প্রোটিয়াদের বিদায় করে সেমিতে ভারত

আগের ম্যাচে হারের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত। তিন বিভাগেই নিজেদের মেলে ধরে সেমি-ফাইনালে পৌঁছেছে বিরাট কোহলির দল। পাকিস্তানের পর শিরোপাধারীদের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2017, 01:33 PM
Updated : 11 June 2017, 04:14 PM

আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল পাত্তাই পায়নি ভারতের কাছে। টানা দ্বিতীয় শিরোপার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া দলটি ‘কোয়ার্টার-ফাইনালে’ পরিণত হওয়া নিজেদের শেষ ম্যাচ জিতেছে ৮ উইকেটে, ৭২ বল হাতে রেখে। 

বাঁচা-মরার ম্যাচে ৪৪ ওভার ৩ বলে ১৯১ রানে গুটিয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিততে বোলিংয়ে জাদুকরী কিছু করতে হতো। সেই রসদ ছিলও। আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই বোলার কাগিসো রাবাদা, ইমরান তাহিরের উপস্থিতিতে তাদের বোলিং খুব শক্তিশালী। কিন্তু দলের প্রয়োজনের সময় জ্বলে উঠতে পারলেন না কেউই।  

রোহিত শর্মাকে দ্রুত ফিরিয়ে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন মর্নে মর্কেল। কিন্তু শিখর ধাওয়ান ও কোহলিকে চেপে ধরতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ব্যাটসম্যানের ১২৮ রানের চমৎকার জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যায় ভারত।

৮৩ বলে ১২টি চার ও একটি ছক্কায় ৭৮ রান করা ধাওয়ানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার তাহির। তাতে স্বস্তি ফেরেনি দলে। যুবরাজ সিংকে নিয়ে বাকিটুকু সহজেই সেরেছেন অধিনায়ক।

আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া কোহলি অপরাজিত ছিলেন ৭৬ রানে। তার ১০১ বলের অধিনায়কোচিত ইনিংসটি গড়া ৭টি চার ও একটি ছক্কায়।   

ভারতের এই জয়ে নিশ্চিত হয়ে গেল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের আসরের শেষ চারে খেলবে উপমহাদেশের তিনটি দল। এর আগে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সোমবারের ম্যাচের জয়ী দল সঙ্গী হবে তাদের। শেষ চারের আরেক দল স্বাগতিক ইংল্যান্ড।  

এর আগে লন্ডনের ওভালে রোববার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ছিল সতর্ক। ভুবনেশ্বর-বুমরাহদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে খুব একটা ঝুঁকি নিচ্ছিলেন না কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা।

আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা রবিচন্দ্রন অশ্বিন এনে দেন ‘ব্রেক থ্রু’। মহেন্দ্র সিং ধোনির গ্লাভসবন্দি হয়ে ফিরেন আমলা, ভাঙে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি।

ফাফ দু প্লেসির সঙ্গে ৪০ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন ডি কক। ভারতের বিপক্ষে পঞ্চাশ পেলে সেটাকে তিন অঙ্কে নিয়ে যাওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলা এই তরুণ এবার ফিরেছেন অর্ধশতকে গিয়েই। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে শেষ হয় উপমহাদেশের দলটির বিপক্ষে পাঁচটি শতক করা এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের ৫৩ রানের ইনিংস।

আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম গোল্ডেন ডাক পাওয়া এবি ডি ভিলিয়ার্স শুরু করেছিলেন দারুণ। দল ছিল ২ উইকেটে ১৪০ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। ছন্দপতনটা এর পরেই, ডি ভিলিয়ার্সের রান আউট দিয়ে।

পরের ওভারে আবার রান আউট। এবার দুই ব্যাটসম্যান এক প্রান্তে গিয়ে ফিরলেন ডেভিড মিলার। দুই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানের দ্রুত বিদায়ের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই বিদায় নেন দু প্লেসি।

দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ৭ ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্কে যান কেবল জেপি দুমিনি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ২০ রানে।

এক সময়ে তিনশ রানে চোখ রাখা ডি ভিলিয়ার্সের দল মাত্র ৫১ রানে হারায় শেষ ৮ উইকেট, যার তিনটি রান আউটে।

ভুবনেশ্বর ও বুমরাহ নেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট অশ্বিন, জাদেজা ও হার্দিক পান্ডিয়ার।

এই ম্যাচের জয়ী দল খেলবে সেমি-ফাইনালে। হেরে যাওয়া দল বিদায় নেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৪.৩ ওভারে ১৯১ (ডি কক ৫৩, আমলা ৩৫, দু প্লেসি ৩৬, ডি ভিলিয়ার্স ১৬, মিলার ১, দুমিনি ২০, মরিস ৪, ফেলুকওয়ায়ো ৪, রাবাদা ৫, মরকেল ০, তাহির ১; ভুবনেশ্বর ২/২৩, বুমরাহ ২/২৮, অশ্বিন ১/৪৩, পান্ডিয়া ১/৫২, জাদেজা ১/৩৯)

ভারত: ৩৮ ওভারে ১৯৩/২ (রোহিত ১২, ধাওয়ান ৭৮, কোহলি ৭৬*, যুবরাজ ২৩*; রাবাদা০/৩৪, মরকেল /৩৮, ফেলুকওয়ায়ো ০/২৫, মরিস ০/৪০, তাহির ১/৩৭, দুমিনি ০/১৭)

ফল: ভারত ৮ উইকেটে জয়ী