ধাপ এগোতে পারি, এটা সবাই মিলে বসে আলেচনা করে পরিকল্পনা নিয়ে সেটা ধরে এগোতে হবে।

টুর্নামেন্টে নিজের পারফরম্যান্সে কতটা সন্তুষ্ট?

সাকিব: সব মিলিয়ে বললে, বোলিংটা আরও ভালো করলে ভালো হতো। ব্যাটিংও আরও ভালো করলে ভালো হতো। ভালোর তো আসলে শেষ নেই। একদিক থেকে খুশি যে একটি ম্যাচ জিতেছি, সেটিতে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছি।

বোলিং নিয়ে কি একটু চিন্তিত?

সাকিব: আমার মনে হয় মোটামুটি ঠিক অবস্থায়ই আছি। উইকেট পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপারও। অনেক সময় পাব, অনেক সময় পাব না। এসব নিয়ে আসলে খুব বেশি ভাবার কিছু নেই।

আমার মনে হয় ঠিক আছে। মনে হচ্ছে না খুব ভালো বোলিং করছি বা বাজে অবস্থায় আছি ওরকম কিছু না। এমনকি ব্যাটিংয়েও। মনে হচ্ছে, সব ঠিকই আছি।